আঁচিল

আঁচিল কি? 

আঁচিল এক প্রকার আব বা টিউমার। যাহা চর্মের উপরে জন্মে। ইহা ছোট, বড়, নিরেট, ফাটা, ফুলকপির মত, ফাটা ফাটা বা চলিত ভাষায় কাঠ আঁচিল, সুঁচাল এরুপ নানা গঠনে হয়ে থাকে। আঁচিলে কোন বেদনা থাকে না। কষ্ট থাকে না। দেখিতে বিশ্রি দেখায়। কোন কোন আচিঁলে রস ঝরতে ও রক্ত স্রাব হতে দেখা যায়।



হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় ব্যবহৃত ঔষধসমুহের লক্ষণ ভিত্তিক আলোচনা করা হল:


থুজা ( Thuja ): রোগীর আঁচিল যদি ফুলকপির মতো দানা দানা খাঁজ কাটা হয় তখন থুজা Thuja ব্যবহার করা যায়। থুুুুজার রোগীর মনে নানা প্রকার কাল্পনিক কল্পনা করে। থুজার রোগী মনে করে তাহার সর্বশরীর কাঁচ বা কাঠ দিয়ে তৈরি। যে কোন সময় এই দেহ ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যাবে। এই ভয়ে সব সময় সতর্ক হয়ে চলে। কখনো কখনো মনে করেন কেহ যেন তার পাশে শুয়ে আছে। কখনো কখনো মনে করেন তার আত্মা যেন তার থেকে পৃথক আছ। থুজার রোগীর বিশেষত্ব হচ্ছে স্ত্রী ও পুরুষের উপমাংশ স্হানে টাটানী ব্যাথা ও সামান্য স্পর্শে রক্ত স্রাব হয়। এই লক্ষণটি এসিড নাইট্রিকেও আছে। স্যাবাইনার রোগীর সাইকোসিসের দোষ যুক্ত ও স্ত্রী জননেন্দ্রিয়ে মলদ্বারে আঁচিল হয়। অসহ্য চুলকানি ও জ্বালাপোড়া থাকে। এই সমস্যা পুরুষের যৌনাঙ্গে হলেও ব্যবহৃত হয় থুজার পর স্যাবাইনা ব্যবহার হয়।


নাইট্রিক এসিড ( Nitricum Acidium): আবার রোগীর আঁচিল যদি ফুলকপির মতো দেখতে হয় কিন্তু নড়াচড়ায় আবার সামান্য লাগলেই রক্তপাত হয় তখন Nitricum Acidium ব্যবহার করতে হবে।


কষ্টিকাম ( Causticum): যদি রোগীর কাছে শুনা যায় বহুদিনের পুরাতন আঁচিল তাহা নরম আকারে ছোট আবার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র এবং দেখতে চেপ্টা, কিংবা সূচালো হয়, উহা সাধারণতঃ চোখের পাতায়, নাকের ডগায়, ঘারে, হাতের আংগুলে ও নখের ধারে হয় তখনি Causticum ব্যবহার্য তবে থুজার বিফলতায় কুষ্টিকাম।


ষ্ট্যাফেসাইগ্রিয়া ( Staphysagria): আবার যদি দেখা যায় কোন রোগীর পারদের অপব্যবহারের মাধ্যমে উৎপন্ন সাইকোটিক দোষযুক্ত ফুলকপির মতো বড় ধরণের আঁচিল বা উপমাংসের সহিত রোগীর একজিমা ও দাঁতের রোগ বর্তমান থাকে  Staphysagria ব্যবহারে ভাল কাজ করে।


সেবাইনা ( Sabaina): কোন শিশু রোগীর শরীরে এবং মুখ মন্ডলে গুড়ি গুড়ি আঁচিল হয় তৎসংগে আঁচিলের ভিতর হতে ভাতের মতো পদার্থ বের হয় রোগী বা শিশুর মা-বাবা যদি বলে তবে সেবাইনা ভাল কাজ করে থাকে। আর যদি সেবাইনা ব্যবহারে সম্পূর্ণ ভাবে আঁচিল আরোগ্য লাভ না করে তবে কুষ্টিকামে অব্যর্থ ফল পাবেন। আবার কোন রোগীর যদি মাথায় ফুলকপির মত আঁচিল হয় অন্য কোন ঔষধের প্রয়োজন পরে না। থুজা ব্যবহার করলেই যথেষ্ট ফল পাওয়া যায়।


আচিঁলের ঔষধ নির্বাচনের সহজ গাইড লাইন:

  • প্রদাহিত আচিঁল- ক্যালকেরিয়া কার্ব, কষ্টিকাম, নাইট্রিক এসিড, সিপিয়া, সাইলেসিয়া, ষ্ট্যাফিসেগ্রিয় ইত্যাদি।
  • আচিঁলে সহাজই রক্তপাত হয়-  সিনাবেরিস, এডি নাই, থুজা ইত্যাদি।
  • ক্ষত যুক্ত আচিঁল-  আর্সেনিক এলবম, কষ্টিকাম, হিপার সালফ, সাইলেসিয়া, থুজা ইত্যাদি।
  • চ্যাপ্টা আচিঁল-  ডল্কামারা, ল্যাকেসিস।
  • দন্ত যুক্ত আচিল-এন্টিম ক্রুড, এসিড ফস, গ্রাফাইটিস, এসেটিক এসিড, সিপিয়া, থুজা।
  • বৃন্ত যুক্ত আচিঁল- কষ্টি, ডল্কা, লাইকো, থুজা ইত্যাদি।
  • বৃহৎ আচিঁল=কষ্টি, ডল্কা, এসিড নাই, সিপিয়া ইত্যাদি।
  • ক্ষুদ্র আচিঁল-  ক্যালকেরিয়া কার্ব, এসিড নাই, সার্সাপেরিলা, সিপিয়া, থুজা ইত্যাদি
  • মুখ মন্ডলে আচিঁল-  কষ্টি, ডল্কা, এসিড নাই, সিপিয়া, থুজা ইত্যাদি।
  •  চক্ষুপল্লবে-  এসিড নই।
  •  নাকের উপর-  কষ্টি, থুজা ইত্যাদি।
  •  জিহ্বা আচিঁল-  অরাম মিউর, থুজা ইত্যাদি।
  • গ্রীবায় আচিঁল-  এসিড নাই।
  • বাহুর উপর আচিঁল-  ক্যালকেরিয়া ফস, এসিড নাই, সিপিয়া সালফার ইত্যাদি
  • হাতের আচিঁল- ক্যালকেরিয়া ফস, এসিড নাই, লাইকো, সিপিয়া, সালফার, থুজা ইত্যাদি।
  • করতলে আচিঁল- এনাকার্ডিয়াম ওরি, নেট্রাম মিউর ইত্যাদি।
  • আঙ্গুলে আচিঁল- বার্বারিস, ক্যাল, কষ্টি, নেট্রাম মিউর, এসিড এসেটিক, রাসটক্স, সিপিয়া, সালফার, থুজা ইত্যাদি।
  • বৃদ্ধ আঙ্গুলিতে আচিঁল-  ল্যাকেসিস।
  • প্রেপুসের উপর আচিল-  সিনাবেরিস, ষ্ট্যাফিসেগ্রিয়া, থুজা ইত্যাদি।
  • থুতনিতে আঁচিলের সদৃশ ঔষধ-   লাইকোপোডিয়াম, থুজা অক্সিডেন্টাল ইত্যাদি
  • লিঙ্গ মুণ্ডে- এসিডনাই, এসিড ফস, থুজা ইত্যাদি।
  • স্ত্রীজননেন্দ্রিয়ে আচিঁল-  এসিড নাই , ষ্ট্যাফি, থুজা ইত্যাদি।


Previous Post
Next Post

post written by:

DHMS (BHB), PDT and MBA

3 comments: