Graphities-গ্রাফাইটিস

Graphities-গ্রাফাইটিস

 প্রতিশব্দ :- ব্লক লেড , কালসীসা , সূৰ্মা , কার্বো মিনেরালিস , গ্রাফাইটিস ।

উৎস :- ইহা একটি খনিজ অংগার ।

বর্ণনা :- বিশুদ্ধ জাতীয় গ্রাফাইটিস ইংল্যাণ্ডের বরোডল খনিতে ইহা পাওয়া যায় । ইহা একটি কাল ধূসর বর্ণের , দীপ্তিময় নরম পদার্থ, কোন গন্ধ নাই ।

প্রস্তুত প্রণালী :- প্রস্তুত প্রণালী ও ব্ল্যাক লেড অর্থাৎ কাল সীসার বিচর্ণ হইতে এই ঔষধ প্রস্তুত হয় । প্রথমে উহাকে চূর্ণ করিয়া পরে তরলক্রমে ঔষধ । প্রস্তুত করিতে হয় ।

আবিষ্কার : -ডাঃ হ্যানিমান ইহা আবিষ্কার করেন ।

ধাতুপ্রকৃতি :-ইহা গভীর ক্রিয়াশীল এন্টিসোরিক ঔষধ ।


ক্রিয়াস্থান : -চর্মের উপরই ইহার প্রধান ক্রিয়া দেখিতে পাওয়া যায় । পরিপাকযন্ত্র , অন্ত্রসমূহের শ্লৈষ্মিক ঝিল্লী , গ্রন্থি , কর্ণ , মূত্রনালী , স্ত্রীলোকদের জরায়ুর উপর ইহার ক্রিয়া দৃষ্ট হয় । গৌরবর্ণ  মোটাসোটা লোক । স্থুলকায় স্ত্রীলোক , যাহাদের চর্মরোগ হইবার প্রবণতা ও কোষ্ঠবদ্ধের ধাতু তাহাদের ক্ষেত্রেই গ্রাফাইটিস উত্তম ক্রিয়াশীল ।

মানসিক লক্ষণ :-

মানসিক দিক দিয়া ইহার রোগী সর্বদাই আশংকাপূর্ণ , ব্যাকুল , সর্বদাই বিষণ ও সংশয়াপন্ন । সর্ব সময়ের জন্য একটি অহেতুক অমঙ্গল সংঘটিত হইবার আশংকায় মনটি ইহার সর্বদাই চঞ্চল থাকে । মোটকথা বিষন্নতা ও নৈরাশ্যে মনটি নানা দুশ্চিন্তায় । কোনও বিষয়ে স্থির সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া ইহার রোগীর অসম্ভব ব্যপার । কোনও পুস্তক পাঠ করিয়া উহার অর্থ উপলব্ধি করিতে বা একটি পত্র লিখিতে অনেক সময়ের প্রয়োজন হয় । চিঠিখানি হয়ত বারবার খুলিয়া পড়ে , ঘরে তালা দিয়া পুনরায় আসিয়া দেখিয়া যায় । নিজ চিন্তাধারা ও কর্ম পদ্ধতিতে আত্মনির্ভরতার অভাব । গ্রাফাইটিসের রোগী ক্রন্দনশীল এবং গীতবাদ্য শ্রবণে বিষণ্ণতাপূর্ণ ভাবাবেগের উদয় হইতে দেখা যায় । মাঝে মাঝে নৈরাশ্যের আতিশয্যে আত্মহত্যার ইচ্ছা । দেখা দেয় কিন্তু তাহাতে অতিশয় ভীতি থাকায় উহা কার্যত সম্পাদন করিতে পারে । রোগী কোন কার্যে নিযুক্ত থাকিলেও হাত পা নাচায় ।

পরিচায়ক লক্ষণ :-

  • ইহার রোগীর পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বিষয়ে কোন বিবেচনা বোধই থাকে না।  কিভাবে পরিচ্ছন্ন থাকিতে হয় সেই বিষয়ে সম্পূর্ণ অঙ্গ ।
  • রোগী শীতকাতর , কিন্তু রক্তোচ্ছ্বাসের অনুভূতির সময় গরম কাতর । আর সহ্য করিতে পারে না । কি গরম কি ঠাণ্ডা কোনও প্রকার বাতাস চায় তবে উদ্মপথে রক্তোচ্ছাসজনিত উত্তাপের উপশম কল্পে সে ঐ সময় শুধু মুক্ত বাতাস চায় ।
  • রোগী গৌরবর্ণ , স্থুলদেহ ও মেদপূর্ণ, শরীর মোটাসোটা আছে বা মোটাসোটা হইতেছে অথবা পূর্বে মোটাসোটা ছিল ।
  • শিশু অত্যন্ত নির্লজ্জ বেহায়া , অতিশয় বিরক্ত করে , তিরস্কার করিলেও তও নকরিতে বিরত হয় না বরং হাসিয়া উঠে । শিশুর একজিমা ও চর্মরোগ , তাহা হইতে মধুর ন্যয় রস ঝরে ।
  • গাত্রচর্ম দেখিতে অস্বাস্থ্যকর ,  পূজ হয় , পুরাতন ক্ষত পাকিয়া উঠে ।
  • কাটাফাটা চর্ম কিংবা দেপিতে কাউর গায়ের ন্যায় । তাহা হইতে চটচটে  রস নির্গত হয় । চোখের পাতায় একজিমা , পাতা লালবর্ণ , পাতার ধারগুলি মাছের আঁশের মত পদার্থ জমা কিংবা মামড়ি পড়া ।
  • মাথার উপর কোনও এক গোলাকার সীমাবদ্ধ স্থানে জ্বালা ।
  • কোষ্ঠবদ্ধতা , মল খুব শক্ত , মল নিঃসরণে কষ্ট হয়। বাহ্যের পর মলদ্বারে ক্ষতের ন্যায় টাটানি ।
  • হাতের ও পায়ের আঙ্গুলের নখের অস্বাভাবিক বিকৃতি বা বৃদ্ধি , কখন নখ অনিয়মিত বাড়ে , পুরু হয় , আবার কখনও ফাটা ফাটা দাগ হইয়া ক্ৰমশঃ নখ নষ্ট হয় ।
  • অতিরিক্ত রতিক্রিয়া কিংবা শুক্র ক্ষয়ের নিমিত্ত জননেন্দ্রিয়ের দুর্বলতা ।
  • পুরুষ সহবাসে অনিহা , ঋতু বিলম্বে প্রকাশিত হয় । ঋতুর পূর্বে ও পরে প্রদর স্রাব , হাজারিক স্রাব দিনরাত্রি নির্গত হয় ।
  • মাথায় ও মুখে হুলফোটান বেদনা ও জ্বালা । পীড়া ডানদিকে আরম্ভ হইয়া বামদিকে যায় ।
  • মাছ , মাংস , সঙ্গীত ও সঙ্গমে বিতৃষ্ণা ।

ধাতুগত লক্ষণ :-

যে সকল মোটাসোটা ( থলথলে ) ও ফর্সা এবং শীতকাতুরে স্ত্রীলোকদের কোষ্ঠবদ্ধতার ধাত ও যাহাদের দেরীতে ঋতুস্রাব হয় , তাহাদের পাড়ায় ইহা উপযোগী । ক্যালকেরিয়া কার্ব যেমন মোটা সোটা শিশুদের পক্ষে উপযোগী , গ্রাফাইটিস তেমনই মোটা সেটা বয়স্কা  স্ত্রীলোকদের পক্ষে উপযোগী ।

প্রয়োগক্ষেত্র :-

 চর্মপীডা , চক্ষুর পীড়া , জরায়ুর ক্যানসার , শ্বেতপ্রদর , ডিম্বাশয়ের পীড়া , স্থনের পীড়া , ক্লোরোসিস , পুং জননেন্দ্রিয় পাড়া , পাকাশয়ের পীড়া , অজীর্ণ , অশ , ভগন্দর  , কর্ণপীড়া , বধিরতা , স্বরভঙ্গ , কাশি , সবিরাম জ্বর , লিভারের বিবৃদ্ধি , মেদরোগ , কোষ্ঠকাঠিন্য ,  টিকার কুল প্রভৃতি ক্ষেত্রে  ইহা ব্যবহৃত হয় ।

প্রাফাইটিসের সহিত সোরিণাম, নেট্রাম মিউর ও পেট্রোলিয়ামের চর্মপীড়ার লক্ষণের তুলনা।

প্রাফাইটিস :–

  • প্রাফাইটিসের চর্ম অধিকাংশ সময়ে ঘর্মবিহীন । যদি  কোন সময়ে সামান্য ঘাম হয় তবে তাহা দুর্গন্ধযুক্ত  কিন্তু পদতলে । প্রাফাইটিসের চর্মপীড়াগুলি সাধারণতঃ কানের পিছনে , হাতের তালু , কনুই , জননেন্দ্রিয় প্রভৃতির সংযোগ স্থলে ও গুহ্য প্রদেশে বেশ মোটা মোটা রস ও পূজপূর্ণ ফুস্কুড়ি আকারে দেখা যায় । মাথার উপরিভাগে ও পশ্চাতে , গালে , চক্ষুতে , লিঙ্গ প্রদেশেও এই একজিমা দেখা দেয় এবং তাহা হইতে মধুর ন্যায় গাঢ় যাব নিঃসত হয় । শীতকালেও ঠাণ্ডাতেই ইহার চর্মপীড়ার বৃদ্ধি ঘটে এবং উহা হইতে ঘন আঠাল দুর্গন্ধযুক্ত পুজাৰ হইতে থাকে । আক্রান্ত স্থান ফাটিয়া যায় কিন্তু তাহাতে বেদনা বিশেষ কিছু থাকে । দেহে সামান্য ক্ষত হইলেও উহাতে পুঁজ হয় , পুরাতন ক্ষত চিহ্নসমূহ পুনরায় পূজপূর্ণ ক্ষতে পরিণত হয় । ইহার চর্মপীড়ার প্রবণতা এত বেশী যে , সমগ্র দেহটিতে রং বেরং এর নানা প্রকার চর্মপীড়ার চিহ্ন দেখা যায় ।

নেট্রাম মিউর :-

  •  নেট্রাম মিউর - দাড়িতে একজিমা , ক্ষৌরকুণ্ড , সন্ধির ভাঁজে ‘ হস্তপদাদির  ভঁজে , হাঁটুর ভাজে । একজিমায় রস পড়ে , অত্যন্ত চুলকায় ।  

পেট্রোলিয়াম :-

  • পেট্রোলিয়াম - ইহার চর্মপীড়া বেদনাপূর্ণ । প্রথমদিকে পূজ পরিমাণে অল্প ও পাতলা থাকে কিন্তু উহা ক্রমে যতই আঠাল ও গাঢ় হইতে থাকে ততই দুর্গন্ধযুক্ত হইতে থাকে । ইহার ইরাপসান ও একজিমা অনেকটা গ্রাফাইটিসের ন্যায় । কর্ণের পশ্চাতেই অধিক হয় । মাথায় উদ্ভেদ থাকে । শীতকালে ইহার উদ্ভেদসমূহ বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয় এবং গ্রীষ্মকালে আপনিই কমিয়া যায় । গ্রাফাইটিসে ইরাপসান হার্পিসের ন্যায় , পেট্রোলিয়ামে একজিমার ন্যায় ।

সরিনাম :-

  • নানা আকারের এবং নানা বর্ণের চর্মপীড়া ইহাতে দেখা যায়। নানা প্রকার বর্ণ বৈচিত্রের মধ্য দিয়া কোথাও বা গাঢ় বা পাতলা পঁচা গন্ধযুক্ত পূজে পরিপূর্ণ , আবার কোথাও বা একেবারে শুষ্ক প্রকৃতির অথচ দুর্গন্ধযুক্ত - কোনও কোনও ক্ষেত্রে উদ্ভেদগুলি অসংলগ্ন । আবার ক্ষেত্রবিশেষে দলবদ্ধ আকারে বিকশিত থাকিতেও দেখা যায় । ইহার চর্মপীড়ার বৃদ্ধি যদিও শীতকালে তথাপি সমগ্র রোগী হিসাবে ইহার বৃদ্ধিও যে কোনও প্রকার ভিজা বা শুষ্ক জাতীয় ঠাণ্ডায় এবং আবহাওয়া পরিবর্তনে লক্ষ্য করা যায় । চর্মপীড়ায় চুলকাইতে চুলকাইতে রক্ত বাহির হইলেও চুলকানির নিবৃত্তি হয় না । অনেক সময় কোন প্রকার উদ্ভেদ ছাড়াই প্রবল চুলকানি , রোগীর শরীর হইতে দুর্গন্ধ বাহির হয় । রোগী নিজেও গন্ধ পায় । চর্মপীড়া চাপা দেওয়া হইলে কষ্টকর শ্বাস প্রশ্বাস যুক্ত হাঁপানির আবির্ভাব হয় ।

গ্রাফাইটিসের লক্ষণ:-

ফিউলা ধাতুজনিত চক্ষু প্রদাহে । যখন কর্ণিয়াতে ( স্বচ্ছতুক ) প্রায়ই অগভীর ক্ষত হয় অথবা প্রদাহ উপস্থিত হয় , চক্ষুর পাতার ধারগুলি পুরু হয় এবং সেই  পুরুস্থানের উপর মামড়ি থাকে , চক্ষু কখনও জুড়িয়া যায় , কখনও যায় না , তখন ইহা উপকারী। চক্ষুর পাতার ধারগুলি ফাটিয়া যায় , সেখান হইতে রক্তপাত হয় ।  দৃষ্টি শক্তির গোলমাল - এক অক্ষর দুইবার দেখে মনে হয়, অক্ষরগুলি নড়িয়া চড়িয়া বেড়ায় ।  সেজন্য চক্ষু হইতে জল, পড়ে ও চক্ষু জ্বালা করে । অনেক সময় চক্ষুর জলের সহিত পূজ মিশ্রিত থাকে । এই পূজ পাতলা এবং যে স্থানে লাগে তথায় হাজিয়া যায় । সেই সঙ্গে যদি নাসিকা রন্ধ্রের চারিদিকেও ফাটিয়া যায় এবং সেখানে মামড়ি পড়ে এবং নাসিকা দিয়াও হাজাকারক স্রাব নির্গত হয়।  

স্ত্রীপীড়ায়:-
  • ইহার রোগিনী সুন্দরী , গৌরবর্ণা , মোটাসোটা। মোটাসোটা হইলেও দেহ ররক্তহীন ও দুর্বল , সামান্য কারণেই ঠাণ্ডা লাগে ও সর্দি হয় এবং প্রায়ই কোষ্ঠবদ্ধ থাকে , চর্ম  খসখসে হয় , উদ্ভেদ হইতে মধুর ন্যায় রস পড়ে । ঘামে অতিশয় দুর্গন্ধ প্রভৃতি লক্ষণে গ্রাফাইটিস ব্যবহেয়। 
স্তনের পীড়ায়:-
  • প্রসূতির স্তনের বোটা ফাটিয়া রক্ত পড়িলেও তথায় ক্ষত হইলে অথবা ক্ষত আরোগ্য হইবার পর ক্ষত চিহ্ন মধ্যে পুনরায় প্রদাহ ও যন্ত্রণা হইলে এবং শেষে ক্যানসারে পরিণত হইলে ও ভজন দুগ্ধ নিঃসৃত না হইলে ইহা উপযোগী ।
ঋতুস্রাব লক্ষণ: -
  • ঋতু অনেক বিলম্বে দেখা দেয় , ঋতুরোধ , পরিমাণে অল্প এবং ইহার বর্ণ যেন ফ্যাকাশে ও জনের মত নির্দিষ্ট সময়ে ঋতু হয় না । রোগিনী রক্তহীন কিন্তু দেখিতে মোটাসোটা । ঋতসাবের পূর্বে উদরের উর্বভাগে চুলকায় এবং রজঃস্রাবের সময়ে উহাতে ছিভিয়া ফেলামত ব্যথা হয় । রজঃস্রাবের সময় স্বর বসিয়া যায় , সর্দি কাশি ও ঘন হয় , প্রাতে গা বমি করে ।
শ্বেতপ্রদর:-
  • প্রচুর দুর্গন্ধ এবং পরিমাণে অধিক ও দুধের ন্যায় সাদা । যেখানে লাগে সেখানে হাজিয়া  যায় । ঋতুস্রাবের পরিবর্তে শ্বেতপ্রদরস্রাব দেখা যায় । বামদিকের ডিম্বকোষ ফোলে , কঠিন , স্পর্শ করা যায় না , হাত ছোয়াইলে বেদনা অনুভব হয় ।  
জরায়ু ও ডিম্বকোষের পীড়ায়:-
  • ডিম্বকোষদ্বয় বর্ধিত ও কঠিনতা প্রাপ্ত হয় , জরায়ু , ও ডিম্বকোষে স্পর্শানুভূতি । হাত উপরের দিকে অনেকটা তুলিলে জরায়ুতে যন্ত্রণা , জরায়ুর স্থানে নিচের দিকে ঠেলা মারা বেদনা । ইহা জরায়ুর ফুলকপির ন্যায় আঁচিল আরোগ্য করে , জরায়ু ক্যান্সার রোগের বৃদ্ধি দমন করে , ঐসব ক্ষেত্রে জ্বালা ও দুর্গন্ধ রক্তাক্ত স্রাব থাকে, ঋতুর পূর্বে যোনীদ্বারে ভীষণ চুলকানি । ঋতুকালে জননেন্দ্রিয়ের এবং দুই উরুর মধ্যবর্তী স্থানে সুস্পষ্ট হাজা ।
পুং জননেন্দ্রিয় পীড়ায়:-
  • প্রাফাইটিসের লক্ষণ - দুর্দমনীয় কামেচ্ছা , জননেন্দ্রিয়ের অত্যন্ত উত্তেজনা এবং রাত্রে স্বপ্নদোষ , উত্তেজনা এত প্রবল হয় যে , লিঙ্গ যোনী প্রবিষ্ট হওয়ার সাথে সাথে বীর্যপাত হইয়া যায় । হস্তমৈথুন ও অতিরিক্ত ইন্দ্রিয় চালনায় পরবর্তী ধ্বজভাঙ্গে ইহা অত্যন্ত উপযোগী । লিঙ্গাগ্রে হাজী ও ফাটিয়া যাওয়া , অণ্ডকোষের ও লিঙ্গের শোথ। অণ্ডকোষের উপর ভিজা উদ্ভেদ ও চুলকানি । মূত্ৰনলী পথে লালা মেহের ন্যায় চটচটে স্রাব।  
পাকাশয় পীড়া ও কোষ্ঠবদ্ধতায়:-
  • সকালবেলায় মুখে  দুর্গন্ধ , এমনকি কাঁচা ডিমের গন্ধ এবং রােগী উহা নিজেই অনুভব করে । মাংসাহার করিলে রােগী সহ্য করিতে পারে না । বিশেষতঃ মুখের গন্ধ ও উপর একপ্রকার সিস্টিক টিউমার ( আব খুব নরম ও তুলতুলে ) হয় তাহাতেও গ্রাফাইটিস উপকারী ।

সবিরাম জ্বর:-
  • জ্বর সকালে ৫টা , ৬টা অথবা ৭টায় এবং বিকাল ৪টা হইতে ৮টার মধ্যে কম্প হইয়া জ্বর আসে । শীতাবস্থায় পিপাসা থাকে না , শীতের সময় পা বরফের মত ঠাণ্ডা থাকে এবং রোগী গায়ে একবার শীত একবার জ্বালা অনুভব করে । উত্তাপাবস্থায় রাত্রে উত্তাপের সহিত ছটফটানি সেইজন্য বিছানায় থাকিতে পারে না বা নিদ্রাওঃ যাইতে পারে না । হাত পা খুব গরম ও অত্যন্ত জ্বালা অনুভব করে । সন্ধ্যার সময় উত্তাপ আরম্ভ হইয়া তাহা সারা রাত্রি থাকে সেই সঙ্গে মাথা ও ঘাড়ে ব্যথা । ঘর্মাবস্থায় রাত্রে প্রচুর পরিমাণে ঘর্ম হয় , সামান্য নড়িলে চড়িলে ঘর্ম হয়, ঘাম টক ও দুর্গন্ধযুক্ত । পায়ে দুর্গন্ধযুক্ত ঘর্ম এবং সেজন্য পা হাজিয়া যায় । জিহ্ব - মুখে অত্যন্ত দুর্গন্ধ , নিঃশ্বাসে যেন প্রস্রাবের গন্ধ , ঠোটে , নাকের আগায় ও নাসিকা ধারে বেদনা ও ফাটা ফাটা।

লিভার পীড়া:-  লিভার বড় ও উহা খুব শক্ত হওয়া , এত বেদনা যে তাহার উপর কাপড়ের ভার পর্যন্ত সহ্য করিতে পারে না । অথবা সেই ভারেই বেদনা ও যন্ত্রণা বৃদ্ধি পায় । সেই সঙ্গে কোষ্ঠবদ্ধ বা কোষ্ঠকাঠিন্য ।

স্ত্রীলোকদের মেদ:- যে সকল স্ত্রীলোকদের পেট খুব বড় হয় অর্থাৎ অনেকবার প্রসবের পর পেট খুব বড় হয় , এমনকি ঝুলিয়া পড়ে , তাহাদের পক্ষে ইহা উপযোগী ।

কোষ্ঠবদ্ধতায়:- কোষ্ঠবদ্ধতায় কঠিন মল। অর্ধসিদ্ধ ডিমের সাদা অংশের মত আমে আবৃত থাকে অথবা মলে আমের টুকরা দেখতে পাওয়া যায়। অত্যন্ত কোথ দিতে হয়, মলদ্বার ফাটা থাকে।মালবৃহৎ, কষ্ঠকর, গুটলে প্রকৃতির, যা শ্লেম্মাদ্বারা সংযুক্ত থাকে। জ্বালাকর অর্শ। সরলন্ত্রের স্থানচ্যুতি, উদরাময়, বাগামী বর্ণের তরল মল, মলের সঙ্গে অভুক্ত খাদ্যবস্তু মিশ্রিত থাকে, তীব্র, দুর্গন্ধযুক্ত, টক গন্ধ। মলত্যাগের সময় মলদ্বারে বেদনা, টাটানি ব্যথা ও চুলকায়। পিন্ডের মত মল, শ্লেম্মা সূতা দিয়ে সংযুক্ত থাকে। সরলন্ত্রের শিরা স্ফীতি। মলদ্বার ফাটা (রাটানহিয়া, পিয়োনিয়া)

প্রান্তদেশ:- ঘাড়ে , কাঁধে , পৃষ্ঠে এবং অঙ্গ প্রত্যঙ্গে বেদনা । মেরুদণ্ডে বেদনা , কটিদেশে বেদনা , তৎসহ অতিশয় দুর্বলতা , বাম হাত অবশ , বাহুদ্বয় নিষ্ক্রিয় হইয়া পড়ে । আঙ্গুলের নখ মোটা, নখের তলা স্ফীতি । নিম্নাঙ্গের স্ফীতি , পায়ের আঙ্গুলের নখ বিকৃত । হাতের আঙ্গুলের ডগা ফাটা ফাটা , পায়ে দুর্গন্ধ ঘর্ম ।

বুদ্ধি:- রাত্রিকালে , ঋতুস্রাবের সময়ে ও পরে , ঠাণ্ডা বাতাসে , উত্তাপে , আলোকে , স্নানে , বায়ু সেবনে , চুলকাইলে ।

উপশম:- মুক্ত বাতাসে , ভ্রমনের পর , বিশ্রামে , আহারান্তে , উষ্ণঃ দুগ্ধ পানে , স্পর্শে এবং চলন্ত রেল গাড়ীতে ( বধিরতা ) ।

সম্বন্ধযুক্ত:- চর্মরোগে সালফারের পর , স্থুলতা হ্রাসের জন্য ক্যালকেরিয়া কার্বের পর এবং প্রদর রোগে সিপিয়ার পর , ঋতুস্রাবে লাইকোপোডিয়াম ও পালসেটিলার পর , যুবতীদের প্রমেহ রোগে  ক্যালকেরিয়ার পর।

পরবর্তী ঔষধ:- গ্রাফাইটিসের লৌহের অংশ আছে। সেজন্য সকল পীড়ায় ইহার পর ফেরাম মেট উপকারী ।

অনুপূরক ঔষধ: - আর্সেনিক ও ফেরাম মেট ।
ক্রিয়ানাশক ঔষধ:- সুরাসার , একোনাই , আর্সেনিক , চায়না ।

ক্রিয়া স্থিতিকাল:- ৪০ হইতে ৫০ দিন ।

ব্যবহারের ক্রম:- ৬ হইতে ২০০ বা আরও উচ্চশক্তি । মলদ্বারে ও স্তনের ক্ষত রোগে ইহার ৩x বিচূর্ণ দ্বারা মলম প্রস্তুত করিয়া প্রয়োগ করা উচিত ।
Previous Post
Next Post

post written by:

DHMS (BHB), PDT and MBA

0 Comments: