Rectopen: জীববিজ্ঞান

Download Free Android Apps

Ads 728x90

Showing posts with label জীববিজ্ঞান. Show all posts
Showing posts with label জীববিজ্ঞান. Show all posts
Cell Biology
December 23, 2022
Cell Biology

Cell Biology

Type something in the input field to search the table for first names, last names or others:

কোষ কাহাকে বলে ?

কোষ হলো সকল জীবদেহের গঠন, বিপাকীয় ক্রিয়াকলাপ ও বংশগতিমূলক তথ্য বহনকারী একক। এটি জীবের ক্ষুদ্রতম জীবিত একক, অর্থাৎ একটি কোষকে পৃথকভাবে জীবিত বলা যেতে পারে। এজন্যই একে জীবের নির্মাণ একক নামে আখ্যায়িত করা হয়।) ব্যাক্টেরিয়া এবং এ ধরনের কিছু জীব এককোষী।

কিন্তু মানুষসহ পৃথিবীর অধিকাংশ জীবই বহুকোষী। মানবদেহে প্রায় ৩৭ লক্ষ কোটি কোষ রয়েছে; একটি কোষের আদর্শ আকার হচ্ছে ১০ মাইক্রোমিটার এবং ভর হচ্ছে ১ ন্যানোগ্রাম। জানামতে বৃহত্তম কোষ হচ্ছে উটপাখির ডিম।

সকল জীবিত বস্তুই এক বা একাধিক কোষ দ্বারা গঠিত এবং সব কোষই পূর্বে অস্তিত্বশীল অন্য কোনো কোষ থেকে উৎপত্তি লাভ করে। জীবের মৌলিক গুরুত্বপূর্ণ সব ক্রিয়াই কোষের অভ্যন্তরে সংঘটিত হয়। সকল কোষের মধ্যে কার্যক্রিয়া সম্পাদনের জন্য প্রয়োজনীয় বংশগতীয় তথ্য এবং পরবর্তী বংশধরে স্থানান্তরের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য সংরক্ষিত থাকে।
কোষ কি
১। জীবদেহের গঠন ও কাজের একককে কোষ বলে।
২। কোষ হলো জীবন্ত সত্তার গাঠনিক, শারীরিক ও সাংগাঠনিক একক।
৩। কোষ হলো জীবনের মৌলিক একক।
৪। কোষ বংশগতির একক।
৫। সকল জীব এক বা একাধিক কোষ দ্বারা গঠিত এবং পূর্বসৃষ্ট কোষ থেকেই নতুন কোষের সৃষ্টি হয়।

১। বিজ্ঞানী রবার্ট হুক ১৬৬৫ সালে কোষ আবিষ্কার করেন।
২। একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের দেহে প্রায় ৬ থেকে ১০ লক্ষ কোটি কোষ থাকে।
৩। নিউক্লিয়াসের গঠন অনুযায়ী কোষ ২ প্রকার– (i) আদি কোষ বা প্রাককেন্দ্রিক কোষ। (ii) প্রকৃত কোষ বা সুকেন্দ্রিক কোষ।
৪। অবস্থান ও কাজের ভিত্তিতে কোষ ২ প্রকার– (i)দেহ কোষ ও (ii) জনন কোষ।

কোষের উপাদানসমূহঃ

আদি বা প্রকৃত সকল কোষেই একটি আবরণ থাকে যার মাধ্যমে এটি বাইরের পরিবেশ থেকে পৃথক হয়ে যায় এবং এই আবরণটি কোষের বাইরের পদার্থের সাথে ভিতরের পদার্থের আদান প্রদানের ভারসাম্য রক্ষা করে। এছাড়াও এই আবরণটির মাধ্যমে কোষের তড়িৎ বিভব বজায় থাকে। ঝিল্লি বা আবরণটির ভিতরে একটি লবণাক্ত সাইটোপ্লাজম অধিকাংশ আয়তন দখল করে থাকে। সকল কোষেই জিনের বংশগতিক পদার্থগুলো বহনের জন্য ডিএনএ এবং এনজাইম সহ অন্যান্য প্রোটিন সংশ্লেষের জন্য আরএনএ উপস্থিত থাকে। এ দুটিই কোষের প্রাথমিক যন্ত্রপাতি। এছাড়াও কোষে অন্যান্য ধরনের জৈব অণু থাকে। এখানে এই উপাদানগুলোর তালিকা তৈরি করা হবে।

Gene বংশাণু বা জিন (ইংরেজি হলো Gene) জীবন্ত প্রাণের বংশগতির আণবিক একক। এটি বৈজ্ঞানিক সম্প্রদায় কর্তৃক ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয় মূলত ডাইঅক্সিরাইবোনিউক্লিক এসিড (ডিএনএ) এবং রাইবোনিউক্লিক এসিড (আরএনএ) এর প্রসারিত অর্থে যা পলিপেপটাইড বা একটি আরএনএ শৃঙ্খলকে গঠন করে। জীবন্ত প্রাণী বংশাণুর ওপর নির্ভর করে, কারণ তারা সকল প্রোটিন এবং গঠনমূলক আরএনএ শৃঙ্খলকে স্বতন্ত্রিত করে। বংশাণু প্রজাতির তথ্যধারণ করে এবং প্রাণীর কোষকে নিয়ন্ত্রণ করে। এর মাধ্যমেই প্রজাতির গুণ অব্যাহত থাকে। সমস্ত জৈবিক বৈশিষ্ট্যধারণকারী প্রাণীর বংশাণু আছে। ইংরেজি জিন শব্দটি এসেছে গ্রীক শব্দ জেনেসিস থেকে যার অর্থ "জন্ম" বা জিনোস থেকে যার অর্থ "অঙ্গ"।

জিন কথাটি প্রথম ব্যবহার করেন বিজ্ঞানী জোহান সেন ১৯০৯ সালে।

DNA ডিঅক্সিরাইবোনিউক্লিক অ্যাসিড (ইংরেজি: DNA) একটি নিউক্লিক অ্যাসিড যা জীবদেহের গঠন ও ক্রিয়াকলাপ নিয়ন্ত্রণের জিনগত নির্দেশ ধারণ করে। সকল জীবের ডিএনএ জিনোম থাকে। একটি সম্ভাব্য ব্যতিক্রম হচ্ছে কিছু ভাইরাস গ্রুপ যাদের আরএনএ জিনোম রয়েছে, তবে ভাইরাসকে সাধারণত জীবন্ত প্রাণ হিসেবে ধরা হয় না। কোষে ডিএনএর প্রধান কাজ দীর্ঘকালের জন্য তথ্য সংরক্ষণ। জিনোমকে কখনও নীলনকশার সাথে তুলনা করা হয় কারণ, এতে কোষের বিভিন্ন অংশে যেমন: প্রোটিন ও আরএনএ অণু, গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশাবলি থাকে। ডিএনএর যে অংশ এ জিনগত তথ্য বহন করে তাদের বলে জিন, কিন্তু অন্যান্য ডিএনএ ক্রমের গঠনগত তাৎপর্য রয়েছে অথবা তারা জিনগত তথ্য নিয়ন্ত্রণে ব্যবহৃত হয়।

DNA উৎসেচক বা "এনজাইম" (ইংরেজি: Enzyme) হচ্ছে এক প্রকার জৈব অনুঘটক (ইংরেজি:organic catalyst)। গঠনগতভাবে এটি প্রোটিন জাতীয় পদার্থ । ব্যতিক্রম রাইবোজাইম (ribozyme) এবং ডিএনএজাইম যেখানে যথাক্রমে আরএনএ ও ডিএনএ উৎসেচক (এনজাইম) হিসাবে কাজ করে।

DNA প্রোটিন (Protein) হল এক প্রকারের বৃহৎ জৈব অণু কিংবা বৃহদাণু, যা এক বা একাধিক দীর্ঘ অ্যামিনো অ্যাসিড উদ্বৃত্তের শৃঙ্খল নিয়ে গঠিত। প্রোটিনগুলি জীবদেহের ভেতরে বিশাল সংখ্যক কার্য সম্পাদন করে, যেমন বিপাকীয় বিক্রিয়াসমূহের অনুঘটন, ডিএনএ প্রতিলিপিকরণ, উদ্দীপকের প্রতি সাড়াদান, কোষ ও জীবদেহে কাঠামো প্রদান, এক স্থান থেকে অন্যত্র বিভিন্ন অণু পরিবহন, ইত্যাদি।

DNA রাইবোনিউক্লিক অ্যাসিড (অ্যাক্রোনিম বা সংক্ষিপ্তকরণে আরএনএ বা RNA) হল একটি নিউক্লিক অ্যাসিড যা সরাসরি প্রোটিন সংশ্লেষণের সাথে জড়িত এবং যার পলিনিউক্লিয়োটাইডের মনোমার এককগুলোতে গাঠনিক উপাদানরূপে রাইবোজ শুগার ও অন্যতম বেস বা ক্ষারক হিসেবে ইউরাসিল থাকে।[১] রাইবোনিউক্লিক অ্যাসিড হল একটি গুরুত্বপূর্ণ নিউক্লিওটাইড যা নিউক্লিক অ্যাসিডের দীর্ঘ শৃঙ্খলের ন্যায় সমস্ত জীবন্ত কোষে উপস্থিত রয়েছে। সাধারণত ডিএনএ থেকে প্রাপ্ত এই নিউক্লিক অ্যাসিড মানবদেহে নতুন কোষ তৈরির জন্য দায়ী। আরএনএ-কে কোন কোন সময় এনজাইম হিসাবেও উল্লেখ করা হয় কারণ এটি শরীরের রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে।

RNA-এর প্রধান ভূমিকা হল প্রোটিন সংশ্লেষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য ডিএনএ থেকে নির্দেশাবলী বহনকারী একটি বার্তাবাহক হিসাবে কাজ করা।

উদ্ভিদ কোষ ও প্রাণী কোষের পার্থক্যঃ

উদ্ভিদ কোষঃপ্রাণী কোষঃ
১। কোষ প্রাচীর উপস্থিত। ১। কোষ প্রাচীর অনুপস্থিত।
২। কোষ প্রাচীর দ্বারা আবৃত। ২। প্লাজমা পর্দা দ্বারা আবৃত।
৩। প্লাস্টিড উপস্থিত। ৩। প্লাস্টিড অনুপস্থিত।
৪। বড় কোষগহ্বর থাকে। ৪। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কোষগহ্বর থাকে।
৫। নিজের আকার পরিবর্তন করতে পারে না। ৫। প্রায় সময় নিজের আকার পরিবর্তন করতে পারে।
৬। সেন্ট্রিওল থাকে না। ৬। সেন্ট্রিওল থাকে।
৭। লাইসোজোম খুবই কম থাকে। ৭। লাইসোজোম সবসময় উপস্থিত থাকে।
৮। আকারে সাধারণত বৃহত্তর হয়। ৮। আকারে তুলনামূলক ছোট হয়।
৯। নিউক্লিয়াস সাইটোপ্লাজমের এক কোণায় থাকে। ৯। নিউক্লিয়াস সাধারণত কেন্দ্রে থাকে।
১০। গ্লাইঅক্সিজোম উপস্থিত থাকতে পারে। ১০। গ্লাইঅক্সিজোম অনুপস্থিত থাকে।
১১। সঞ্চিত খাদ্য শ্বেতসার বা স্টার্চ । ১১। সঞ্চিত খাদ্য গ্লাইকোজেন।

কোষ বিভাজন ও তার প্রকারভেদ or Cell division and its types:

কোষ বিভাজন ৩ প্রকার।

অ্যামাইটোসিস- যে কোষ বিভাজন প্রক্রিয়ায় একটি মাতৃকোষের নিউক্লিয়াস ও সাইটোপ্লাজম কোনো জটিল মাধ্যমিক পর্যায় ছাড়াই সরাসরি বিভক্ত হয়ে দুটি অপত্য (শিশু) কোষের সৃষ্টি করে, তাকে অ্যামাইটোসিস বা প্রত্যক্ষ কোষ বিভাজন বলে।

মাইটোসিস- যে বিভাজনে প্রকৃত কোষের নিউক্লিয়াস ও ক্রোমোজোম উভয়ই একবার করে বিভক্ত হয়, তাকে মাইটোসিস বলে। মাইটোসিস কোষ বিভাজনকে সমীকরণিক বিভাজন বলা হয় কারণ এতে অপত্য কোষ হুবহু মাতৃ কোষের অনুরূপ হয়ে থাকে।

মিয়োসিস- যে বিভাজনে নিউক্লিয়াস পরপর দুইবার ও ক্রোমোজোম একবার করে বিভক্ত হয়ে মাতৃকোষের ক্রোমোজোমের অর্ধেক সংখ্যক ক্রোমোজোমযুক্ত চারটি অপত্য কোষ সৃষ্টি হয়, তাকে মিয়োসিস বলে। উন্নত জীবের জনন মাতৃকোষে মিয়োসিস হয়ে থাকে।

Cell Function Description of the cell
Animal CellNucleus নিউক্লিয়াস (ইংরেজি: Cell Nucleus) হল প্রোটোপ্লাজমের সবচেয়ে ঘন, পর্দাঘেরা এবং প্রায় গোলাকার অংশ।যা কোষের সব জৈবনিক ক্রিয়া বিক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে তাকে বলা হয় নিউক্লিয়াস ৷ রবার্ট ব্রাউন(Robert Brown) সর্বপ্রথম ১৮৩১ সালে কোষে নিউক্লিয়াস দেখতে পান এবং এর নামকরণ করেন।তিনিই এটি আবিষ্কার করেন সর্বপ্রথম।

এটি ৪ টি অংশে বিভক্ত। যথাঃ (১) নিউক্লিয় পর্দা, (২) নিউক্লিওলাস, (৩) নিউক্লিয়প্লাজম এবং (৪) নিউক্লিয়জালক
Animal CellNucleolus নিউক্লিয়াসের অভ্যন্তরে অবস্থিত ক্ষুদ্র,গোল,উজ্জ্বল ও অপেক্ষাকৃত ঘন বস্তুটি নিউক্লিওলাস (ইংরেজিঃ Nucleolus) নামে পরিচিত।বিজ্ঞানী ফণ্টানা (Fontana) 1781 সালে সর্বপ্রথম এটি দেখতে পান।প্রাণিবিদ বোম্যান (Bowman) ১৮৬৬ সালে নিউক্লিওলাসের নামকরণ করেন।

নিউক্লিয়াসের ভেতরে, প্রোটিন ও ডিএনএ দ্বারা গঠিত যে ছোট, গোলাকার ও অধিকতর ঘন বস্তুটি ক্রোমাটিন তন্তুর সাথে লেগে থাকে, তাকে নিউক্লিওলাস বলে।
Animal CellRough endoplasmic reticulum এন্ডোপ্লাজমিক রেটিকুলাম শুধু মাত্র সুকেন্দ্রিক কোষে পাওয়া যায়। এর পৃষ্ঠে রাইবোজম দানা থাকলে তাকে অমসৃণ এন্ডোপ্লাজমিক রেটিকুলাম বলে যা প্রোটিন সংশ্লেষে সক্ষম। এবং রাইবোজম দানা না থাকলে তাকে মসৃণ এন্ডোপ্লাজমিক রেটিকুলাম বলে যা লিপিড সংশ্লেষে সক্ষম।
Animal CellGolgi Bodies or apparatus সাইটোপ্লাজমে অবস্থিত কতকগুলো ঘনসন্নিবিষ্ট চওড়া সিস্টারনি,থলির মতো ভ্যাকুওল এবং ক্ষুদ্র ভেসিকল এর সমন্বয়ে গঠিত জটিল অঙ্গাণু হল গলজি বস্তু বা গলজি বডি। ইতালীয় স্নায়ুবিজ্ঞানী ক্যামিলো গলজি ১৮৯৮ সালে পেঁচা ও বিড়ালের মস্তিষ্কের কোষে গলজি বস্তু আবিষ্কার করেন। গলজি বস্তুকে কোষের প্যাকেজিং কেন্দ্র বলে। গলজি বস্তু প্রধানত প্রাণিকোষে পাওয়া যায়। তবে উদ্ভিদকোষেও কদাচিৎ দেখা যায়। ইতালীয় স্নায়ুতত্ত্ববিদ ক্যামিলো গলজি ১৮৯৮ সালে গলজি বডি আবিষ্কার করেন। তার নাম অনুসারেই গলজি বডির নামকরণ করা হয়। একে কোষের ট্রাফিক পুলিশও বলা হয়।
Animal CellSmooth endoplasmic reticulum এন্ডোপ্লাজমিক রেটিকুলাম বা অন্তঃপ্লাজমীয় জালিকা হল কোষের সাইটোপ্লাজমে অবস্থিত একপ্রকার জালিকাকার অঙ্গাণু। এরা একক আবরণী ঝিল্লি দ্বারা বেষ্টিত অসংখ্য সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম নালিকা এবং পরস্পর সংযোগ স্থাপন করে একটি জালকের সৃষ্টি করে।
Animal CellRibosome রাইবোসোম (Ribosome) হলো ঝিল্লিবিহীন একটি কোষীয় অঙ্গাণু যা প্রোটিন তৈরি করে এবং কোষের প্রয়োজনে বিভিন্ন এনজাইম সরবরাহ করে। প্রাণী ও উদ্ভিদ উভয় প্রকার কোষেই এদের পাওয়া যায়। কোথায় আমিষ সংশ্লেষ হবে তার স্থান নির্ধারণ করা এর কাজ। প্রোটিনের পলিপেপটাইড চেইন সংযোজন এই রাইবোসোমে হয়ে থাকে। রাইবোসোম হল কোষের প্রোটিন সংশ্লেষক।

আবিষ্কারঃ বিজ্ঞানী ক্লড (Claude) ১৯৪০ সালে এটি সর্বপ্রথম আবিষ্কার করেন। পরে Palade (১৯৫৫) প্রাণীকোষে এর ইলেকট্রনিক আণুবীক্ষণিক গঠন পর্যবেক্ষণ করেন।

প্রকারঃ আকার ও সেডিমেন্টেশন সহগ হিসাবে এটি দু’প্রকার। যথাঃ ৭০s এবং ৮০S।

রাইবোসোমের গঠন রাইবোসোম প্রধানত প্রোটিন ও RNA দিয়ে তৈরি। রাইবোসোমের বহু প্রোটিন মূলত এনজাইম। mRNA অণু রাইবোসোমের সাথে যুক্ত হলে tRNA-র সহায়তায় প্রোটিন সংশ্লেষিত হয়। সংশ্লেষণের সময় একই সাথে পরস্পর বেশ কয়েকটি রাইবোসোম mRNA-এর সাথে যুক্ত হলে তখন তাকে পলিরাইবোসোম (polyribosome) বা পলিসোম বলে।

রাইবোসোমের কাজ প্রোটিন সংশ্লেষণ করা। প্রোটিন সংশ্লেষণের শুরুতে mRNA আদি কোষের 30S এবং প্রকৃত কোষের 40S সাব ইউনিটের সাথে সংযোগ স্থাপন করে। এরপর 50S এবং 60S সাব-ইউনিটে একত্রিত হয়ে যথাক্রমে 70S (আদি কোষে) এবং 80S (প্রকৃত কোষে) একক গঠন করে। এছাড়া স্নেহ বিপাকে সহায়তা করে।
Animal CellMitochondria মাইটোকন্ড্রিয়া দ্বি-স্তরবিশিষ্ট আবরণী ঝিল্লি দ্বারা সীমিত সাইটোপ্লাজমস্থ যে অঙ্গাণুতে ক্রেবস চক্র, ইলেকট্রন ট্রান্সপোর্ট ইত্যাদি ঘটে থাকে এবং শক্তি উৎপন্ন হয় সেই অঙ্গাণুকে মাইট্রোকন্ডিয়া বলে।

মাইটোকন্ড্রিয়নকে "কোষের পাওয়ার হাউস" বলা হয়। এটিকে বলা হয় কারণ এটি ATP তৈরি করে - কোষের শক্তির মুদ্রা।

মাইটোকনড্রিয়াকে কোষের শক্তিঘর বলে। খাদ্যের শক্তি নির্গত হয়ে মাইটোকন্ড্রিয়াতে সঞ্চিত থাকে। এবং ওই শক্তি কোষের প্রয়োজনীয় শক্তির যোগান দেয়। তাই মাইটোকন্ড্রিয়াকে কোষের শক্তিঘর বা পাওয়ার হাউজ বলা হয়।
Animal CellPeroxisome ইউনিট পর্দা বেষ্টিত জারণ গুণসম্পন্ন এনজাইমে পূর্ণ ক্ষুদ্র, গোলাকার, আত্ম প্রজনন ক্ষম সাইটোপ্লাজমে অবস্থিত অঙ্গাণুকে পারঅক্সিসোম বলে। পারঅক্সিসোমের অভ্যন্তর ভাগ দানাদার।

পারঅক্সিসোম এর কাজ ১. পারঅক্সিসোম H2O2-কে পানি ও Ox-এ বিভক্ত করে কোষে মুক্ত করে। ২. মানব দেহে দীর্ঘ শৃঙ্খল ফ্যাটি এসিড জারণ করে। ৩. কিছু সংখ্যক জারণ এনজাইম ধারণ করে।
Animal CellLysosome লাইসোসোম বা লাইসোজোম (ইংরেজি:Lysosome) এক ধরনের কোষীয় অঙ্গাণু যা সাধারণত প্রাণী কোষে পাওয়া যায়। কোষের সাইটোপ্লাজমে দ্বি-স্তর বিশিষ্ট লিপো-প্রোটিন সম্বনয়ে গঠিত মেমব্রন বা ঝিল্লি দ্বারা আবৃত যে অঙ্গাণুটি নানাবিধ হাইড্রোলাইটিক এনজাইমের ধারক বা বাহক হিসেবে কাজ করে তাই লাইসোজোম বলে।
Animal CellCentriole সেন্ট্রিওল: প্রাণীকোষ ও কিছু উদ্ভিদকোষে যে একজোড়া নলাকার অঙ্গাণু নিউক্লিয়াসের কাছে অবস্থিত এবং কোষ বিভাজনে মাকুতন্ত্র গঠনে সমর্থ, তাকে সেন্ট্রিওল বলে। সেন্টিওল এর কাজ মনে রাখার ছন্দ "শুভ মার ফাজিল ছেলে"

শু = শুক্রাণুর লেজ গঠনে সাহায্য করে,
ভ = কোষ বিভাজনে সহায়তা করে,
মা = কোষ বিভাজনে মাকুতন্ত্র গঠন করে,
ফাজিল ছেলে = ফ্ল্যাজেলা ও সিলিয়া গঠন করে।
Animal CellCytoskeleton সেল মেমব্রেন, নিউক্লিয়ার এনভেলপ ও অন্যান্য অঙ্গাণুর সাথে সংযুক্ত থেকে এদের সাথে যোগাযোগ ও পরিবহন কার্যে সাহায্য করে। এরা সাইটোস্কেলিটন বা কোষীয় কঙ্কাল হিসেবে কাজ করে এবং কোষকে দৃঢ়তা প্রদান করে। যোগাযোগ ও পরিবহনে সাহায্য করে।

কোষকঙ্কাল (ইংরেজি: cytoskeleton) কোষের ভেতরে সাইটপ্লাজমে অবস্থিত তন্তুসমূহের সমষ্টি, যা কোষের আকৃতি রক্ষা, বিভিন্ন অঙ্গাণুর সমন্বয় সাধন, চলন, ইত্যাদি কাজের দায়িত্ব পালন করে। কোষঝিল্লি অতিক্রম কিরে কোষের ভিতরে ঢুকলে প্রথমেই কোষকঙ্কাল নজরে পড়বে। কোষকঙ্কাল ভিতর থেকে কোষটাকে ধরে রাখে।

সাইটোকঙ্কাল তিনপ্রকার:
  • অ্যাকটিন সূক্ষ্মতন্তু (Actin microfilament): ৬-৯ ন্যানোমিটার ব্যাস
  • অন্তর্বতী তন্তু (intermediate filament)
  • সূক্ষ্মনালিকা (microtubule): ~২৫ ন্যানোমিটার ব্যাস
Animal CellPlasma membrane রক্তের তরল অংশকে রক্তরস বা প্লাজমা বলে। রক্তের হালকা হলুদ বর্ণের তরল অংশকে রক্তরস(Plasma) বলা হয়। রক্তরস তরল কঠিন পদার্থের সমন্বয়ে তৈরি। এতে তরল পদার্থের(পানির) পরিমাণ ৯০-৯২% এবং কঠিন পদার্থের পরিমাণ ৮-১০%।

রক্তরসের ৫টি কাজ।
  • ১। রক্ত জমাট বাঁধার প্রয়োজনীয় উপাদানগুলো পরিবহন করে।
  • ২। হরমোন, এনজাইম, লিপিড প্রভৃতি দেহের বিভিন্ন অংশে বহন করে।
  • ৩। টিস্যু থেকে বর্জ্য পদার্থ নির্গত করে রেচনের জন্য বৃক্কে পরিবহন করে।
  • ৪। রক্তকণিকাসহ রক্তরসে দ্রবীভূত খাদ্যসার দেহের বিভিন্ন অংশে বাহিত হয়।
  • ৫। শ্বসনের ফলে কোষে সৃষ্ট CO2 কে বাইকার্বনেট হিসেবে ফুসফুসে পরিবহন করে।

রক্তরস হল রক্তের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এটি হালকা হলুদাভ তরল যা সাধারণত দেহের বিভিন্ন প্রকার রক্তকোষ ধারণ করে। মানব দেহের শতকরা প্রায় ৫৫ ভাগই হল রক্তরস। রক্তরস মূলত কোষপর্দার বাইরের রক্তগহ্বরের মধ্যকার তরল পদার্থ। এর ৯৫ শতাংশ হল জল এবং ৬-৮% (শতাংশ) বিভিন্নপ্রকার প্রোটিন (অ্যালবুমিন, গ্লোবুলিন, ফাইব্রিনোজেন),গ্লুকোজ, ক্লোটিং উপাদান, ইলেক্টোপ্লেট (Na+, Ca2+, Mg2+, HCO3-, Cl-, ইত্যাদি), হরমোন এবং কার্বন ডাইঅক্সাইড (রক্তরস বিপাকীয় সংবহনতন্ত্রের মূল মাধ্যম)। রক্তরস মানবদেহের আমিষ সংরক্ষণের কাজও করে থাকে। এটি রক্তগহ্বরের অভিস্রবণ প্রক্রিয়া অটুট রাখে যাতে রক্তে বিভিন্ন ইলেক্ট্রোলাইট যথানুপাতে বিদ্যমান থাকে এবং মানবদেহ জীবাণু সংক্রমণ ও বিবিধ রক্তবৈকল্য থেকে মুক্ত থাকে।
Animal Cell
Organelles of cellsProtoplasm প্রোটোপ্লাজম – কোষমধ্যস্থ অর্ধস্বচ্ছ, দানাদার, থকথকে কলয়েড জাতীয় সজীব পদার্থ যার ৭৫-৯৫% পানি।
Organelles of cellsCell Wall কোষপ্রাচীর – প্রাণিদেহে কোষ প্রাচীর থাকে না। উদ্ভিদ দেহে কোষ প্রাচীর মৃত ও জড় বস্তু দিয়ে গঠিত।
-ব্যাকটেরিয়াতে মাইটোকন্ড্রিয়া অনুপস্থিত।
-জীবের শ্বসন কার্যে সহায়তা করা মাইটোকন্ড্রিয়ার প্রধান কাজ।
Organelles of cellsChromoplast ক্লোরোপ্লাস্ট – সবুজ বর্ণের, ক্লোরোফিল এ এবং বি – এ দুই ধরনের ক্লোরোফিল দেখতে পাওয়া যায়।
ক্রোমোপ্লাস্ট – রঙিন প্লাস্টিড, ক্যারোটিন (লাল) এবং জ্যান্থোফিল (হলুদ)।
লিউকোপ্লাস্ট – বর্ণহীন। আলোর সংস্পর্শে এলে লিউকোপ্লাস্ট ক্রোমোপ্লাস্টে অথবা ক্লোরোপ্লাস্টে রূপান্তরিত হয়। ছত্রাক, নীলাভ সবুজ শৈবাল, ব্যাকটেরিয়া এবং প্রাণী কোষে প্লাস্টিড নেই।
Organelles of cellsNucleus নিউক্লিয়াসকে – কোষের মস্তিষ্ক, কোষের প্রাণ বা প্রাণকেন্দ্র বলা হয়।
Organelles of cellsSinocyte সিনোসাইট – একাধিক নিউক্লিয়াস বিশিষ্ট কোষের গঠনকে সিনোসাইট বলা হয়, যেমন- Vaucheria, Botrydium, Sphaeroplea ইত্যাদি শৈবাল ও Penicillium সহ কতিপয় ছত্রাক।

Note that we start the search in tbody, to prevent filtering the table headers.

Difference between Cytoplasm and Protoplasm
December 01, 2022
Definition of Homeopathy_Chapter-02

Protoplasm_প্রোটোপ্লাজম।

আবিষ্কার ও নামকরণ : বিজ্ঞানী পারকিনজি (Purkinje, ১৮৪০) সর্বপ্রথম প্রােটোপ্লাজম কথাটি ব্যবহার করেন। প্রােটোপ্লাজমই যে প্রাণের ভৌত ভিত্তি সে সম্পর্কে প্রথম ধারণা দেন বিজ্ঞানী ম্যাক্স সূলজ (Max Schultze, ১৮৬৩) এবং টমাস হাক্সলে (Thomas Huxley, ১৮৬৮)।

Cytoplasm_সাইটোপ্লাজম।

সাইটোপ্লাজম হচ্ছে কোষের ভেতরে বেশির ভাগ অংশ জুড়ে অবস্থিত স্বচ্ছ, সমসত্ব, জেলি-সদৃশ পদার্থ। সাইটোপ্লাজমের অভ্যন্তরে অবস্থিত কোষের বিভিন্ন জৈবনিক ক্রিয়াকলাপের সাথে সংশ্লিষ্ট সজীব বস্তুসমূহকে একত্রে সাইটোপ্লাজমীয় অঙ্গাণু বলা হয় । সাইটোপ্লাজমের ৮০ শতাংশই পানি এবং সাধারণত বর্ণহীন।

১৮৬২ সালে বিজ্ঞানী রুডলফ ভন কলিকার সর্বপ্রথম সাইটোপ্লাজম শব্দটি ব্যবহার করেন। কোষের অধিকাংশ কার্যাবলি সাইটোপ্লাজমেই সম্পাদিত হয়। সাইটোপ্লাজমে ক্যালসিয়াম আয়নের আসা-যাওয়া বিপাক ক্রিয়ার সংকেত হিসেবে সংঘটিত হয়। উদ্ভিদকোষে কোষগহবর ঘিরে সাইটোপ্লাজমের নড়াচড়াকে সাইটোপ্লাজমিক স্ট্রীমিং বলে।

জীবনের ভৌত ভিত্তি বলা হয় কেন?

নিউক্লিয়াস কোষের প্রাণকেন্দ্র যা কোষের যাবতীয় কার্যাবলি সম্পাদন ও নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। জীবনের অস্তিত্ব প্রকাশে সাইটোপ্লাজম ও নিউক্লিয়াস সমন্বিত প্রোটোপ্লাজম মূল কোষের প্রতিনিধিত্ব করে। এ জন্যই প্রোটোপ্লাজমকে জীবনের ভৌত ভিত্তি বলা হয়।

প্রােটোপ্লাজম হলো কোষের ভিতরের অর্ধস্বচ্ছ, থকথকে জেলির মতো বস্তু। গ্রিক শব্দ protos-প্রথম, plasma-আকার থেকে Protoplosm শব্দটির উৎপত্তি। একে সাইটোপ্লাজমিক ধাত্র বা cytoplasmic matrix বলা হয়। প্রকৃতপক্ষে এর মধ্যেই নিউক্লিয়াস ও অন্যান্য কোষীয় অঙ্গাণুসমূহ অবস্থান করে। প্রােটোপ্লাজমের অভ্যন্তরে বিভিন্ন ধরনের জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়া অবিরতভাবে চলে। বিভিন্ন প্রভাবকের প্রভাবে প্রােটোপ্লাজমের মৃত্যু ঘটলে কোষেরও মৃত্যু ঘটে থাকে।

কোষ প্রাচীরের অভ্যন্তরে সমুদয় পদার্থ একসাথে প্রোটোপ্লাস্ট নামে পরিচিত। প্রোটোপ্লাস্ট দুভাগে বিভক্ত।যথাঃ ১) সজীব প্রোটোপ্লাজম ২) নির্জীব বস্তু বা অপ্রোটোপ্লাজমীয় উপাদান।নিম্নে এদের বর্ণনা দেওয়া হল।

এটি অর্ধস্বচ্ছ , বর্ণহীন, জেলিসদৃশ অর্ধতরল আঠালাে পদার্থ। এটি দানাদার ও কলয়েডধর্মী। এটি কোষস্থ পরিবেশ অনুযায়ী জেলি থেকে তরল এবং তরল থেকে জেলিতে রূপান্তরিত হয়। এটি জৈব ও অজৈব পদার্থের সমন্বয়ে গঠিত। সকল মেটাবলিক কার্যকলাপ প্রােটোপ্লাজম করে থাকে।

প্রােটোপ্লাজমের বৈশিষ্ট্য
প্রোটোপ্লাজম অর্ধস্বচ্ছ,বর্ণহীন,জেলি সদৃশ্য অর্ধতরল আঠালো পদার্থ।
এটি দানাদার ও কলয়ডধর্মী।
ইহা কোষস্থ পরিবেশ অনুযায়ী জেলি থেকে তরলে এবং তরল থেকে জেলিতে পরিবর্তিত হতে পারে।
প্রোটোপ্লাজমের আপেক্ষিক গুরুত্ব পানি থেকে বেশি।
উত্তাপ,অ্যাসিড ও অ্যালকোহলের প্রভাবে প্রোটোপ্লাজম জমাট বাঁধে।
রাসায়নিক বৈশিষ্ট্য:
রাসায়নিকভাবে প্রোটোপ্লাজমে জৈব এবং অজৈব পদার্থ আছে।এতে অধিক পরিমাণে পানি আছে।জৈব পদার্থের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আছে বিভিন্ন ধরনের প্রোটিন এরপর আছে কার্বোহাইড্রেড ও লিপিড। এছাড়াও আছে অক্সিজেন, ম্যাগনেসিয়াম,নাইট্রোজেন,কার্বন,কপার,জিঙ্ক,সোডিয়াম,পটাশিয়াম,কেলসিয়াম,সালফার,আয়রন প্রভৃতি।
জৈবিক বৈশিষ্ট্য:
প্রোটোপ্লাজম বিভিন্ন বিভিন্ন ধরনের উত্তেজনায় সাড়া দেয়। খাদ্য তৈরি,খাদ্য হজম,আত্তীকরণ,শ্বসন,বৃদ্ধি,জনন ইত্যাদি সকল মেটাবলিক কার্যকালাপ প্রোটোপ্লাজম করে থাকে। প্রোটোপ্লাজমের জৈবিক বৈশিষ্ট্যই জীবের বৈশিষ্ট্য। অভিস্রবণ প্রক্রিয়ায় প্রোটোপ্লাজম পানি গ্রঽণ ও ত্যাগ করতে পারে। এদের মৃত্যু ঘটে।

এটি অর্ধস্বচ্ছ , বর্ণহীন, জেলিসদৃশ অর্ধতরল আঠালাে পদার্থ। এটি দানাদার ও কলয়েডধর্মী। এটি কোষস্থ পরিবেশ অনুযায়ী জেলি থেকে তরল এবং তরল থেকে জেলিতে রূপান্তরিত হয়। এটি জৈব ও অজৈব পদার্থের সমন্বয়ে গঠিত। সকল মেটাবলিক কার্যকলাপ প্রােটোপ্লাজম করে থাকে।

সাইটোপ্লাজম হচ্ছে কোষের ভেতরে বেশির ভাগ অংশ জুড়ে অবস্থিত স্বচ্ছ, সমসত্ব, জেলি-সদৃশ পদার্থ। সাইটোপ্লাজমের অভ্যন্তরে অবস্থিত কোষের বিভিন্ন জৈবনিক ক্রিয়াকলাপের সাথে সংশ্লিষ্ট সজীব বস্তুসমূহকে একত্রে সাইটোপ্লাজমীয় অঙ্গাণু বলা হয় । সাইটোপ্লাজমের ৮০ শতাংশই পানি এবং সাধারণত বর্ণহীন।

১৮৬২ সালে বিজ্ঞানী রুডলফ ভন কলিকার সর্বপ্রথম সাইটোপ্লাজম শব্দটি ব্যবহার করেন। কোষের অধিকাংশ কার্যাবলি সাইটোপ্লাজমেই সম্পাদিত হয়। সাইটোপ্লাজমে ক্যালসিয়াম আয়নের আসা-যাওয়া বিপাক ক্রিয়ার সংকেত হিসেবে সংঘটিত হয়। উদ্ভিদকোষে কোষগহবর ঘিরে সাইটোপ্লাজমের নড়াচড়াকে সাইটোপ্লাজমিক স্ট্রীমিং বলে।

সাইটোপ্লাজম এর কাজ:
১। বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় বিক্রিয়া বা বিপাক সাইটোপ্লাজমে ঘটে।
২। কোষের গঠন বজায় রাখতে সাহায্য করে।
৩। বিভিন্ন কোষীয় অঙ্গানুর কাজে সমন্বয় সাধন ঘটায়।
৪। প্রোটোজোয়ার গমনে সাহায্য করে। যেমন – অ্যামিবা।

রাইবোজোম জীব কোষে অবস্থিত রাইবোনিউক্লিওপ্রোটিন দ্বারা গঠিত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণা। রাইবোজোম প্রধানত প্রোটিন সংশ্লেষণে সাহায্য করে। প্রোটিনের পলিপটাইড চেইন সংযোজন এই রাইবোজোমে হয়ে থাকে। এছাড়া রাইবোজোম এ কাজে প্রয়োজনীয় উৎসেচক সরবরাহ করে। এই উৎসেচক বা এনজাইমের কাজ হলো প্রাণরাসায়নিক বিক্রিয়ার গতি বাড়িয়ে দেওয়া।

প্রোটোপ্লাজম কখনো স্খির থাকেনা।প্রোটোপ্লাজমের এ গতিময়তাকে চলন বলে।কোষপ্রাচীর যুক্ত প্রোটোপ্লাজম জলস্রোতের মত যে চলন দেখা যায় তাকে আবর্তন বা সাইক্লোসিস বলে।আবর্তন দুই প্রকার হয়ে থাকে।যে চলনে প্রোটোপ্লাজম একটি গহ্বরকে কেন্দ্র করে কোষ প্রাচীরের পাশ দিয়ে নির্দিষ্ট পথে একদিকে ঘুরে তখন তাকে একমুখী আবর্তন বলে।যেমনঃপাতা ঝাঝির কোষ।যে চলনে প্রোটোপ্লাজম কতকগুলো গহ্বরকে কেন্দ্রকে অনিয়মিতভাবে আবর্তন করতে থাকে তখন তাকে বহুমূখী আবর্তন বলে।

কোষ প্রাচীরের ঠিক নিচে সমস্ত প্রোটোপ্লাজমকে ঘিরে একটি সজীব ঝিল্লি আছে।এ ঝিল্লিকে কোষ ঝিল্লি বলে।একে প্লাজামামেমব্রেন,প্লাজমালেমা,সাইটোমেমব্রেন এসব নামেও অভিহিত করা হয়।তবে বর্তমানে অনেকে একে বায়োমেমব্রেন বলতে চান।ঝিল্লিটি স্থানে স্থানে ভাজ বিশিষ্ট হতে পারে।প্রতিটি ভাজকে মাইক্রোভিলাস বলে।কোষাভ্যন্তরট অধিক প্রবিষ্ট মাইক্রোভিলাসকে বলা হয় পিনোসাইটিক ফোস্কা।

আমরা বেচে আছি কারন আমাদের কোষীয় অঙ্গানু গুলো সচল আছে। প্রতিনিয়ত আমাদের রাইবোসম প্রোটিন তৈরি করে যাচ্ছে,প্রতিনিয়ত মাইটোকন্ড্রিয়া শক্তি তৈরি করে যাচ্ছে।প্রতিনিয়ত কোষের যাবতীয় কার্যক্রম গুলো সচল আছে বলেই আমরাও বেচে আছি।

আর আমাদের যাবতীয় কোষীয় অঙ্গানু গুলো ধারন করে প্রটোপ্লাজম।কোষপ্রাচীর এর অভ্যন্তরে যাবতীয় সজীব অঙ্গানু ধারন করে থাকে এই প্রটোপ্লাজম।তাই প্রটোপ্লাজম কে জীবনের ভিত্তি বলা হয়ে থাকে।

আরএই প্রটোপ্লাজম এর ৭০% হলো পানি। তাই বলা হয়ে থাকে পানির অপর নাম জীবন।

সাইটোপ্লাজম এবং প্রোটোপ্লাজমের মধ্যে প্রধান পার্থক্য হ’ল সাইটোপ্লাজমের নিউক্লিয়াস থাকে না তবে প্রোটোপ্লাজমের নিউক্লিয়াস থাকে এর কাঠামো। নিচে পার্থক্য দেখানো হলো-

প্রোটোপ্লাজম ও সাইটোপ্লাজমের মধ্যে পার্থক্যট্য
১। একটি কোষের কোষপর্দার ভিতরে ভ্যাকুওল বাদে সমগ্র অংশ কে প্রোটোপ্লাজম বলে। অন্যদিকে প্রোটোপ্লাজমের ভিতরে নিউক্লিয়াস বাদে সমগ্র অংশ কে সাইটোপ্লাজম বলে।
২। প্রোটোপ্লাজম এর তিনটি অংশ- কোষঝিল্লি, নিউক্লিয়াস ও সাইটোপ্লাজম। অন্যদিকে সাইটোপ্লাজমের দুটি অংশ- সাইটোপ্লাজমীয় অঙ্গাণু ও মাতৃকা।
৩। প্রোটোপ্লাজমে নিউক্লিয়াস থাকায় বংশগতির ধারক ও বাহক। অন্যদিকে সাইটোপ্লাজমের বংশগতির ধারক ও বাহক নয়।
৪। পরিবেশ অনুযায়ী জেলি থেকে তরলে এবং তরল থেকে জেলিতে পরিবর্তিত হতে পারে। অন্যদিকে বস্তু বিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করলে, সাইটোপ্লাজম কোষের সোল-জেল হিসেবে আচরণ করে।
৫। প্রোটোপ্লাজম জীবনের আধার হিসেবে কাজ করে। অন্যদিকে সাইটোপ্লাজম কোষীয় অঙ্গাণুর আধার হিসেবে কাজ করে।

What Is Cytoplasm?
The cytoplasm is a transparent material present between the cell membrane and the nucleus of the eukaryotic cell.

The main components of the cytoplasm are cell organelles, metabolic wastes, proteins, and food reserves. It tends to be semi-fluid and transparent in nature.

The cytoplasm normally surrounds the nucleus and it contains both cytosol and cytoplasmic matrix. This substance helps to differentiate between outer ectoplasm and inner endoplasm.

What Is Protoplasm?
Protoplasm is a jelly-like substance where biological activities take place in a cell. The main constituents of protoplasm are 90% water, salts, proteins, lipids, and carbohydrates.

The main features of protoplasm are selective permeability, elastic, granular, colloidal, and colourless substance.

Cytoplasm Protoplasm
It is a semi-solid material found between the nucleus and cell membrane It is a jelly-like substance that surrounds the cytoplasm, nucleus and cell membrane
Consists of cytosol + cell organelles Consists of cytosol + cell organelles + nucleus
Contain Golgi body, Endoplasmic reticulum, Mitochondria, Ribosomes, Lysosomes Contain cytoplasm and nucleus
Water, metabolic wastes, proteins, food reserves. Proteins, lipids, carbohydrates, nucleic acid and inorganic salts.
The term is still relevant in modern biology The term is considered obsolete by today’s standards
Difference between Cytoplasm and Protoplasm

Difference between Cytoplasm and Protoplasm

Difference between Cytoplasm and Protoplasm


কলা বা টিস্যু
October 01, 2022
কলা বা টিস্যু কাকে বলে ?
যখন কতগুলো কোষ একই উৎস থেকে উৎপত্তি লাভ করে, একই স্থানে থেকে সম্মিলিতভাবে একটি সাধারণ কাজে নিয়োজিত থাকলে ঐ কোষ সমষ্টিকে কলা বা টিস্যু বলে।

যেমনঃ হৃদপেশি, শুধু হৃদপিণ্ড গঠন করে ও সংকোচন প্রসারন এ ঘটায়।

একই উৎস থেকে সৃষ্টি এবং একই কাজ সম্পাদনের জন্য নিবিড়ভাবে অবস্থানকারী কোষগুচ্ছকে কলা বলে।

গঠন ও কাজের ভিত্তিতে প্রাণিদেহে কলাসমূহকে নিম্নোক্তভাগে ভাগ করা যায়। যথা:
  1. আবরনী কলা
  2. যোজক কলা
  3. পেশী কলা
  4. স্নায়ু কলা এবং
  5. জনন কলা
Tissue

কলা কত প্রকার ও কি কি?
কলা প্রধানত দুই প্রকার। যথাঃ
  1. ক) ভাজক কলা।
  2. খ) স্থায়ী কলা।

ক) ভাজক কলা আবার দুই প্রকার। যথাঃ
  1. প্রাইমারী ভাজক কলা।
  2. সেকেন্ডারী ভাজক কলা।

খ) স্থায়ী কলা তিন প্রকার। যথাঃ 
  1. সরল স্থায়ী কলা।
  2. জটিল স্থায়ী কলা।
  3. ক্ষরণকারী স্থায়ী কলা।

সরল স্থায়ী কলা তিন প্রকার। যথাঃ 
  1. প্যারেনকাইমা। 
  2. কোলেনকাইমা।
  3. স্কেরেনকাইমা।

জটিল স্থায়ী কলা দুই প্রকার। যথাঃ 
  1. জাইলেম।
  2. ফ্লোয়েম।

৩. ভাজক কলা কি?
যে কলার কোষগুলো বিভাজনে সক্ষম, তাকে ভাজক কলা বলে।

৪. ভাজক কলার কাজ কি?
  • ক) মূল ও কান্ডের দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি 
  • খ) মূল ও কান্ডে বেড় বৃদ্ধি
৫. স্থায়ী কলা কি?
যে কলার কোষগুলো বিভাজনে অক্ষম, তাকে স্থায়ী কলা বলে।

৬. স্থায়ী কলার কাজ কি?
  • খাদ্য উৎপাদন, 
  • খাদ্য সঞ্চয়, 
  • খাদ্য-পানি-খনিজ লবণ পরিবহন, 
  • বিভিন্ন অঙ্গের দৃঢ়তা প্রদান ইত্যাদি।
৭. পরিবহন টিস্যুতন্ত্র কিসের সমন্বয়ে গঠিত?
জাইলেম ও ফ্লোয়েম।

৮. জাইলেমের কাজ কি?
পানি ও খনিজলবণ মূল হতে পাতায় পরিবহন করা।

৯. ফ্লোয়েমের কাজ কি?
পাতায় তৈরি খাদ্য পরিবহন করা।

আবরণী টিস্যু কাকে বলে?
যে টিস্যু দেহের খোলা অংশ ঢেকে রাখে এবং দেহের ভেতরের আবরণ তৈরি করে তাকে আবরণী টিস্যু (Epithelial Tissue) বলে।

কোষের আকৃতি, অবস্থান, কাজের প্রকৃতি অনুযায়ী এই টিস্যু ৩ প্রকার।
  1. স্কোয়ামাস 
  2. কিউবয়ডাল 
  3. কলামনার।

আবরণী কলার অপর নাম কী?

আবরণী কলা (Epithelial Tissue) হল প্রাণী কলার চার ধরনের মৌলিক কলার একটি এবং সেই সাথে যোজক কলা, পেশী কলা এবং স্নায়বিক কলার অংশ।

যোজক টিস্যু কাকে বলে?

যে টিস্যুতে মাতৃকার পরিমাণ  তুলনামূলক ভাবে বেশি এবং কোষের  সংখ্যা কম তাকে যোজক টিস্যু বলে।
যোজক কলা এক ধরনের আঁশবহুল কলা, যেটি মানবদেহের অন্যান্য অঙ্গ অথবা কলাকে সমর্থন করে, যুক্ত করে অথবা বিচ্ছিন্ন করে। এটি চার ধরনের কোষকলার একটি (অপর তিনটি হচ্ছে আবরণী, পেশি ও স্নায়ুকলা)।

জীববিজ্ঞান_পরীক্ষার সাজেশন
September 23, 2022
জীববিজ্ঞান_পরীক্ষার সাজেশন
প্রথম বর্ষ 
বিষয় কোড- ১০১

১. প্রোটোপ্লাজম কাহাকে বল ? প্রোটোপ্লাজমের ভৌত ও রাসায়নিক গঠন বর্ণনা কর 
২. দৈহিক কোষ ও জনন কোষের মধ্যে পার্থক্য লিখ
৩. চিত্রসহ মাইটোকন্ড্রিয়ার বর্ণনা কর
৪. কলা কি ? বিভিন্ন প্রকার সরল কলার বর্ণনা কর
৫. মাইটোকন্ড্রিয়া ও প্লাস্টিডের মধ্যে পাঁচটি পার্থক্য লিখ
৬. যোজক কলা কি ? উহার কাজ ও বৈশিষ্ট্যসমূহ লিখ
৭. চিত্রসহ ছোলাবীজের গঠন বর্ণনা কর
৮. ব্যাকটেরিয়া কী ? ব্যাকটেরিয়ার আকৃতিগত শ্রেণিবিন্যাস কর
৯. ব্যাকটেরিয়া উদ্ভিত না প্রাণী ? কারণ দর্শাও
১০. ব্যাকটেরিয়া অর্থনৈতিক গুরূত্ব লিখ
১১. চিত্রসহ অ্যামিবার ব্যাখ্যা কর
১২. শ্বসন বলিতে কী বুঝ ? কুনোব্যাঙের ফুসফুসীয় শ্বসনের বর্ণনা দাও।
১৩. ব্যাঙের স্ত্রী-জননতন্ত্রের চিহ্নিত চিত্র অংকন কর
১৪. কুনোব্যাঙের রেনাল পোর্টালতন্ত্রের বর্ণনা দাও
১৫. নেফ্রন কি ? উহার কাজ বর্ণনা কর
১৬. জীববিজ্ঞান(Biology)-কাহাকে বলে ?
১৭. জীববিজ্ঞানের মূল বিষয়গুলো কী কী?
১৮. জীববিজ্ঞানের শাখাসমূহ কী কী?
১৯. জীববিজ্ঞান পাঠের প্রয়োজনিয়তা
২০. জীব ও জড়ের মধ্যে পার্থক্য লিখ
২১. উভচর প্রাণীর চারটি বৈশিষ্ট্য লিখ


সংক্ষেপে উওর দাওঃ
  1. ছত্রাক
  2. অনুচক্রিকা
  3. মাইটোসিস
  4. খাদ্য গহবর
  5. ভাজক কলা
  6. ক্রোমজোম
  7. আইলেটস অব ল্যাঙ্গারহ্যান্স
  8. ডরসাল ধমনী
  9. সরোসিস
Biology


জীব বিদ্যাঃ
  • জীবনের সংজ্ঞা। 
  • প্রোটোপ্লাজমের বর্ণনা। 
  • জীব বিজ্ঞান এবং এর শাখা সমূহ। 
  • জীবের বৈশিষ্ট্য। 
  • জীব ও জড়ের মধ্যে পার্থক্য। 
  • উদ্ভিদ ও প্রাণীর মধ্যে পার্থক্য।

উদ্ভিদ কোষঃ
  • আদর্শ উদ্ভিদ কোষের অংশ সমূহ ও তাদের কার্যাবলী। 
  • কোষের বিভাজন (মাইটোসিক ও মেডাসিক)। 
  • কলা সমূহের প্রাথমিক ধারণা এবং উদ্ভিদ কোষ কলা টিস্যু সিসটেম।

পুষ্প বিন্যাস, ফুল, ফল ও বীজঃ
  • পুষ্প বিন্যাস (রেসিমোর্স ও মাইমোজ টাইপ)। 
  • একটি আদর্শ ফুলের বিভিন্ন অংশ এবং তাদের কার্যাবলী। 
  • পরাগায়ন ও গর্ভধারণ। 
  • একটি আদর্শ ফলের অংশ সমূহ এবং বড় আকারের ফল সমূহ। 
  • বিভিন্ন রকমের ফল। 
  • একটি আদর্শ দ্বিবীজপত্রী ও একবীজপত্রী বীজের অংশ। 
  • বীজের অংকুরোদমের প্রয়োজনীয় কার্যাবলী।

প্রোটোফাইটঃ
  • ব্যাকটেরিয়া সম্বন্ধে প্রাথমিক ধারণ। 
  • ভাইরাস সম্বন্ধে প্রাথমিক ধারণা।

ছত্রাকঃ
  • পেরিনসিলিয়াম নোটেটাইম এর বর্ণনা।

উদ্ভিদ বিদ্যাঃ
  • সোলানেসী পরিবার (ডাইকট) বর্ণনা। 
  • লিলিয়েসী পরিবার (মানকাট) বর্ণনা।

উদ্ভিদের শরীর তত্ত্বঃ
  • সালেক সংশ্লেষণ সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা। 
  • শ্বাস-প্রশ্বাস সম্বন্ধে প্রাথমিক ধারণা।

ব্যবহারিকঃ
  • পিয়াজের খোলস হতে উদ্ভিদ কোষ পরীক্ষণ ও মূল্যের ব্যবচ্ছেদ পরীক্ষণ।
  • অনন্ত কমলালেবু থেকে পেনিমিলিয়াম নোটেটামেন পরীক্ষণ।
  • ধুথুরা ফুলের পরীক্ষণ (সোলানেসী পরিবার)।
  • ফাইলেরিয়া পর্যন্ত প্রাণী রাজ্যের শ্রেণী বিভাগ (দলীয় বৈশিষ্ট্য উদাহরণসহ)।
  • এ্যামিবারের জীবনচক্র।
  • ব্যাঙের জীবনচক্র।




জীববিজ্ঞান(Biology)-প্রথম অধ্যায়
September 16, 2022
জীববিজ্ঞান(Biology)-কাহাকে বলে ?
জীবের জীবন ও গুনাগুন নিয়ে যে শাখায় আলোচনা করা হয় তাকে জীববিজ্ঞান বলে।

Biology শব্দটি - Bios (জীবন) ও Logos (জ্ঞান) দুটি শব্দের সমন্বয়ে গঠিত ।

জীববিজ্ঞান, বিজ্ঞানের যে শাখায় জীবের গঠন, জৈবনিক ক্রিয়া এবং জীবন ধারণ সম্পর্কে সম্যক বৈজ্ঞানিক জ্ঞান পাওয়া যায় তাকেই জীববিজ্ঞান বলে ।

জীববিজ্ঞান বিজ্ঞানের একটি শাখা যেখানে জীব ও জীবন সংক্রান্ত গবেষণা করা হয়। তাদের গঠন, বৃদ্ধি, বিবর্তন, শ্রেণীবিন্যাসবিদ্যার আলোচনাও এর অন্তর্ভুক্ত। আধুনিক জীববিজ্ঞান খুব বিস্তৃত একটি ক্ষেত্র, যেটির অনেক শাখা-উপশাখা আছে। 

আধুনিক জীববিজ্ঞান বলে, কোষ হচ্ছে জীবনের মূল একক, আর জিন হলো বংশগতিবিদ্যার মূল একক। আর বিবর্তন হলো একমাত্র প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে নতুন প্রজাতির জীব সৃষ্টি হয়।

বর্তমানে জীববিজ্ঞান আণবিক, কোষীয়, জীবদেহ ও জীবসংগ্রহ - এই চারটি মূল স্তরক্রমে বিভক্ত।

Biology is life

জীববিজ্ঞান এর জনক কে?
উওরঃ- প্রীক দার্শনিক এরিস্টটল। তাঁহাকে জীববিজ্ঞানের জনক বলা হইলেও তিনি কিন্তু Biology শব্দতি প্রবর্তন করেন নাই। তাঁহার মৃত্যুর ২০০০ বৎসর পর ল্যামার্ক নামের একজন ফরাসী বিজ্ঞানী Biology শব্দটি প্রবর্তন করেন।

প্রাচীনকালে জীববিজ্ঞান।
প্রাচীন মানুষ তার জীবন সংগ্রামে টিকে থাকার জন্য গাছপালা ও প্রাণীদের সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করত৷ জীববিজ্ঞানের জ্ঞানের প্রথম ধারণা প্রাচীন মানুষের মাথায় আসে ১০০০০ বছর আগে। মানুষ প্রথম চাষাবাদ করা শুরু করে এবং পশুপাখিকে পোষ মানানো শুরু করে। সেখান থেকেই মূলত শুরু।

জীববিজ্ঞানের ইতিহাস।
জীববিজ্ঞানের ইতিহাস হলো প্রাচীন কাল থেকে ব‍র্তমান সময় পর্যন্ত এই জগতের জীবিত সকল কিছু সম্পর্কিত জ্ঞান৷ আলাদা ভাবে নির্দিষ্ট ক্ষেত্র হিসেবে জীববিজ্ঞানের ধারণা আসে প্রথম প্রায় ১৯শ শতাব্দীতে৷ প্রাচীন কালে জীববিজ্ঞান ছিল মূলত ঔষধের ব্যবহার ও জীব সম্পর্কিত সামগ্রিক জ্ঞান৷ অ্যারিস্টটলকে জীববিজ্ঞানের জনক বলা হয়৷

জীববিজ্ঞান শব্দটির ব্যুৎপত্তি।
জীববিজ্ঞানের প্রাশ্চাত্য প্রতিশব্দ Biology যা দুটি গ্রীক শব্দ Bios যার অর্থ জীবন এবং Logos যার অর্থ জ্ঞান থেকে এসেছে৷ প্রথম ১৮০০ সালে জার্মানীতে ব্যবহৃত হয় এবং পরে ফরাসী প্রকৃ্তিবিদ জঁ-বাতিস্ত দ্য ল্যামার্ক জীবিত বস্তু সংক্রান্ত অনেকগুলি শাস্ত্রের ধারক নাম হিসেবে এতি প্রকাশ করেন পরে ইংরেজ প্রাণীবিজ্ঞানী ও শিক্ষাবিদ থমাস হেনরি হাক্সলি জীববিজ্ঞানকে একটি একত্রিকারক শাস্ত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন৷

জীববিজ্ঞানের মূল বিষয়গুলো কী কী?
  1. প্রতিটি জীবের কোষ আছে অথবা কোষকে ব্যবহার করে জীবনকে প্রকাশিত করতে হয়। (কোষতত্ত্ব)
  2. প্রতিটি জীবন DNA (Deoxyribo Nucleic Acid) তে তাদের প্রোটিন তৈরির সংকেত লুকিয়ে রাখে। এই DNA সে পরবর্তী প্রজন্মে ছড়িয়ে দেয়। (বংশগতি)
  3. যৌন প্রজনন, মিউটেশন ও DNA আদান প্রদান করতে গিয়ে জীবের বৈচিত্র্য তৈরি হয়। এভাবে জীবের ক্রমবিকাশ ঘটে। (বিবর্তন)
  4. জীব বাহ্যিক শক্তিকে কাজে লাগিয়ে নিজস্ব সিস্টেমকে বাহ্যিক বিশৃঙ্খলার মধ্যে টিকিয়ে রাখে। (শক্তি-সঞ্চয়নতত্ত্ব)
 কোষতত্ত্ব (Cell Theory)
কোষতত্ত্ব (Cell Theory) - ১৮৩৮ খ্রিস্টাব্দে কোষ সম্পর্কে জার্মান উদ্ভিদবিজ্ঞানী জ্যাকব স্লেইডেন কোষকে উদ্ভিদদেহের একক বলে ঘোষণা করেন। 

পরের বছর প্রাণীবিজ্ঞানী থিওডোর সোয়ান প্রাণিদেহের এককটিও যে কোষ তা প্রমাণ করেন। 
উভ​য়ের মিলিত প্রচেষ্টায় ১৮৩৯ খ্রিস্টাব্দে কোষতত্ত্ব প্রকাশিত হ​য়।

পরবর্তীকালে রুডলফ ভিরকাউ (Rudolf Virchow) (১৮৫৫ খ্রিস্টাব্দে)এই কোষতত্ত্বে সংযোজন করেন যে ,কোষ বিভাজিত হ​য় এবং নতুন কোষ উৎপন্ন হয় অস্তিত্বমান আর একটি কোষ থেকে।

  • কোষ হলো জীবন্ত সত্তার গাঠনিক, শারীরিক ও সাংগাঠনিক একক।
  • কোষ হলো জীবনের মৌলিক একক।
  • কোষ বংশগতির একক।
  • সকল জীব এক বা একাধিক কোষ দ্বারা গঠিত এবং পূর্বসৃষ্ট কোষ থেকেই নতুন কোষের সৃষ্টি হয়।

② বংশগতি
বংশগত বা বংশগতভাবে পিতা-মাতার বৈশিষ্ট্য সন্তানসন্ততিতে অতিক্রম হয় অর্থাৎ সন্তানের কোষগুলি তাদের বৈশিষ্ট্য এবং বৈশিষ্ট্যগুলি ওরফে জিনগত তথ্যগুলি তাদের মা এবং বাবার কাছ থেকে পেয়ে থাকে।

সহজ ভাষায়, বংশগতি বলতে পিতামাতার কাছ থেকে তাদের সন্তানের মধ্যে জিনের মাধ্যমে বৈশিষ্ট্য অতিক্রম করাকেই বুঝায়।

বংশগতি মূলত নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য এবং জিনগত বৈশিষ্ট্যগুলি এক প্রজন্ম থেকে অন্য প্রজন্মের দিকে চলে যাচ্ছে। জিনগুলি কোনও ব্যক্তির চেহারা কেমন হবে তা নির্ধারণ করে, তার বুদ্ধি, চুলের রঙ ইত্যাদি। সুতরাং, সংক্ষেপে বলতে গেলে, আপনার রক্তরেখার মধ্য দিয়ে যে পারিবারিক বৈশিষ্ট্যগুলি চলে তা বংশগতি হিসাবে পরিচিত।

বংশগতি জিন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। বংশগতি ভাগ্য, এক প্রকার পূর্বনির্ধারিত। আধুনিক চিকিৎসা অনুসন্ধান ফলাফল প্রমাণ করেছে যে কিছু রোগ বংশগতভাবে উপস্থিত।

শিশুরা পিতামাতার কাছ থেকে ডিওকাইরিবোনুক্লিক অ্যাসিড (ডিএনএ) সমন্বিত জিনগুলির উত্তরাধিকারী হয় এবং পিতামাতার কিছু বৈশৈষ্ট্য সন্তানসন্তিতে থাকতে পারে, যেমন: নীল, বাদামী চোখ ইত্যাদি।

বংশগতির কিছু উদাহরণ:
বংশগতি চোখের রঙ, ত্বকের রঙ, ফ্রিকলস, ডান বা বাম হাত, রক্তের ধরণ এবং উচ্চতার মতো বৈশিষ্ট্যগুলি নিয়ন্ত্রণ করে। মানুষের মধ্যে কিছু বংশগত রোগ যেমন: বর্ণভ্রষ্টতা, দূরদৃষ্টি, দূরদৃষ্টি ইত্যাদি।

বংশগতি বিদ্যা কাকে বলে?
জীববিজ্ঞানের যে শাখায় বংশগতি সম্বন্ধে বিশদভাবে আলোচনা করা হয় তাকেই বংশগতি বিদ্যা বলে।
জেনেটিক্স কাকে বলে ? উঃ বংশগতি সংক্রান্ত বিদ‍্যাকে বলে।
বংশগতির সূত্রাবলী আবিষ্কার করেন কোন বিজ্ঞানী ? উঃ মেন্ডেল
জিন কথাটি ব্যবহার করেন সর্বপ্রথম কোন বিজ্ঞানী ? উঃ গ্রেগর জোহান মেন্ডেল
বংশগতির জনক কাকে বলা হয় ? উঃ মেন্ডেল
জীবদেহের প্রধান জেনেটিক পদার্থ কোনটি ? উঃ DNA
মানুষের দেহকোষে ক্রোমোজোম সংখ্যা কয়টি ? উঃ 46টি ( 23 জোড়া )
জীবের বাহ্যিক প্রকাশিত বৈশিষ্ট্যকে কি বলা হয়ে থাকে ? উঃ ফিনোটাইপ
মানুষের শুক্রাণুতে অবস্থিত কোন সেক্স ক্রোমোজোম থাকে ? উঃ XY
যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পিতা-মাতার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য সন্তান-সন্তনিতে সঞ্চারিত হয় তাকে কি বলা হয় ? উঃ বংশগতি
বংশগতির একক কি ? উঃ জিন 
জিন কী? (What is Gene) ? উঃ জীবের সব দৃশ্য এবং অদৃশ্যমান লক্ষণ বা বৈশিষ্ট্য নিয়ন্ত্রণকারী এককের নাম জিন। 
জিনের অবস্থান (location) । উঃ জীবের ক্রোমোজোমে।
জিন কত প্রকার। উঃ দুই প্রকার যথাঃ ১.  প্রকট জিন ২. প্রচ্ছন্ন জিন 

জীবের বংশগতি ও বিবর্তন (Heredity and evolution of human):
পিতামাতার বৈশিষ্ট্যগুলো বংশানুক্রমে সন্তান সন্ততির দেহে সঞ্চারিত হওয়ার প্রক্রিয়াই হলো বংশগতি। 
  • বংশগতিবস্তু (Hereditary objects)
  • ক্রোমোজোম (chromosome)
  • ডিএনএ (DNA)
  • আরএনএ (RNA)
  • জিন (gene)
ক্রোমোজোম কাকে বলে? (What is Chromosome?): 
১৮৭৫ সালে বিজ্ঞানী Strasbuger প্রথম ক্রোমোজোম আবিষ্কার করেন। 
ক্রোমোজোম দৈর্ঘ্য →3.5 থেকে 30.00 মাইক্রন (micron) 
ক্রোমোজোম প্রস্থ  →0.2 থেকে 2.00 মাইক্রন (micron)
মানবদেহে ২৩ জোড়া ক্রোমোজোম থাকে। এদের মধ্যে ২২ জোড়া অটোসোম (autosome)।  ১ জোড়া সেক্স ক্রোমোজোম (sex chromosome)।

ক্রোমোজমের কাজ (Work): 
বংশগতির ধারক ও বাহক হিসাবে কাজ করে। 
বংশগতির ভৌত ভিত্তি হিসাবে কাজ করে। 
মানুষের চুলের রং, চামড়ার রং, চুলের প্রকৃতি, চোখের রং, চামড়ার গঠন নির্ধারণ করে।

ডিএনএ কী? (What is DNA?)
ক্রোমোজোমের প্রধান উপাদান হলো ডিঅক্সিরাইবোনিউক্লিক এসিড (deoxyribonucleic acid)। 
DNA দুই সূত্র বিশিষ্ট পলিনিউক্লিওটাইডের (polynucleotide) সর্পিলাকার গঠন (spiral structure)। 
একটি সূত্র অন্যটির পরিপূরক। 

ডিএনএর কাজ (Work): 
DNA ক্রোমোজোমের প্রধান উপাদান এবং বংশগতির রাসায়নিক ভিত্তি। 
DNA জীবের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের প্রকৃত ধারক এবং বাহক, যা জীবের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য সরাসরি বহন করে মাতা-পিতা থেকে তাদের বংশধরে নিয়ে যায়।

লোকাস কী? (What is Locus)?
ক্রোমোজোমের যে স্থানে জিন অবস্থান করে তাকে লোকাস বলে বা আরো স্পষ্টভাবে বললে ক্রোমোজোমের যে নির্দিষ্ট স্থানে যে নির্দিষ্ট জিন পাওয়া যায় ,ঐ স্থানটি উক্ত জিনটির লোকাস।

মানুষের লিঙ্গ নির্ধারণ (Determining human sex)
মানবদেহে ক্রোমোজোম সংখ্যা ২৩ জোড়া। 
২২ জোড়া হচ্ছে অটোসোম (autosome) এবং ১ জোড়া সেক্স ক্রোমোজোম (sex chromosome)।

44 অটোসোম +  XY→ ছেলে
44 অটোসোম +  XX→ মেয়ে

  • নারীদের ডিপ্লয়েড কোষে (diploid cell) ২ টি সেক্স ক্রোমোজোমই x ক্রোমোজোম অর্থাৎ xx। কিন্তু পুরুষদের ক্ষেত্রে দুটির মধ্যে একটি x এবং অপরটি y ক্রোমোজোম অর্থাৎ xy। 
  • নারীদের ডিম্বাশয়ে ডিম্বাণু তৈরি করার সময় যখন মিয়োসিস বিভাজন ঘটে, তখন প্রতিটি ডিম্বাণু অন্যান্য ক্রোমোজোমের সাথে একটি করে x ক্রোমোজোম লাভ করে।  
  • অন্যদিকে পুরুষে শুক্রাণু সৃষ্টির সময় অর্ধেক সংখ্যক শুক্রাণু একটি করে x এবং বাকি অর্ধেক শুক্রাণু একটি করে y ক্রোমোজোম লাভ করে।  
  • ডিম্বাণু পুরুষের x ও y বহনকারী যেকোনো একটি শুক্রাণু দিয়ে নিষিক্ত হতে পারে।  
  • গর্ভধারণকালে কোন ধরনের শুক্রাণু মাতার x বহনকারী ডিম্বাণুর সাথে মিলিত হয় তার উপর নির্ভর করে ভবিষ্যৎ সন্তানের লিঙ্গ।

জীববিজ্ঞানের শাখা।
জীববিজ্ঞানকে দুইটি শাখাতে ভাগ করা যায় যথাঃ
  • উদ্ভিদবিজ্ঞান (Botany)
  • প্রাণিবিজ্ঞান (Zoology)
জীবের কোন দিক আলোচনা করা হয়েছে তার উপর ভিত্তি করে জীববিজ্ঞানকে আবার দুইটি ভাগে ভাগ করা যায় যথাঃ
  • ভৌত জীববিজ্ঞান (Physical Biology)
  • ফলিত জীববিজ্ঞান (Applied Biology)

ভৌত জীববিজ্ঞানঃ (Physical Biology)
ভৌত জীববিজ্ঞান শাখায় তত্ত্বীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়।

জীববিজ্ঞানের যে শাখায়, জীবের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য, রীতি, আজরণ, অঙ্গ ট্যাক্সোনমি ইত্যাদি তাত্ত্বিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয় তাকে ভৌত জীববিজ্ঞান বলে। যেমন অঙ্গসংস্থান বিদ্যা। এখানে শুধু জীবের বিভিন্ন অঙ্গের তাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য উৎপত্তি ও বিবর্তন গঠন ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করা হয়। ভৌত জীববিজ্ঞান জীবের অঙ্গসংস্থান, ট্যাক্সোনমি, শারীরবিদ্যা, হিস্টোলজি, ভ্রুনবিদ্যা, কোষবিদ্যা, বংশগতিবিদ্যা, বিবর্তন, বাস্তুবিদ্যা, এন্ডোক্রোইনোলজি, জীবভূগোল, ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করে।

নিম্নে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য শাখার কথা উল্লেখ করা হলো –

১। অঙ্গসংস্থান (Morphology) : এখানে জীবের সার্বিক অঙ্গসংস্থানিক বা দৈহিক গঠন বর্ণনা করা হয়  দেশের বাইরের বর্ণনার বিষয়কে বহিরঙ্গ সংস্থান এবং দেহের ভিতরের বর্ণনার অন্ত অঙ্গসংস্থান বলা হয়।
২। শ্রেণিবিন্যাসবিদ্যা বা  ট্যাক্সোনমি (Taxonomy) :  এখানে জীবের শ্রেণীবিন্যাস ও তার রীতিনীতি গুলো আলোচনা করা হয়।
৩। শরীর বিদ্যা (Physiology) : জীবদেহের নানা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের জৈব-রাসায়নিক ,কার্যক্রম যেমন সরণ সালোকসংশ্লেষণ ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করা হয়।
৪। হিস্টলজি (Histology) : জীব দেহের টিস্যুসমূহকে গঠন বিন্যাস এর সম্পর্কে আলোচনা করা হয়।
৫। ভ্রূণবিদ্যা (Embroyology ) : জনন কোষের উৎপত্তি জনন কোষের উৎপত্তি  নিষিক্ত জাইগোট থেকে   ভ্রূনের সৃষ্টি ,গঠন বিকাশ ,প্রভৃতির নিয়ে শাখায় আলোচনা করা হয়েছে।
৬। কোষবিদ্যা (Cytology) : জীবদেহের গঠন কার্যাবলী ও বিভাজন সম্পর্কে আলোচনা করা হয়।
৭। বংশগতিবিদ্যা বা জেনেটিক্স (Genetics) :জিন ও জীবের বংশগতি ধারা সম্পর্কে এর শাখায় আলোচনা করা হয়।
৮।  বিবর্তন বিদ্যা (Evolution) : পৃথিবীতে প্রাণের বিকাশ ও জীবের  বিবর্তন এবং ক্রমবিকাশের  তথ্যসমূহের আলোচনা করা হয় ।
৯। বাস্তুবিদ্যা (Ecology ) : শাখায় প্রাকৃতিক পরিবেশের সাথে জীবের আন্তঃসম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করা হয়।
১০।এন্ডোক্রাইনোলজি (Endrocrinology) :  জীবদেহে আলোচনা করা হয় এর শাখায়।
১১।  জীবভূগোল (Biogeography) : পৃথিবীর বিভিন্ন  ভৌগোলিক সীমারেখা জীবের বিস্তৃতি ও অভিযোজন সম্পর্কে  আলোচনা করা হয়।

ফলিত জীববিজ্ঞানঃ (Applied Biology)
জীববিজ্ঞানের যে শাখায় জীব সংশ্লিষ্ট প্রায়োগিক বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হয় সেই শাখাটিকে ফলিত জীববিজ্ঞান বলে। 

জীববিজ্ঞানের যে শাখায় জীব সংশ্লিষ্ট প্রায়োগিক বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হয় সেই শাখাটিকে ফলিত জীববিজ্ঞান বলে । অথাৎ জীববিজ্ঞানের যে শাখায় জীবের নানা তত্ত্বের প্রয়োগ, জীবকে কাজে ব্যবহার, জীবজ উপাদান সংগ্রহ, চাষ, পরিচর্যা ও উৎপাদন ও ব্যবহার নিয়ে আলোচনা করে থাকে তাকে ফলিত জীববিজ্ঞান বলে। যেমনঃ চিকিৎসাবিজ্ঞান, কৃষিবিজ্ঞান, জীবপ্রযুক্তি ইত্যাদি ।

নিম্নে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য শাখার কথা উল্লেখ করা হলো –

১। জীবাশ্মবিজ্ঞান (Palaeontology ) প্রাগৈতিহাসিক জীব এর বিবরণ এবং জীবাশ্ম সম্পর্কিত বিজ্ঞান সম্পর্কে আলোচনা করা হয়।
২। জীবপরিসংখ্যানবিদ্যা ( Biostatistics ) জীবপরিসংখ্যান বিষয়ক বিজ্ঞান সম্পর্কে আলোচনা করা হয়।
৩।পরজীববিদ্যা (Parasitology):  পরজীবিতা পরজীবী জীবের জীবন প্রণালী এবং রোগ সম্পর্কে আলোচনা করা হয় এই শাখায়।
৪। মৎস্যবিজ্ঞান (Fisheries):  মাছ মাছ উৎপাদন মৎস্য সম্পদ ব্যবস্থাপনা ও সংরক্ষণ সম্পর্কে আলোচনা করা হয়।
৫। কীটতত্ত্ব( Entomology) : উপকারিতা-অপকারিতা ইত্যাদি সম্পর্কিত বিজ্ঞান।
৬। অণুজীববিজ্ঞান  (Microbiology) :ভাইরাস ব্যাকটেরিয়া আণুবীক্ষণিক ছত্রাক এবং অন্যান্য অনুজীব  সম্পর্কিত বিজ্ঞান।
৭। কৃষিবিজ্ঞান (Agriculture) : কৃষি বিষয়ক বিজ্ঞান।
৮। চিকিৎসা বিজ্ঞান ( Medical Science ): মানবদেহে রোগ চিকিৎসা ইত্যাদি সম্পর্কিত বিজ্ঞান
৯।জিন প্রযুক্তি (Genetic ):প্রযুক্তি ও এর ব্যবহার সম্পর্কিত বিজ্ঞান।
১০। প্রাণরসায়ন ( Biochemistry): জীবের প্রাণরাসায়নিক কার্যপ্রণালী রোগ ইত্যাদি সম্পর্কিত বিজ্ঞান।
১১। জিন প্রযুক্তি ( Genetic Engineering ) :প্রযুক্তি ও এর ব্যবহার সম্পর্কিত বিজ্ঞান।
১২।পরিবেশ বিজ্ঞান ( Environmental Science): পরিবেশ সম্পর্কিত বিজ্ঞান।
১৩। সামুদ্রিক জীববিজ্ঞান  (Oceanography):  সামুদ্রিক জীব সম্পর্কিত বিজ্ঞান।
১৪। বনবিজ্ঞান (Forestry): বন বন সম্পদ ব্যবস্থাপনা, এবং সংরক্ষণ সম্পর্কিত বিজ্ঞান।
১৫ । ফার্মেসি (Pharmacy):  ওষুধ শিল্প ও প্রযুক্তি বিষয়ক বিজ্ঞান।
১৬। জীবপ্রযুক্তি (Biotechnology): মানব এবং পরিবেশের কল্যাণের জীব ব্যবহারের প্রযুক্তি সম্পর্কিত বিজ্ঞান।
১৭। বন্যপ্রাণীবিদ্যা ( Wildlife ) :বন্যপ্রাণী বিষয়ক বিজ্ঞান।
১৮। বায়োইনফরমেটিক্স (Bioinformation ): কম্পিউটার, প্রযুক্তি নির্ভর জীব বিজ্ঞান ভিত্তিক তথ্য যেমন ক্যান্সার  বিশ্লেষণ বিষয়ক বিজ্ঞান।

জীববিজ্ঞান পাঠের প্রয়োজনিয়তাঃ
জীববিজ্ঞানের প্রাথমিক কথাই হল জীবন ।বিজ্ঞানের অন্য কোন বিষয় জানার আগে নিজেকে রক্ষার তাগিদে প্রানী ও উদ্ভিদ সম্পর্কে মানুষের জ্ঞান অর্জন করতে হয় ।নিম্নে বিশেষ কয়েকটি ক্ষেত্রে জীববিজ্ঞান পাঠের প্রয়োজনিয়তা আলোচনা করা হলঃ

🌱। অন্যান্য জীবের ন্যায় মানুষ ও জীববিজ্ঞানের আলোচ্য বিষয় ।তাই নিজের সম্পর্কে জানতে হলে জীববিজ্ঞান পাঠ করতে হবে।

🌱।জীববিজ্ঞান পাঠে জেনেটিক ও বংশধারার বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জ্ঞানলাভ করা যায়। এই জ্ঞানের সাহায্যেই উদ্ভিদ প্রজননবিদরা উন্নত জা্তের শস্য উদ্ভাবন করেছেন। নতুন জাতের ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য এবং কৃষিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের জন্য আমাদের জীববিজ্ঞান পাঠ করা প্রয়োজন।

🌱।জীববিজ্ঞানের ফলিত শাখা কৃষিবিজ্ঞান ও প্রাণী প্রজননের মাধমে গো সম্পদ উন্নয়ন ও উন্নত জাতের গবাদি পশু উদ্ভাবন সম্ভব হয়েছে। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার সহিত খাদ্যউতপাদন ও পশু সম্পদের উন্নয়নের লক্ষ্যে জীববিজ্ঞানের জ্ঞান থাকা একান্ত প্রয়োজন। 

🌱।উদ্ভিদ জগত হতে আমাদের নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রী যেমন বন হতে কাষ্ঠ কাগজ তৈরির উপাদান ,কাপড় তৈরির জন্য তুলা ,বন হতে মধু ,মোম ,প্রাণী জগত হতে পাই বিভিন্ন প্রানীর চর্বি ও তৈল , রেশম প্রভৃতি।জীববিজ্ঞান পাঠে এই সকলের উন্নতি সম্পর্কে আমরা জ্ঞান লাভ করতে পারি।

🌱। জীববিজ্ঞানের জ্ঞানের সাহায্যে চিকিৎসা বিদ্যায় ব্যবহৃত বিভিন্ন ওষধপত্র উদ্ভিদ প্রাণী জগত হতে আহরণ সম্ভবপর হয়েছে ।ইহা ছাড়া ছত্রাক জাতীয় উদ্ভিদের দেহ হতে পেনিসিলিন , স্টেপ্টোমাইসিন ,ক্লোরোমাইসিটিন প্রভৃতি ওষধপত্র আবিষ্কার সম্ভবপর হয়েছে। জীববিজ্ঞানের জ্ঞানের দ্বারাই শারীরবিদ্যা পাঠের মাধ্যমে চিকিৎসা শাস্ত্রের প্রয়োজনীয় অধ্যায় শল্যবিদ্যা সম্ভব হয়েছে। 

🌱। জীবজগত সম্পর্কে মানুষকে ক্বতহলি করার প্রয়াসে ,জীববিজ্ঞানের উৎকর্ষ সাধনে ,প্রকৃতির ভারসাম্য বজায় রাখতে ,ফসলের প্রাচুর্যে দেশকে ভরিয়া তোলার জন্য, পরমাণু লাভের মানসে ,মানব জীবন সুখময় করার লক্ষে জীববিজ্ঞান পাঠ করা ও জ্ঞান লাভ করা একান্তই প্রয়োজন।


ভৌত জীববিজ্ঞান ও ফলিত জীববিজ্ঞানের মধ্যে পার্থক্যঃ

১। জীববিজ্ঞানের যে শাখায় তত্ত্বীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয় তাকে ভৌত জীববিজ্ঞান বলে । যেমনঃ শরীরবিদ্যা, ভ্রূণবিদ্যা, কোষবিদ্যা ইত্যাদি । অন্যদিকে জীববিজ্ঞান’র যে শাখায় জীব সংশ্লিষ্ট প্রায়োগিক বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হয় সেই শাখাটিকে ফলিত জীববিজ্ঞান বলে । যেমনঃ চিকিৎসাবিজ্ঞান, কৃষিবিজ্ঞান, জীবপ্রযুক্তি ইত্যাদি ।

২। ভৌত জীববিজ্ঞানে তত্ত্বীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়। অন্যদিকে ফলিত জীববিজ্ঞানে জীব সংশ্লিষ্ট প্রায়োগিক বিষয়সমূহ নিয়ে আলোচনা করা হয়।

৩। ভৌত জীববিজ্ঞানে জীবদেহের অঙ্গপ্রত্যঙ্গের জৈব রাসায়নিক কার্যাদি যেমন- শ্বসন, রেচন ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করা হয়। অন্যদিকে ফলিত জীববিজ্ঞানে রোগ, চিকিৎসা ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করা হয়।

৪। জিন ও জীবের বংশগতি ধারা ভৌত জীববিজ্ঞানে আলোচ্য বিষয়। অন্যদিকে জিনপ্রযুক্তি ও এর ব্যবহার ফলিত জীববিজ্ঞানে আলোচ্য বিষয়।

৫। ভৌত জীববিজ্ঞান জীবের অঙ্গসংস্থান, ট্যাক্সোনমি, শারীরবিদ্যা, হিস্টোলজি, ভ্রুনবিদ্যা, কোষবিদ্যা, বংশগতিবিদ্যা ,বিবর্তন,বাস্তুবিদ্যা, এন্ডোক্রোইনোলজি,জীবভূগোল, ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করে। অন্যদিকে জীবের নানা তত্ত্বের প্রয়োগ, জীবকে কাজে ব্যবহার, জীবজ উপাদান সংগ্রহ, চাষ, পরিচর্যা ও উৎপাদন ও ব্যবহার নিয়ে আলোচনা করে থাকে তাকে ফলিত জীববিজ্ঞান।

জীবজগৎঃ
ক্যারোলাস লিনিয়াস এর সময়কাল থেকে শুরু করে বিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত জীবজগতকে উদ্ভিদজগৎ এবং প্রাণীজগৎ হিসেবে বিবেচনা করে দুটি রাজ্যে(Kingdom) শ্রেণীবিন্যাস করা হতো। বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রায় বর্তমানে কোষের DNA এবং RNA- এর প্রকারভেদ, জীবদেহে কোষের বৈশিষ্ট্য, কোষের সংখ্যা ও খাদ্যাভ্যাসের তথ্য-উপাত্তের উপর জীবজগতের পাঁচটি রাজ্যের  ভিত্তি করে আর.এইচ.হুইটেকার (R.H. Whittaker) 1969 সালে জীবজগতকে পাঁচটি রাজ্য বা ফাইভ কিংডম এ ভাগ করার প্রস্তাব করেন।


Monera__মনেরাঃ
  • উদাহরণ- রাইজোবিয়াম, নিউমোকক্কাস।
  • কোষের প্রকৃতি ও সংখ্যা- এককোষী
  • নিউক্লিয়াসের গঠন- ক্রোমোটিন বস্তু থাকে। নিউক্লিওলাস ও নিউক্লিয়ার পর্দা নেই।
  • সাইটোপ্লাজমীয় অঙ্গানুসমূহ- প্লাস্টিড, মাইটোকন্ড্রিয়া, এন্ডোপ্লাজমিক জালিকা ইত্যাদি নেই, কিন্তু রাইবোজোম আছে।
  • কোষ বিভাজন- দ্বিবিভাজন প্রক্রিয়ায়।
  • খাদ্যাভ্যাস- শোষণ, সালোকসংশ্লেষণ পদ্ধতি।
  • জনন পদ্ধতি- যৌন জনন।
  • ভ্রুণ গঠন-

Protista__প্রোটিস্টাঃ
  • উদাহরণ- আমাশয়ের জীবাণু, স্পাইরোগাইরা।
  • কোষের প্রকৃতি ও সংখ্যা- এককোষী বা বহুকোষী।
  • নিউক্লিয়াসের গঠন- নিউক্লিয়ার মেমব্রেন, নিউক্লিয়ার রন্ধ্র, নিউক্লিওলাস, নিউক্লিওপ্লাজম, নিউক্লিয়ার রেটিকুলাম।
  • সাইটোপ্লাজমীয় অঙ্গানুসমূহ- DNA, RNA.
  • কোষ বিভাজন- মাইটোসিস।
  • খাদ্যাভ্যাস- শোষণ, গ্রহণ বা ফটোসিনথেটিক পদ্ধতি।
  • জনন পদ্ধতি- যৌন ও অযৌন পদ্ধতি।
  • ভ্রুণ গঠন- হয় না।

Fungi__ফানজাইঃ
  • উদাহরণ- মিউকর, অ্যাগারিকাস।
  • কোষের প্রকৃতি ও সংখ্যা- এককোষী।
  • নিউক্লিয়াসের গঠন- নিউক্লিয়ার মেমব্রেন, নিউক্লিয়ার রন্ধ্র, নিউক্লিওলাস, নিউক্লিওপ্লাজম, নিউক্লিয়ার রেটিকুলাম।
  • সাইটোপ্লাজমীয় অঙ্গানুসমূহ-
  • কোষ বিভাজন- মিয়োসিস।
  • খাদ্যাভ্যাস- শোষণ পদ্ধতি।
  • জনন পদ্ধতি-
  • ভ্রুণ গঠন- হ্যাপ্লয়েড স্পোর পদ্ধতি।

Plantae__প্লানটিঃ
  • উদাহরণ- আমগাছ, সাইকাস।
  • কোষের প্রকৃতি ও সংখ্যা-
  • নিউক্লিয়াসের গঠন- নিউক্লিয়ার মেমব্রেন, নিউক্লিয়ার রন্ধ্র, নিউক্লিওলাস, নিউক্লিওপ্লাজম, নিউক্লিয়ার রেটিকুলাম।
  • সাইটোপ্লাজমীয় অঙ্গানুসমূহ-
  • কোষ বিভাজন-
  • খাদ্যাভ্যাস-
  • জনন পদ্ধতি- যৌন জনন।
  • ভ্রুণ গঠন- ডিপ্লয়েড পর্যায়ে ভ্রুণ সৃষ্টি হয়।

Animalia__অ্যানিমেলিয়াঃ
  • উদাহরণ- দোয়েল, শামুক,।
  • কোষের প্রকৃতি ও সংখ্যা- বহুকোষী প্রাণী।
  • নিউক্লিয়াসের গঠন- নিউক্লিয়ার মেমব্রেন, নিউক্লিয়ার রন্ধ্র, নিউক্লিওলাস, নিউক্লিওপ্লাজম, নিউক্লিয়ার রেটিকুলাম।
  • সাইটোপ্লাজমীয় অঙ্গানুসমূহ-
  • কোষ বিভাজন-
  • খাদ্যাভ্যাস- হেটারোট্রাফিক/পরভোজী।
  • জনন পদ্ধতি- যৌন জনন।
  • ভ্রুণ গঠন- হ্যাপ্লয়েড ও ডিপ্লয়েড পর্যায় থেকে ভ্রুণ সৃষ্টি হয়।






Ads 728x90