Definition of Homeopathy_Chapter-02
Definition of Homeopathy_Chapter-02

Definition of Homeopathy_Chapter-02

Type something in the input field to search the table for first names, last names or others:

ইংরেজি
HOMOEOPATHY স্যামুয়েল হ্যানিম্যান বলেছেন, হোমিওপ্যাথিক ওষুধ স্নায়ুর মাধ্যমে কাজ করে। ওষুধ যাতে বেশিসংখ্যক স্নায়ুকে স্পর্শ করে ভালোভাবে কাজ করতে পারে, এ জন্য ওষুধের একটা অনুবটিকাকে জলে দ্রবীভূত করে প্রয়োগ করতে হবে। জিহ্বা, মুখ ও পাকস্থলির স্নায়ুগুলো সহজেই ওষুধের ক্রিয়া গ্রহণ করতে পারে।

যে চিকিৎসা পদ্ধতিতে রোগীর রোগ লক্ষণের সদৃশ রোগ লক্ষণ সৃষ্টিকারী ঔষধ দিয়ে চিকিৎসা করা হয়।

আরোগ্যের আদর্শ ও স্বাস্থ্যরক্ষা বিষয়ে চিকিৎসকের জ্ঞাতব্য ও কর্তব্য, চিকিৎসকের চারিত্রিক গুণাবলী, রোগী চিকিৎসার ক্ষেত্রে লক্ষণ সমষ্টি সংগ্রহের পদ্ধতি ও সদৃশ লক্ষণের ভিত্তিতে ঔষধ নির্বাচনের নিয়মসহ শক্তিকৃত সূক্ষমাত্রায় পরিবর্তনশীল শক্তিতে ঔষধ প্রয়োগের মাধ্যমে রোগারোগ্যের কলাকৌশল সম্পর্কিত বিবরণ পাওয়া যায়।

চিকিৎসকের জীবনের মহৎ উদ্দেশ্য আদর্শ আরোগ্য সম্বন্ধে জানা যায়, সদৃশ লক্ষণে চিকিৎসার শ্রেষ্ঠত্ব সম্বন্ধে ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ পাওয়া যায়, জীবনীশক্তি, রোগ শক্তি, ঔষধ প্রয়োগ, আরোগ্যের বিঘ্নকর অবস্থা প্রভৃতি উল্লেখ আছে তাই হোমিওপ্যাথি।
শব্দটি গ্রিক শব্দ Homoeo রা Homoeoios এবং pathy বা pathos হইতে উৎপন্ন হইয়াছে। গ্রিক ভাষায় হোমিও মানে সদৃশ, like,similarএবং pathos মানে উপায়, পদ্ধতি বা কষ্টভোগ Means, Method or Suffering। অভিধানিক অর্থে হোমিওপ্যাথি অর্থ হইল সদৃশ রোগ বা সদৃশ দুর্ভোগ।

রোগ নিরাময়ের প্রাকৃতিক নিয়ম Simila Similibus Curantur এর বাক্যগত অর্থ Let like be cured by like অর্থাৎ সদৃশ রোগ সৃজনক্ষম ঔষধ দিয়াই রোগ আরোগ্য সম্ভব। হোমিওপ্যাথি একটি সুসংগঠিত নিয়মতান্ত্রিক চিকিৎসা বিজ্ঞান এবং আরোগ্য কলা। যে চিকিৎসা বিজ্ঞানের মূল সূত্র হইতেছে সুস্থবস্থয় কোন ঔষধ স্থুল মাত্রায় সেবন করিলে মানুষের দেহ ও মনে যে সকল অসুস্থকর লক্ষন প্রকাশ পায়, ঐ প্রকার লক্ষনযুক্ত প্রাকৃতিক অসুস্থতায় উক্ত ঔষধের শক্তিকৃত সূক্ষ্মমাত্রা প্রয়োগে লক্ষণসমূহ অন্তর্হিত হয়।

হোমিওপ্যাথির সংজ্ঞায় বলা যায় "প্রাকৃতিক রোগের দ্বারা সৃষ্ট মানব শরীরের বিকৃত লক্ষণসমষ্টি দ্বারা অংকিত প্রতিচ্ছবির ন্যায় সুস্থ দেহে পরীক্ষিত অনুরুপ প্রতিচ্ছবি সৃষ্টি করিতে সক্ষম শক্তিকৃত ঔষধের একবার একটিমাত্র ঔষধ প্রয়োগ ব্যবস্থাকে হোমিওপ্যাথি বলে।
হোমিওপ্যাথির উপর মনীষীদের বিভিন্ন সংজ্ঞাঃ
♦ডা: বোরিকের মতে সদৃশ লক্ষণ ভিত্তিক আরোগ্য পদ্ধতিকে হোমিওপ্যাথি বলে।
♦ডা: এলেনের মতে হোমিওপ্যাথি সদৃশ বিধানভিত্তিক একটি নিয়নভিত্তিক চিকিৎসা।
♦ডাঃ এ, ডাইট স্মিথ বলেন, হোমিওপ্যাথি একটি বিশেষ আরোগ্য বিজ্ঞান।
♦ডাঃ স্যামুয়েল ফ্রেডারিক হ্যানিম্যান যাহার বিকাশ সাধন করেছেন এবং যা আরোগ্যের বৈজ্ঞানিক ও প্রাকৃতিক নীতির উপর প্রতিষ্ঠিত।
♦ডাঃ হাবাট এ. রবার্টস এর মতে আরোগ্যের যে বিজ্ঞান ও কলা প্রকৃতির মৌলিক নিয়ম নীতির উপর প্রতিষ্ঠিত, তাকেই হোমিওপ্যাথি বলে।

চিকিৎসকের গুণাবলী

চিকিৎসার গুরুদায়িত্ব গ্রহণ করিবার পূর্বে চিকিৎসকের কি কি বিষয়ে গুণ ও জ্ঞান থাকিতে হইবে তাহা নিম্নে আলোচিত হইলঃ
চিকিৎসকের গুণাবলী
১। রোগ সম্বন্ধে জ্ঞান।
২। ঔষধের আরোগ্যকারী শক্তি সম্বন্ধে জ্ঞান।
৩। ঔষধ প্রয়োগ সম্পর্কিত জ্ঞান।
৪। আরোগ্যের বিঘ্ন দূর করার জ্ঞান।
৫। রোগের গতিধারা, অবস্থা, পরিণতি সম্পর্কিত জ্ঞান।
৬। মানবদেহের বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গের অবস্থান, তাহাদের ক্রিয়া ও পরস্পরের সম্পর্কে জ্ঞান।

আদর্শ আরোগ্য বলিতে কি বুঝ?

হোমিও চিকিৎসা বিজ্ঞানের জনক ডাঃ স্যামুয়েল হ্যানিম্যান বলেছেন- “আরোগ্যের সবচেয়ে উত্তম আদর্শ হচ্ছে – “সহজবোধ্য ও সুনির্দিষ্ট নিয়ম-নীতির উপর ভিত্তি করে সবচেয়ে নির্ভ রযোগ্য উপায়ে, রোগীর ক্ষতি না করে দ্রুত, মৃদু, ও স্থায়ীভাবে রোগের সম্পূর্ণ অপসারণের মাধ্যমে রোগীকে পুনরায় সুস্থাবস্থায় ফিরিয়ে আনা”।

আদর্শ আরোগ্য বলিতে কি বুঝ?
১। আরোগ্য হচ্ছে স্বাস্থ্যে প্রত্যাবর্তন যেখানে আক্রান্ত অঙ্গের লক্ষণসমূহই কেবল দূরীভূত হয়না বরং রোগী শারীরিক, মানসিকভাবে সম্পূর্ণরূপে সুস্থ বোধ করে।
২। আরোগ্য কোন অস্থায়ী ব্যবস্থা নয়; বরং স্থায়ী।
৩। আরোগ্য তাকেই বলে যা মৃদুভাবে সম্পন্ন হয় – রোগীকে কোন প্রকার কষ্ট না দিয়ে বা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া না দেখিয়ে।
৪। সহজবোধ্য ও চিরন্তন নীতি বা নিয়মের উপর ভিত্তি করেই আরোগ্য সাধিত হয়।

রোগ সম্বন্ধে হোমিও মতবাদ

রোগ বলতে কি বুঝায় বা রোগ সম্পর্কে হোমিওপ্যাথিতে কিরূপ ধারনা পোষণ করা হয় ?
জীবনীশক্তির বিকৃত অবস্থাজনিত সৃষ্ট লক্ষণকেই রোগ বলা হয়। অদৃশ্য জীবনীশক্তি মানবদেহে অতি সুশৃঙ্খলভাবে অবস্থিত। জীবনীশক্তির এই গতি ভিতর হইতে বাহিরের দিকে। কোন ব্যক্তি পীড়িত হইলে আমাদের প্রথম বুঝিতে হইবে জীবনীশক্তির বিপর্যস্ত অবস্থা। রোগশক্তির বিরুদ্ধে সব সময় জীবনীশক্তি যুদ্ধ করিয়া আসিতেছে এবং রোগশক্তিকে প্রতিহত করিয়া জীবন ক্রিয়া স্বাভাবিক রাখিতেছে। যদি রোগশক্তিটি জীবনীশক্তি অপেক্ষা শক্তিশালী হয় তবে জীবনীশক্তির সুশৃংঙ্খল কর্মকান্ডে বিপর্যয় ঘটিলে সঙ্গে সঙ্গে বাহিরে জানাইয়া দেয়।

প্রাকৃতিক রোগশক্তি সূক্ষ্ম ও অজড়। এই অজড় রোগশক্তির প্রভাবেই অজড় জীবনীশক্তি বিকৃতাবস্থা প্রাপ্ত হইয়া দেহের অঙ্গ প্রত্যঙ্গের মাধ্যমে লক্ষণ সমষ্টির সাহায্যে বিশৃঙ্খল অবস্থা প্রকাশ করে। যাহার ফলে মানবের দেহ ও মনের বিকৃত অবস্থা প্রাপ্ত হয়। অনুভূতির বিকৃতি ঘটে ও বিশৃঙ্খল ক্রিয়াকলাপ দেখা দেয়। এই সকল বিকৃত অনুভূতি, বিশৃঙ্খল ক্রিয়াকলাপ অর্থাৎ জীবনীশক্তির বিকৃত অবস্থাজনিত যে সকল লক্ষণ মানবদেহে প্রকাশিত হয় ঐ লক্ষণসমষ্টিকেই হোমিওপ্যাথি রোগ বলা হয়। রোগ সম্পর্কে হোমিওপ্যাথিতে যে ধারণা পোষণ করা হয় তাহা হইল এই যে প্রাকৃতিক রোগ শক্তি সূক্ষ ও অজড়।

রোগ চিকিৎসায় লক্ষণসমষ্টির প্রয়োজনীয়তা কি?

রোগীর লক্ষণের সাদৃশ্য আছে এমন ঔষধ প্রয়োগ করে রোগীকে আরোগ্য করাই হোমিওপ্যাথি। রোগীর রোগ সর্ম্পকে জানতে হলে লক্ষণসমষ্টিকে পর্যবেক্ষণ করতে হয়। রোগী বিভিন্ন ধরনের লক্ষণ নিয়ে চিকিৎসকের নিকট আসে, ওইসব লক্ষণ পর্যালোচনা করে যে রোগী-চিত্র আমরা পাই তার সাথে সাদৃশ্য আছে এমন ঔষধ প্রয়োগ করাই হলো হোমিওপ্যাথিক পদ্ধতি। স্বাভাবিক ভাবেই মনে হবে, তাহলে রোগী যে লক্ষণ নিয়ে আসে সেই লক্ষণ যোগ করে যে ঔষধ আসে সে ঔষধটি প্রয়োগ করলেই কাজ সম্পূর্ণ হয়ে যাবে -এখানে আবার লক্ষণের মূল্যায়নের কি প্রয়োজন? আর এই ধারণাটি নিয়েই আমাদের দেশের অনেক হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকগণ চিকিৎসা করে যাচ্ছেন।

আমরা সচরাচর যে অবস্থাটি দেখতে পাই, একজন রোগী ১০ জন চিকিৎসকের নিকট গেলে ১০ ধরণের ঔষধ প্রেসক্রিপসন করি। আসলে কি রোগী ১০ ধরণের রোগী-চিত্র নিয়ে চিকিৎসকের নিকট এসেছিলেন! অবশ্যই তা নয়। আর ফলস্বরূপ অনেক রোগীকেই বলতে শোনা যায়, আমি অনেক জায়গায় হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক নিয়েছি কিন্তু সামান্য কিছু উপকার ছাড়া আর কিছু হয়নি, আরোগ্য তো দূরের কথা।
যাই হোক, অর্গাননের ১৫৪ সূত্রে মহাত্মা হ্যানিমান বলছেন, “যোগ্যতম ঔষধের লক্ষণতালিকা হইতে যে প্রতিরূপ প্রস্তুত করা হয় তাহার মধ্যে যদি সেই সকল বিচিত্র, অসাধারণ, অনন্য এবং বিশিষ্ট (পরিচায়ক) লক্ষণসমূহ বিদ্যমান থাকে- যেগুলি অধিকতম সংখ্যায় ও অধিকতম সাদৃশ্যসহ যে রোগ চিকিৎসা করতে হইবে তাহার মধ্যে দেখা যায়, তাহা হইলে সেই ঔষধই হইবে সেই রোগে সর্বাপেক্ষা উপযুক্ত আরোগ্যদায়ক হোমিওপ্যাথিক ঔষধ। রোগ যদি খুব বেশি পুরাতন না হয় তা হইলে সাধারণত প্রথম মাত্রাতেই বেশি গোলযোগ ব্যতীত তাহা দূরীভূত ও বিনষ্ট হইবে।”


হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় ঔষধ নির্বাচনে লক্ষণসমষ্টির গুণগত বৈশিষ্ট্যই হলো প্রধান, সংখ্যাগত ব্যাপারটি এখানে গৌণ। আরোগ্যদায়ক ঔষধ নির্বাচনে লক্ষণসমষ্টির ভিত্তিটি হচ্ছে সেই সকল লক্ষণ- যেগুলি বিচিত্র, অনন্য অসাধারণ হিসাবে ঔষধের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয় এবং অন্যান্য ঔষধ থেকে পার্থক্য নির্ণয় করে। যেমন, হঠাৎ ঠাণ্ডা লেগে কারো জ্বর আসলে আমরা সাধারণভাবে প্রায় সকলের মাঝেই যে সকল লক্ষণ দেখি- অরুচি, মাথাব্যথা, গাজ্বালা, অস্থিরতা। এই লক্ষণগুলো দেখে আমরা কোনো ঔষধ নির্বাচন করতে পারি না – যতক্ষণ পর্যন্ত না জানা যায় ঠাণ্ডা পানির অদম্য পিপাসা, মৃত্যুভয়, প্রচণ্ড অস্থিরতা। মনে হয় এ যাত্রায় আর বাঁচবে না তখন অ্যাকোনাইট বা আর্সেনিকামের কথা স্মরণ করতে দেরি হয় না। এই লক্ষণগুলো বিচিত্র, অসাধারণ, অনন্য। যা পর্যবেক্ষণ করে আমরা নিশ্চিতভাবে উপযুক্ত ঔষধ নির্বাচন করতে পারি।


হোমিওপ্যাথিতে রোগের লক্ষণ বলতে কী বোঝায় ?

মেটেরিয়া মেডিকায় বর্ণিত প্রতিটি ওষুধ যেন এক একটি রুগ্ন মানুষের প্রতিচ্ছবি অর্থাৎ স্বতন্ত্র লক্ষণ সমষ্টির একক চিত্র। সুস্থ শরীরে ওষুধ পরীক্ষা করে যেমন ওষুধের লক্ষণ সমষ্টি জানা যায় তেমনি প্রতিটি মানব স্বত্ত্বার অখণ্ডতা বিবেচনায় রেখে সামগ্রিক লক্ষণ নির্ণয় করা হয়। রোগ বা রোগের নাম নয়, লক্ষণ সমষ্টিই ওষুধ নির্বাচনের একমাত্র নিয়ামক।

প্রসঙ্গতঃ অ্যালোপ্যাথিসহ অন্যান্য চিকিৎসাক্ষেত্র এবং সাধারণ মানুষ মানব স্বত্ত্বার অখণ্ডতায় বিশ্বাস করলেও চিকিৎসা ক্ষেত্রে খণ্ডিত দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে রোগের বিষয়টি দেখে থাকেন। রোগ যে অঙ্গেই আক্রমণ করুক না কেন, একই স্নায়ুমণ্ডলি ও রক্তস্রোতের অধীনে বলে পুরো মানুষটি রুগ্ন হয়ে থাকে। আধুনিক চিকিৎসায় এই বাস্তবতাকে গ্রহণ করা হয় না।

পক্ষান্তরে, রোগাক্রান্ত অঙ্গটিসহ পুরো মানুষটি রোগগ্রস্ত হয় হোমিওপ্যাথির এই বাস্তব বিশ্বাস এবং সেই নিরিখে দেহ, মন ও অঙ্গকে অবিচ্ছিন্নভাবে রুগ্ন ধরে নিয়ে চিকিৎসা দেয়ার নিয়মই হোমিওপ্যাথিকে অন্যান্য চিকিৎসা পদ্ধতি থেকে আলাদা করেছে। উদরাময়,আমাশয়, জ্বর, কাশি, নিউমোনিয়া, গলগণ্ড, গলস্টোন, অর্শ, ভগন্দর,টিউমার,র হার্নিয়া, একশিরা, মাথাবেদনা, ম্যালেরিয়া, টাইফয়েড, যক্ষ্মা, ক্যানসার প্রভৃতি রোগের নাম যাই হোক না কেন, প্রকৃতপক্ষে পুরো মানুষটিই রুগ্ন হয়। অতএব, রোগ যাই হোক, চিকিৎসা হবে সামগ্রিক- এটাই হবে প্রকৃত সত্য।

লক্ষণ কত প্রকার ও কি কি ?
১। ব্যক্তিনিষ্ঠ লক্ষণঃ Subjective Symptoms- রোগের যে সকল লক্ষণ শুধুমাএ রোগী স্বয়ং অনুভব করিতে পারেন এবং রোগী না বলিলে চিকিৎসক বা অন্য কেহ তাহা বুঝিতে পারে না উহাদিগকে ব্যক্তিনিষ্ঠ লক্ষণ বলে। যেমন- পিপাসা, মাথাব্যথা, ক্ষুধা, ব্যথা বেদনা প্রভৃতি।
২। বস্তুনিষ্ঠ লক্ষণঃ Objective Symptoms- রোগের যে সকল লক্ষণ রোগী নিজে না বলিলেও চিকিৎসক তাহার জ্ঞান ইন্দ্রিয়ের দ্বারা ও যান্ত্রিক পরীক্ষার দ্বারা, পার্শ্ববর্তী লোকজন প্রত্যক্ষ করেন উহাদিগকে বস্তুনিষ্ঠ লক্ষণ বলে। যেমন- জ্বর, প্রলাপ, পক্ষাঘাত, কাশি প্রভৃতি।
পূর্ণাঙ্গ রোগ লক্ষণ কাহাকে বলে ?
যে লক্ষণের অবস্থান, অনুভূতি, হ্রাসবৃদ্ধি ও আনুষাঙ্গিক অবস্থা আছে জ্ঞান ইন্দ্রিয় দ্বারা সহজেই বোধগম্য হয় তাহাকে পূণাঙ্গ রোগ লক্ষণ বলে।
প্রকৃত রোগ লক্ষণের বৈশিষ্ট্যসমূহ কি কি ?
প্রকৃত রোগ লক্ষণ রোগীর স্বাভাবিক স্বাস্থ্যের বিকৃত অবস্থা প্রকাশ করে।
প্রকৃত রোগ লক্ষণ জ্ঞান ইন্দ্রিয় দ্বারা সহজেই বোধগম্য হইবে।
প্রকৃত রোগ লক্ষণের অবস্থান, অনুভূতি, হ্রাসবৃদ্ধি ও আনুষাঙ্গিক অবস্থা স্পষ্টভাবে বুঝা যাইবে।
লক্ষণ ও চিহ্নের মধ্যে পার্থক্য কি ?
চিকিৎসকের নিকট যখন রোগী নিজে রোগ সম্পর্কে বা কষ্টকর উপসর্গ সম্বন্ধে বর্ণনা দেয় তখন রোগীর বর্ণিত কষ্টকর উপসর্গগুলিকে লক্ষণ বলে।
অপরদিকে চিকিৎসক রোগী পর্যবেক্ষণ করিয়া এবং পরীক্ষা নিরীক্ষা দ্বারা রোগ সম্পর্কে যাহা জানিতে পারেন তাহাকে চিহ্ন বলে।
সুতরাং লক্ষণ হইল রোগ সম্পর্কে রোগীর নিজের বর্ণনা, আর চিহ্ন হইল পরীক্ষা ও পর্যবেক্ষণ দ্বারা রোগ সম্পর্কে চিকিৎসকের ধারন। অনেক সময় লক্ষণ ও চিহ্ন হইতে পারে। যেমন একজন রোগী বলিল আমার বমির সহিত রক্ত বাহির হয়। এখানে রক্ত বমি একটি লক্ষণ। আবার যদি রোগী চিকিৎসকের সামনে রক্তবমি করে বা চিকিৎসককে রক্তবমি আনিয়া দেখায় তাহা হইলে এখানে রক্তবমি চিহ্ন।

বলা বাহুল্য, রোগ নির্ণয়ের জন্য রোগের নামের তেমন কোন মূল্য নেই। একিউট এবং ক্রনিক রোগ যেমনই হোক না কেন ব্যক্তিস্বাতন্ত্রীকরণ প্রণালীতে মানসিক ও সার্বদৈহিক, বিশেষ লক্ষণ সংগ্রহ করে তার সমন্বয়ে লক্ষণ সমষ্টি বা রোগচিত্র অংকন করা হয়। হোমিওপ্যাথিতে রোগ নির্ণয় ও ওষুধ নির্বাচনের এটাই একমাত্র পথ।

লক্ষণ স্বাস্থ্যের স্বাভাবিক অবস্থার বিকৃত পরিবর্তন বা পীড়ার অস্তিত্বের প্রমাণ। ইহা এমন একটি অবস্থা যাহা রোগী স্বয়ং তাহার নিকট আত্মীয় ও পার্শ্ববর্তী লোকজন এবং চিকিৎসক প্রত্যক্ষ করিয়া থাকেন।লক্ষণ শুধুমাএ রুগ্নাবস্থার বহিঃপ্রকাশ বা রোগের নিদর্শনই নয়, ইহা প্রতিকারক সদৃশ ঔষধ নির্বাচনের ও চাবিকাঠি।

What is symptoms according to homeopathy?

For a homeopath, symptoms are the important pointers to understand the sickness in the patient. These symptoms could be at the physical level known as physical symptoms or at mental level, commonly called mental symptoms.

একজন হোমিওপ্যাথের জন্য রোগীর অসুস্থতা বোঝার জন্য উপসর্গগুলি হল গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশক। এই লক্ষণগুলি শারীরিক স্তরে হতে পারে যা শারীরিক লক্ষণ হিসাবে পরিচিত বা মানসিক স্তরে, যাকে সাধারণত মানসিক লক্ষণ বলা হয়।

লক্ষ্মণ সংগ্রহের ব্যপারে আসা যাক। অর্গাননের ৮৩ থেকে ১০৩ পর্যন্ত সূত্রের ভিত্তিতে লক্ষ্মণ সংগ্রহ করতে হবে। যেমন—
Common diagnostic and uncommon individualistic symptoms অর্থাৎ PUSS—Peculiar, Uncommon, Striking and Singular;
Pathological symptoms অর্থাৎ morbid condition, location, sensation, modalities, physical changes, mental changes, subjective symptoms, objective symptoms;
Intellectual aspects;
Intellectual aspects;
Social aspects;
Environmental aspect;
Miasmatic Sphere;
Constitutional aspects;
Past history of the patient;
Family history;
Causation;
Iatrogenic sphere;
Generalities;


সুচিপত্র বিস্তারিত আলোচনা
লক্ষণ রোগ যাই হোক, চিকিৎসা হবে সামগ্রিক- এটাই হবে প্রকৃত সত্য। হোমিওপ্যাথি সেই সত্যকে সামনে রেখে এর বিশেষ পদ্ধতিতে লক্ষণ সংগ্রহ করে এবং লক্ষণের গুরুত্বের ক্রমানুসারে লক্ষণগুলোকে ভাগ করে নেয়, যথা-
লক্ষণ মানসিক লক্ষণ-- মন থেকে স্ংগৃহীত লক্ষণ মানসিক শ্রেণির, যেমন-ক্রোধ, হিংসা, অস্থিরতা, মনের ইচ্ছা-অনিচ্ছা ইত্যাদি।
লক্ষণ সার্বদৈহিক লক্ষণ-- সমগ্র শরীর থেকে সংগৃহীত লক্ষণ হলো সার্বদৈহিক, যেমন- শরীরের উপর আবহাওয়াগত প্রভাব অর্থাৎ শীত, গরম বা বর্ষায় কাতর, গোসলে ইচ্ছা- অনিচ্ছা, ক্ষুধা, পিপাসা প্রভৃতি।
লক্ষণ বিশেষ লক্ষণ-- বিশেষ লক্ষণ বলতে রোগাক্রান্ত স্থানের আকৃতি-প্রকৃতি এবং এর লক্ষণ কখন কি অবস্থায় বাড়ে-কমে সেসব সংগ্রহ করা।
লক্ষণ অসাধারণ লক্ষণ-- যে সকল লক্ষণ রোগের সাধারণ বৈশিষ্ট্য অপেক্ষা ব্যতিক্রমধর্মী বা যাহা অদ্ভুত চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যসূচক, সুস্পষ্ট, যেখানে একটিমাত্র লক্ষণ একটিমাত্র ঔষধকে নির্দেশ করে এই জাতীয় লক্ষণকে অসাধারণ লক্ষণ বলে। যেমন- জলপানের ইচ্ছা পিপাসাহীনতা (আর্স, ক্যালাডি), বুক ধড়-ফড়ানিতে তাড়াতাড়ি হাঁটিলে উপশম (আর্জ নাইট)প্রভৃতি।
লক্ষণ সাধারণ লক্ষণ-- যে সকল লক্ষণ প্রায় সকল ঔষধে দেখা যায় বা কোন নির্দিষ্ট রোগের সকল রোগীর মধ্যে দেখা যায়, যাহা অস্পষ্ট, অনির্দিষ্ট ও বৈশিষ্ট্যহীন সে সকল লক্ষণকে সধারণ লক্ষণ বলে। যেমন- রক্ত আমাশয়, আঁচিল, শিরঃপীড়া প্রভৃতি।
লক্ষণ চরিত্রগত লক্ষণ-- কেন্টের মতেঃ রোগের যে সমস্ত লক্ষণ সাধারণ বুদ্ধিতে ব্যাখ্যা করা যায় না সেগুলোই পরিচায়ক বা চরিত্রগত লক্ষণ। উদ্ভেদ বিহীন হাম, প্রবল জ্বরে পিপাসাহীনতা, জিহ্বার শুষ্কতা সত্বেও জলপানে অনিচ্ছা, দেহে তীব্র জ্বলাবোধ থাকা সত্বেও গাত্রবরণ চাওয়া, উত্তাপে জ্বালাবোধের উপশম হওয়া প্রভৃতি।
লক্ষণ অদ্ভুত লক্ষণ-- যে সকল লক্ষণ দ্বারা রোগের কোন অদ্ভুত নিদর্শন প্রকাশ পায় উহাদিগকে অদ্ভুত লক্ষণ বলে। যেমন পক্ষাঘাত রোগীর পক্ষাঘাত অংশে তাপমাত্রা বেশি কিন্তু অন্য স্থানে কম। ইহা একটি অদ্ভুত লক্ষণ। কারণ পক্ষাঘাত অংশে শৈত্যভাব থাকাই স্বাভাবিক অথচ এই ক্ষেত্রে তাহার ব্যতিক্রম।
লক্ষণ ধাতুগত লক্ষণ-- যে লক্ষণগুলি রোগীর বিশেষ ধাতু প্রকৃতির পরিচয় দেয় সেগুলোকে ধাতুগত লক্ষণ বলে। চিররোগের ক্ষেত্রে এ ধরনের লক্ষণের গুরুত্ব অনেক বেশী। যাহাদের আপাত দৃষ্টিতে বিশেষ কোন রোগ আছে বলিয়া মনে হয় না অথচ সামান্য করনেই অসুস্থ হইয়া পড়ে কিংবা কোন সময়েই ঠিক সুস্থবোধ করেনা এই ধরনের লক্ষণ তাহাদের ক্ষেত্রে খুবইগুরুত্বপূর্ণ। যেমন- প্রায় সর্দি কাশিতে ভোগা, আবহাওয়ার সামান্য পরিবর্তনেই অসুস্থবোধ করা প্রভৃতি।
রোগ রোগ কি? শরীরের প্রত্যেক অনু-পরমানুর উপর ক্ষমতা বিস্তারকারী ও সর্বদা ক্রিয়াশীল জীবনীশক্তি বা জৈব-প্রকৃতি কোন কারনে বিশৃঙ্খল হয়ে বা স্বাভাবিক নিয়মের ব্যতিক্রম ঘটে যে অবস্থার অভিব্যক্তির সৃষ্টি হয় তাহাকে রোগবলে।
রোগ রোগের শ্রেণীবিভাগ
  • Class division of disease- রোগের শ্রেণী বিভাগ-- হ্যানিমান রোগকে দুইভাগে ভাগ করিয়াছেন।
  • অচির রোগ- তরুন রোগ বা অস্থায়ী রোগ বা একিউট রোগ।
  • চির রোগ- প্রাচীন রোগ বা স্থায়ী রোগ বা ক্রণিক রোগ।
রোগ অচির রোগবীজ কি? যে সমস্ত রোগ হঠাৎ উপস্থিত হয়, দ্রুত জীবনীশক্তির পরিবর্তন সাধন করে এবং অল্প সময়ের মধ্যেই হয় রোগীর জীবন নাশ করে- না হয় সমূলে নিজেই (রোগ) দূরীভূত হয় তাকে অচির রোগ বলে।
  • এই সকল রোগের কোন স্থিতিশীলতা নেই।
  • এই রোগের ভোগকাল নির্দিষ্ট, এই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই রোগের বিকাশ ও পরিণতি ঘটে (নিরাময় অথবা মৃত্যু)।
  • ঔষধ ছাড়াও তরুন রোগ আরোগ্য হয়, তবে সময় কিছুটা বেশি লাগতে পারে।
  • তরুন রোগের ভোগকাল অল্পদিন অর্থাৎ ২/১ দিন হতে সর্বোচ্চ ২/১ মাস পর্যন্ত হতে পারে।
  • তরুন রোগের চিকিৎসার ক্ষেত্রে অবশ্যই বর্তমান বিদ্যমান লক্ষণ ও তার কারণের আলোকে ঔষধ প্রয়োগ করতে হবে এবং যে কারণে রোগটি হয়েছে তা থেকে বিরত থাকতে হবে।
প্রধানত: মানসিক ও শারীরিক অনিয়মের ফলে বা স্বাস্থ্যবিধি লংঘনের ফলে এই জাতীয় রোগ ব্যক্তিগতভাবে যে কোন মানুষকে আক্রমণ করতে পারে।

Note that we start the search in topic, to prevent filtering the table headers.

Previous Post
Next Post

post written by:

DHMS (BHB), PDT and MBA

0 Comments: