Homeopathic treatment for cough

Homeopathic treatment for cough

Cough (কাশি) হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা

আমরা জানি যে হোমিওপ্যাথিতে রোগের নামে কোন ঔষধ নেই। তাই কাশির চিকিৎসাতেও লক্ষণ মিলিয়ে ঔষধ খেতে হবে। কাশির নাম (কি হাঁপানি, ব্রংকাইটিস, সর্দিকাশি নাকি হুপিং কাশি ইত্যাদি) চিন্তা করে ঔষধ খেলে কোন উপকার হবে না।

Homeopathic treatment for cough
Homeopathic treatment for cough

Aconitum napellus :- যে-কোন ধরনের কাশি হোক না কেন, যদি প্রথম থেকেই মারাত্মক আকারে দেখা দেয় অথবা কাশি শুরু হওয়ার দু’চার ঘণ্টার মধ্যে সেটি ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করে, তবে একোনাইট হলো তার এক নাম্বার ঔষধ। একোনাইটের রোগকে তুলনা করা যায় ঝড়-তুফান্ টর্নেডোর সাথে- অতীব প্রচণ্ড কিন্তু ক্ষণস্থায়ী। কাশিও যদি তেমনি হঠাৎ করে মারাত্মক আকারে শুরু হয়, তবে একোনাইট সেবন করুন। কাশির উৎপাত এত বেশী হয় যে তাতে রোগী মৃত্যুর ভয়ে কাতর হয়ে পড়ে।

Bryonia alba : ব্রায়োনিয়ার প্রধান প্রধান লক্ষণ হলো রোগীর ঠোট-জিহ্বা-গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে থাকে এবং প্রচুর পানি পিপাসা থাকে এবং রোগী অনেকক্ষণ পরপর একসাথে প্রচুর ঠান্ডা পানি পান করে। রোগী অন্ধকার এবং নড়াচড়া অপছন্দ করে ; কারণ এতে তার কষ্ট বৃদ্ধি পায়। কোষ্টকাঠিন্য দেখা দেয় অর্থাৎ পায়খানা শক্ত হয়ে যায়। রোগীর মেজাজ খুবই বিগড়ে থাকে এবং সে একলা থাকতে পছন্দ করে। কাশি দিলে মনে হয় মাথা এবং বুক টুকরো টুকরো হয়ে ছিঁড়ে যাবে।

Antimonium tartaricum : এন্টিম টার্টের কাশির প্রধান লক্ষণ হলো কাশির আওয়াজ শুনলে মনে হয় বুকের ভেতর প্রচুর কফ জমেছে কিন্তু কাশলে কোন কফ বের হয় না। রেগে গেলে অথবা খাওয়া-দাওয়া করলে কাশি বেড়ে যায়। জিহ্বায় সাদা রঙের মোটা সতর পড়বে, শরীরের ভেতরে কাঁপুনি, ঘুমঘুম ভাব এবং সাথে পেটের কোন না কোন সমস্যা থাকবেই। কাশতে কাশতে শিশুরা বমি করে দেয় এবং বমি করার পর সে কিছুক্ষণের জন্য আরাম পায়। শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়ার কারণে নাকের পাখা দ্রুত উঠানামা করতে থাকে।

Sambucus nigra : শুকনো অথবা বুকে গড়গড়ানি শব্দযুক্ত কাশি উভয়টিতে স্যাম্বুকাস প্রযোজ্য হতে পারে। কাশির সাথে শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়, দমবন্ধ অবস্থায় রোগী হঠাৎ ঘুম থেকে জেগে ওঠে, কাশির চোটে মুখের রঙ নীল হয়ে যায়, শোয়া থেকে উঠে বসে যায়, খুব কষ্ট করে টেনে টেনে দম নিতে চেষ্টা করে, দম নিতে পারে কিন্তু দম ছাড়তে পারে না। কাশির দমকা এক সময় চলে যায় কিন্তু কিছুক্ষণ পরপর আবার ফিরে আসে। ঘুমের মধ্যে শরীর শুকনা থাকে কিন্তু ঘুম থেকে জেগে ওঠার পর প্রচণ্ড ঘামতে থাকে। বিছানায় শুয়ে থাকলে, ঘুমিয়ে থাকলে, মধ্যরাতে, মধ্যরাতের পরে, ভোর ২-৩ টার দিকে, ঠান্ডা বাতাসে, ভয় পেলে বা আবেগপ্রবন হলে কাশি বৃদ্ধি পায়।

Arnica montana : বুকে বা অন্য কোথাও আঘাত পাওয়ার কারণে যদি কাশি দেখা দেয়, তবে আর্নিকা হলো তার এক নাম্বার ঔষধ। কাশি দিলে যদি বুকে বা গলায় ব্যথা পাওয়া যায়, তবে এমন কাশিতে আর্নিকা খেতে ভুলবেন না। অনেক সময় দেখবেন, শিশুরা কাশির সময় বা কাশির আগে-পরে কাদতে থাকে। ইহার মানে হলো কাশির সময় সে বুকে বা গলায় প্রচণ্ড ব্যথা পায়। এরকম কাশিতে আর্নিকা দিতে হবে। আর্নিকার কাশিতে গলায় সুড়সুড়ি হয়, শিশু রেগে গেলে কাশতে শুরু করে।

Causticum : কষ্টিকামের প্রধান প্রধান লক্ষণ হলো কাশি দিলে প্রস্রাব বেরিয়ে যায়, সকাল বেলা গলা ভাঙ্গা, বুকে প্রচুর কফ কিন্তু সেগুলো উঠানো যায় না, যেটুকু কফ উঠে তাও আবার ফেলতে পারে না বরং খেয়ে ফেলে, পেটে বা শরীরের বিভিন্ন স্থানে জ্বালাপোড়া করে, কাশি ঠান্ডা পানি খেলে কমে যায়, কাশি দিলে প্রস্রাব বেরিয়ে যায় ইত্যাদি। ইহার মানসিক লক্ষণ হলো অন্যের দুঃখ-কষ্ট সহ্য করতে পারে না।

Rumex crispus : রিউমেক্স-এর কাশির প্রধান লক্ষণ হলো ইহা ঠাণ্ডা বাতাসে বৃদ্ধি পায়। গলার নীচের দিকে বা বুকের উপরের দিকে ভেতরে এক ধরণের সুড়ঁসুড়িঁ থেকে কাশির উৎপত্তি হয়। ঠান্ডা বাতাস নাক-মুখ দিয়ে ঢুকলেও কাশি হয় আবার শরীর থেকে কাপড়-চোপড় খুলে ফেললেও কাশি হয় অর্থাৎ শরীরে ঠান্ডা বাতাস লাগলেও কাশি শুরু হয়। লেপ-কম্বল-চাদর দিয়ে মাথাসহ সারা শরীর ঢেকে ফেললে এবং গরম বাতাসে নিঃশ্বাস নিলেই কেবল কাশি বন্ধ হয়। গলায় বা বুকে চাপ দিলে কাশি বেড়ে যায়। কথা বললে, লম্বা শ্বাস নিলে, ঘনঘন ছোট ছোট শ্বাস নিলে কিংবা খাওয়ার সময় এবং খাওয়ার পরে কাশি বেড়ে যায়।

Kali muriaticum : কাশির কারণে যদি চোখের কোন সমস্যা হয়, তবে ক্যালি মিউর খেতে হবে। যেমন কাশির সময় চোখের সামনে আলো দেখা, চোখ তার গর্ত থেকে বের হয়ে পড়বে- দেখতে এমন মনে হওয়া, কাশির সময় চোখে ব্যথা লাগা, চোখে গরম লাগা ইত্যাদি ইত্যাদি। তাছাড়া কফের রঙ যদি খুবই সাদা হয়, সেক্ষেত্রেও ক্যালি মিউর প্রযোজ্য।

Drosera rotundifolia : ড্রসেরার প্রধান প্রধান লক্ষণ হলো গলার মধ্যে সাংঘাতিকভাবে সুড়সুড় করতে থাকে, কাশতে কাশতে দমবন্ধ না হওয়া এবং বমি না হওয়া পযর্ন্ত কাশি থামতে চায় না, কাশির সময় বুকে প্রচণ্ড ব্যথা হওয়ার কারণে শিশুরা দুহাতে বুক চেপে ধরে, কাশি মধ্য রাতে বৃদ্ধি পায় এবং শুয়ে থাকলে বৃদ্ধি পায়, কাশতে কাশতে মুখ নীল হয়ে যায়, দিন্তরাতে অন্তত দশ-পনের বার কাশির দমকা উঠে। ড্রসেরাকে ঘনঘন খাওয়াতে হ্যানিম্যান নিষেধ করেছেন। কেননা তাতে কাশি বেড়ে গিয়ে বিপদ ডেকে আনতে পারে।

Hepar sulph : হিপার সালফের প্রধান প্রধান লক্ষণ হলো ঠান্ডা এবং শুকনা বাতাসে কাশি বৃদ্ধি পায়, ঠান্ডা পানি পান করলে বৃদ্ধি পায়, মধ্যরাতে এবং সকালের দিকে বৃদ্ধি পায়। হালকা থেকে মারাত্মক যে-কোন কাশিতে হিপার উপযুক্ত। কিন্তু শুকনা কাশি অর্থাৎ যে কাশিতে বুকে কোন কফ জমে নাই, তাতে হিপার দিয়ে কোন লাভ নাই।

Ignatia : ইগ্নেশিয়া হলো অদ্ভূত সব লক্ষণের ঔষধ। যেমনকানের শো শো শব্দ গান শুনলে কমে যায়, পাইলসের ব্যথা হাটলে কমে যায়, গলা ব্যথা ঢোক গেলার সময় কমে যায়, মাথা ব্যথা মাথা নীচু করলে কমে যায় ইত্যাদি। যত কাশে তত কাশি বেড়ে যায়- এই লক্ষণ থাকলে তাতে ইগ্নেশিয়া প্রয়োগ করতে হবে। সাধারণত শোক, দুঃখ, বিরহ, বিচ্ছেদ, প্রেমে ব্যর্থতা, আপনজনের মৃত্যু ইত্যাদি কারণে যে-কোন রোগ হলে তাতে ইগ্নেশিয়া প্রযোজ্য।

Ipecac : ইপিকাকের প্রধান লক্ষণ হলো বমি বিম ভাব এবং পরিষ্কার জিহ্বা। হালকা কাশি থেকে নিউমোনিয়া, হুপিং কাশি এবং হাঁপানির মতো মারাত্মক কাশিতেও ইপিকাক দিতে পারেন যদি উপরোক্ত লক্ষণ দুইটি কারো মধ্যে বিদ্যমান থাকে।

Kali bichrom : ক্যালি বাইক্রম হলো হোমিওপ্যাথিতে নাক-কান-গলার একটি শ্রেষ্ট ঔষধ। ইহার প্রধান লক্ষণ হলো (নাকের শ্লেষ্মা, বমি,) কফ খুবই আঠালো হয় এবং কোন কাঠিতে (বা আঙুলে) লাগিয়ে টানলে সুতার/রশির মতো লম্বা হয়ে যায়। এই লক্ষণটি পাওয়া গেলে যে-কোন ধরণের কাশি বা অন্য যে-কোন রোগে ক্যালি বাইক্রোম খাওয়ালে যাদুর মতো সেরে যাবে।

Kali carb : কালি কার্বের প্রধান লক্ষণ হলো কাশি ভোর ৩টা থেকে ৫টার দিকে বৃদ্ধি পায়, কাশির সময় বুকে সূই ফোটানোর মতো ব্যথা হয়, সামনের দিকে কাত হলে অর্থাৎ হাঁটুর ওপর মাথা রেখে বসলে ভাল লাগে, চোখের ওপরের পাতা ফোলা, কোমরে ব্যথা, প্রচুর ঘাম হয় ইত্যাদি।

Spongia tosta : স্পঞ্জিয়া ঔষধটি শুকনা কাশিতে প্রযোজ্য। সাধারণত গলার ভিতরটা শুকিয়ে কাঠ হয়ে থাকে। কাশি দিলে ড্রামের মতো আওয়াজ হয়। মারাত্মক কাশি, শ্বাস নেওয়ার সময় অসুবিধা হয়, হিসহিস শব্দ হয়। মিষ্টি খেলে, ঠান্ডা পানি পানে, ধূমপানে, মাথা নীচু করে শুইলে, মাঝরাতের পূর্বে এবং ঠান্ডা শুকনা বাতাসে কাশি বৃদ্ধি পায়। পক্ষান্তরে গরম পানি বা গরম খাবারে কাশির মাত্রা কমে যায়। হৃদরোগের সাথে সম্পর্কিত কাশিতে এটি বেশী ফলপ্রদ।

Sticta pulmonaria : স্টিকটার প্রধান প্রধান লক্ষণ হলো শুকনা কাশি, বিকালে এবং রাতে বৃদ্ধি পায়, ঘুমাতেও পারে না এবং শুইতেও পারে না, বসে থাকতে হয়, বুকের ওপর মনে হয় ভারী একটি পাথর চেপে আছে, নাকের গোড়া মনে হয় কেউ চেপে ধরেছে, বিরতিহীন হাচিঁ, প্রচণ্ড মাথা ব্যথা ইত্যাদি।

Cuprum met : ভয়ঙ্কর কাশি, একবার কাশি উঠলে অনেকক্ষণ পযর্ন্ত থাকে, কাশি শেষ হলে রোগী দুর্বল হয়ে মরার মতো হয়ে পড়ে, দিন্তেরাতে অনেকবার কাশির দমকা উঠে, কাশতে কাশতে (ধনুষ্টংকারের মতো) শরীর বাঁকা হয়ে যায় ইত্যাদি হলো কিউপ্রামের প্রধান প্রধান লক্ষণ।

Mephitis : হুপিং কাশির মতো মারাত্মক কাশিতে মেফিটিস ব্যবহৃত হয়, যাতে অল্পতেই রোগীদের দম বন্ধ হয়ে আসে। উচ্চস্বরে পড়াশোনা করলে, কথা বললে, কিছু পান করলে কাশি বৃদ্ধি পায়। কাশির সময় বুকের ভেতর শো শো আওয়াজ হয়, সারারাত কাশি হয়, একটু পরপর ফিরে আসে। একটি অদ্ভূত লক্ষণ হলো এদের শরীরে গরমবোধ এত বেশী যে, বরফের মতো ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করলেও তাদের কোন অসুবিধা হয় না; বরং আরাম লাগে।

Jaborandi : জ্যাবোরেন্ডির প্রধান প্রধান লক্ষণ হলো এটি চামড়া, প্যারোটিড গ্ল্যান্ড এবং টনসিলের ওপর বেশী কাজ করে, গলা থেকে প্রচুর কফ-থুতু-পানি নির্গত হওয়া, জ্বর, বমি, এলার্জি ইত্যাদি । তাহলে কাশির ক্ষেত্রে ইহার লক্ষণ হবে বেশী বেশী কফ বের হওয়া, একেবারে মুখ ভরে কফ বের হতে থাকলেই কেবল জ্যাবোরেন্ডি কাজ করবে।

Previous Post
Next Post

post written by:

DHMS (BHB), PDT and MBA

0 Comments: