Nux Vomica
 Nux Vomica_নাক্স ভূমিকা--  মহত্না হ্যানিমান ইহা আবিষ্কার করেন।

♣ কাতরতা-- শীতকাতর
♣ প্রতিশব্দ বা সমনামঃ-- নাক্স ভূমিকা অফিসিনেরম, স্ট্রাইকোনস কলুব্রিনা, এস নাক্স ভূমিকা, পয়াজন নাট।
♣ বাংলাদেশী নাম-- কুঁচিলা, কুপিলু, কাজরা, ক্যালাকুচ।
♣ মায়াজমঃ সোরিক, সাইকোটিক, টিউবারকুলার, সিফিলিটিক।
♣ সাইডঃ ডানপাশ, ওপরে ডানপাশ নিচে বামপাশ, ওপরে বামপাশ নিচে ডানপাশ, বামপাশ হতে ডানপাশ।

উৎস--পয়জন নাট বা কুঁচিলা হইতে এই ঔষধ প্রস্তুত হয়। লম্বায় দেড় হইতে ৪ ইঞ্চি এবং এক হইতে তিন ইঞ্চি প্রশস্ত হয়। শীত কালে এই সকল গাছে ছোট ছোট সবুজ ও সবুজ ও সাদা ফুল ফুটিয়া থাকে। শাখাগুলি এলোমেল। এর প্রত্যেক ফলে ১-৫ টি করে বীজ থাকে।  হোমিওপ্যাথিতে এর বীজবিচূর্ণ করে টিংচার প্রস্তুত হয়। সেই টিংচার থেকে শক্তিতে রুপান্তর করে ব্যবহার করা হয়।

♣ প্রাপ্তিস্থান-- বাংলাদেশ, ভারতের মালদহের জঙ্গলে, উড়িষ্যা, মালাবার ও করমগুলের প্রান্তে, সিংহল এবং ইষ্ট ইন্ডিজে এই সকল বৃক্ষ জন্মিয়া থাকে।

Nux Vomica
Nux Vomica

♣ প্রধান ক্রিয়াস্থান-- স্নায়ু ও পিত্ত ধাতু, জ্ঞান শক্তি, পুষ্টি সাধন, পাকাশয়, যকৃত, অন্ত্র, মূত্রাশয়, জরায়ু।

♣ রোগের উৎপত্তি-- অনেক দিন ধরিয়া গরম মসলা খাইয়া, গুরুপাক খাদ্যাদি আহার করিয়া, অধিক দিন ধরিয়া বেশী মাত্রায় বিভিন্ন ঔষধ সেবন করিয়া, কোকেন, আফিম, তামাক প্রভৃতি মাদক দ্রাব্যাদি ব্যবহার করিয়া কোন পীড়ার উৎপত্তি হইলে।

 প্রয়োগকাল-- সন্ধ্যাকালে সেবন করিলে নাক্স ভমিকার উত্তম ফল পাওয়া যায়।

 মনে রাখবেন নাক্স ভুমিকা এর অন্যতম তিনটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণঃ শীতকাতর ,  স্পর্শ কাতর , পরিচ্ছন্নতা।

নাক্স ভুমিকা হোমিওপ্যাথির এক অমূল্য সম্পদ। পান খাইতে চুন আর তরকারিতে যেমন লবণ লাগে তেমনি হোমিওপ্যাথিতে নাক্স আপরিহার্য মেডিসিন।  এটিকে হোমিওপ্যাথির পরশমণি বলা চলে। এটি দেহের প্রায় ৭৫% রোগ আরোগ্য করে থাকে। যখন আপনি দেখবেন রোগীর রোগ লক্ষণের প্রাকৃতিক লক্ষণ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। অর্থাৎ নানা প্রকার অপচিকিৎসার ফলে রোগীচিত্র বিক্ষিপ্ত হয়ে গেছে। নির্বাচন করতে পারছেন না কি দিবেন তখন বুঝবেন তাঁর দরকার একডোজ নাক্স ভূমিকা। এজন্য অনেকে  কথা নাই বার্তা নাই রোগী আসিবামাত্র নাক্স দিয়ে থাকেন সেটাও ঠিক না।

♣ নিজস্বকথাঃ
১। অতিরিক্ত মানসিক পরিশ্রম বা অতিরিক্ত ইন্দ্রিয়সেবা কিংবা অতিরিক্ত রাত জাগরণ জনিত অসুস্থতা।
২। বারম্বার মলত্যাগের ব্যর্থ প্রয়াস এবং মলত্যাগের পর উপশম বোধ।
৩। জিদ বা মনের দৃঢ়তা ঈর্ষাও হঠকারিতা ।
৪। শীতকাতরতা, স্পর্শকাতরতা ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা

♣ ধাতুগত লক্ষণঃ
এই ঔষধ স্ত্রীলোকদের চেয়ে পুরুষদের ক্ষেত্রে বেশী উপকারি। রোগী রাগী, সতর্ক, ঝগড়াটে, হিংসুক, খিটখিটে, পিত্ত বা রক্তপ্রধান, শীতকাতর, স্নায়বিক দুর্বল, সুরাপানাসক্ত, মাদকসেবী ও অলস ব্যক্তিদের পক্ষে বিশেষ উপযোগী। পরিশ্রম না করিয়া বসিয়া বসিয়া পড়াশোনা করে, মদ ও গরম মসলাযুক্ত মাংস ইত্যাদি গুরুপাক দ্রব্য প্রায় সেবন করে, যাহাদের  প্রায় কোষ্ঠবন্ধতা থাকে, প্রাতঃকালে কালে ঘুম হইতে উঠিবার পর ক্লান্তি অনুভূব করে।

♣ অদ্ভুদ লক্ষণঃ
 গলায় আঙুল দিয়ে বমি করে। 
 নিষ্ফল মলত্যাগের ইচ্ছা। 
 রোগী ডাক্তারকে বলে ওষুধ দিন বাহ্যে হয় যেন।

♣ মানসিক লক্ষণঃ
 অত্যান্ত মানসিক পরিশ্রম হেতু পীড়া। রোগী কাম ও ক্রোধের প্রতিচ্ছবি।
 রোগী অতি সহজেই রাগিয়া উঠে, হিংসা ও ঘৃণায় তাহার অন্তর পরিপূর্ণ থাকে।
 রোগী একাকী থাকিতে চায়। অত্যধিক মানসিক পরিশ্রম হেতু দুর্বলতা।
 অন্যের ভাল দেখিতে পারে না, নিজেকে খুবই গর্বিত মনে করে।
 সব সময় মনে করে নিজে যাহা করে তাহাই ঠিক, অন্যে যাহা করে তাহা ভূল।
 মনে হয় মাথাটি অত্যন্ত বড় হইয়া গিয়াছে।
 মসলাযুক্ত খাদ্য পছন্দ, ব্যয়াম পছন্দ করে না। কোন কাজ করিতে চায় না।

♣ চরিত্রতগ লক্ষণঃ
♣ রোগীর বার বার মল ত্যাগের চেষ্টা, কিন্তু পরিষ্কারভাবে মল ত্যাগ হয় না।
♣ উত্তেজক দ্রব্য আহার হেতু পীড়া। 
♣ অতিরিক্ত মানসিক পরিশ্রম, রাত্রি জাগরণ, মাদকদ্রব্য সেবনজনিত শরীরের প্রতি অত্যাচার হেতু শিরঃপীড়া। 
♣ সকাল বেলায় শিরঃপীড়া শুরু, দিনে বাড়িতে থাকে এবং সন্ধ্যা বেলায় কমে যায়। সেই সাথে কোষ্ঠবন্ধতা, টক বমি।
♣ খাওয়ার পরে পেট ফুলিতে থাকে, মুখে আস্বাদ, মুখে জল উঠা, পেটে বেদনা, পেট যেন পাথরের ন্যায় শক্ত, মুখে তিক্ত বা টক জল উঠে।
♣ সকাল বেলায় ও আহারের পর এবং ধুমপানে গা বমি বমি। মনে হয় বমি করিতে পারিলে একটু শান্তি হইবে।
♣ শেষ রাত্রের দিকে নিদ্রা ভঙ্গ হেইয়া নানা প্রকার চিন্তায় আচ্ছন্ন থাকে। আবার প্রভাত হেইলেই নিদ্রা আসে।
♣ পিঠে ও কোমরে বেদনা পাশ ফিরিলে তাহার বৃদ্ধি ঘটে।
♣ আহারের ২/১ ঘন্টার পর উদরশূল।
♣ একবার কোষ্ঠবন্ধতা, একবার উদরাময়। কোষ্ঠবন্ধতায় অতি কষ্টে স্বল্প মাত্র মল বাহির হয়।
♣ কাশি শুষ্ক এবং কষ্টদায়ক, ইহার সহিত তলপেট টাটাইয়া থাকে।
♣ দিনে নাক হইতে সর্দ্দি ঝরে কিন্তু রাত্রে বন্ধ থাকে।
♣ গায়ে অত্যান্ত তাপ, যেন গা জ্বলিয়া যাইবে। কিন্তু গায়ের কাপড় খুলিলেই শীত বোধ।
♣ মুখের অর্ধেক অংশে ঘাম।
♣ জিহবার প্রথম দিক পরিষ্কার কিন্তু শেষের দিকে ময়লা।
♣ গয়ারে পচা গন্ধ থাকে। খাদ্য, পানীয় সব কিছুতেই পচা গন্ধ বোধ হয়।
♣ মদ ও চর্বি জাতীয় খাদ্য খাওয়ার আকাঙ্খা।
♣ মুখে হাত বা আঙ্গুল টুকিয়ে দিয়ে বমি করিতে চায়। রোগী মনে করে বমি করিলে রোগের উপশম হবে। এবং বমি করিলে উপশম হয় ।

♣ প্রয়োগ ক্ষেত্রঃ
অর্শ পীড়া--অনবরত বাহ্যের ইচ্ছা ও বেগ, অথচ বাহ্যে খোলসা হয় না, এই লক্ষণসহ অর্শরোগে মলদ্বার হইতে রক্ত নির্গমন, মলদ্বারে অত্যন্ত কুটকুট করা ও চুলকানি থাকিলে নাক্স ভূমিকা উপযোগী 

লিভার পীড়া--লিভার স্ফীত, বড় এবং শক্ত, তাহাতে বেদনা, সময়ে সময়ে তথায় শূল বেদনার মত একপ্রকার বেদনা হয় ও তাহার সহিত জ্বার থাকে। নেশাখোর, অমিতচারী এবং যাহারা প্রায়ই জোলাপ ব্যবহার ও গুরুপাক দ্রব্যাদি ভোজন করে, তাহাদের পীড়ায় নক্স উপযোগী

অর্জীন, কোষ্ঠকাঠিন্য, উদরাময়, আমাশয়, হিক্কা, শূল বেদনা, মদ্য পানের মন্দ ফল, অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাদ্য ও অত্যধিক রতিক্রিয়ার মন্দ ফল, ন্যাবা, হার্নিয়া,  জ্বর পীড়া, প্রস্রাবের পীড়া, প্রমেহ, মুখে ব্রণ, সর্দি কাশি, স্ত্রী রোগে, হিষ্টিরিয়া, দন্ত ও কর্ণপীড়া, হাঁপানি, স্বপ্নদোষ।

♣ বিষক্রিয়া লক্ষণঃ
অধিক মাত্রায় সেবন করিলে ইহা মেরুদন্ডের উপর ক্রিয়া প্রকাশ করে। গ্রীবা ও চোয়ালের পেশীর আক্ষেপ উপস্থিত হয় এবং হাত পা কাঁপিতে থাকে। শ্বাস প্রশ্বাসে কষ্ট কোধ হয় কিছুক্ষণ পর অন্যান্য পেশীরও আক্ষেপ জন্মে। বেশি মাত্রায় সেবন করিলে ধনুস্টঙ্কার রোগের ন্যায় অবস্থা উপস্থিত হয়। চোয়াল শক্ত হইয়া হাত শক্ত হইয়া যায় এবং হাতের তালু মুষ্টিবন্ধ থাকে। বার বার আক্ষেপ হেতু শরীর দুর্বল হইয়া পড়ে, নাড়ী ক্ষীণ হয় বা কখনও শ্বাসরোধ হইয়া মৃত্যুমুখে পতিত হয়।

♣ বৃদ্ধি ও হ্রাস বা উপশমঃ [বৃদ্ধি] আহারের পর, মানসিক পরিশ্রমে, ক্রোধের ফলে, সকাল বেলায় নিদ্রার ব্যঘাত ঘটিলে, মানসিক আবেগে। [হ্রাস] সন্ধ্যাকালে, বিশ্রামের ফলে, উত্তাপে। 

♣ Modalities: [Worse], cold moist wind, cold food, cold washing, lying on painful side, motion, jar. [Better], warmth, dry weather.

♣ Modalities: [Worse], morning, mental exertion, after eating, touch, spices, stimulants, narcotics, dry weather, cold. [Better], from a nap, if allowed to finish it; in the evening, while resting in damp, wet weather (Caust.), hard strong pressure.

♣ পরবর্তী ঔষধঃ সালফার, পালসেটিলা, সিপিয়া, আর্সেনিক, বেলেডোনা, ব্রায়োনিয়া, লাইকোপোডিয়াম, কলচিকাম, রাসটক্স, ফসফরাস, কার্বোভেজ।

♣ ক্রিয়ানাশকঃ ক্যামোমিলা, ককুলাস, ক্যাম্ফার, কফিয়া, ওপিয়াম, থুজা, একোনাইট, আর্সেনিক, বেলেডোনা, পালসেটিলা।

♣ ক্রিয়াস্থিতিকাল : ১ হইতে ৭ দিন।
♣ ব্যবহার শক্তি : ১x হইতে ২০০ শক্তি।



Previous Post
Next Post

post written by:

DHMS (BHB), PDT and MBA

0 Comments: