জীববিজ্ঞান, বিজ্ঞানের যে শাখায় জীবের গঠন, জৈবনিক ক্রিয়া এবং জীবন ধারণ সম্পর্কে সম্যক বৈজ্ঞানিক জ্ঞান পাওয়া যায় তাকেই জীববিজ্ঞান বলে ।
জীববিজ্ঞান বিজ্ঞানের একটি শাখা যেখানে জীব ও জীবন সংক্রান্ত গবেষণা করা হয়। তাদের গঠন, বৃদ্ধি, বিবর্তন, শ্রেণীবিন্যাসবিদ্যার আলোচনাও এর অন্তর্ভুক্ত। আধুনিক জীববিজ্ঞান খুব বিস্তৃত একটি ক্ষেত্র, যেটির অনেক শাখা-উপশাখা আছে।
আধুনিক জীববিজ্ঞান বলে, কোষ হচ্ছে জীবনের মূল একক, আর জিন হলো বংশগতিবিদ্যার মূল একক। আর বিবর্তন হলো একমাত্র প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে নতুন প্রজাতির জীব সৃষ্টি হয়।
বংশগত বা বংশগতভাবে পিতা-মাতার বৈশিষ্ট্য সন্তানসন্ততিতে অতিক্রম হয় অর্থাৎ সন্তানের কোষগুলি তাদের বৈশিষ্ট্য এবং বৈশিষ্ট্যগুলি ওরফে জিনগত তথ্যগুলি তাদের মা এবং বাবার কাছ থেকে পেয়ে থাকে।
সহজ ভাষায়, বংশগতি বলতে পিতামাতার কাছ থেকে তাদের সন্তানের মধ্যে জিনের মাধ্যমে বৈশিষ্ট্য অতিক্রম করাকেই বুঝায়।
বংশগতি মূলত নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য এবং জিনগত বৈশিষ্ট্যগুলি এক প্রজন্ম থেকে অন্য প্রজন্মের দিকে চলে যাচ্ছে। জিনগুলি কোনও ব্যক্তির চেহারা কেমন হবে তা নির্ধারণ করে, তার বুদ্ধি, চুলের রঙ ইত্যাদি। সুতরাং, সংক্ষেপে বলতে গেলে, আপনার রক্তরেখার মধ্য দিয়ে যে পারিবারিক বৈশিষ্ট্যগুলি চলে তা বংশগতি হিসাবে পরিচিত।
বংশগতি জিন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। বংশগতি ভাগ্য, এক প্রকার পূর্বনির্ধারিত। আধুনিক চিকিৎসা অনুসন্ধান ফলাফল প্রমাণ করেছে যে কিছু রোগ বংশগতভাবে উপস্থিত।
শিশুরা পিতামাতার কাছ থেকে ডিওকাইরিবোনুক্লিক অ্যাসিড (ডিএনএ) সমন্বিত জিনগুলির উত্তরাধিকারী হয় এবং পিতামাতার কিছু বৈশৈষ্ট্য সন্তানসন্তিতে থাকতে পারে, যেমন: নীল, বাদামী চোখ ইত্যাদি।
বংশগতির কিছু উদাহরণ:
বংশগতি চোখের রঙ, ত্বকের রঙ, ফ্রিকলস, ডান বা বাম হাত, রক্তের ধরণ এবং উচ্চতার মতো বৈশিষ্ট্যগুলি নিয়ন্ত্রণ করে। মানুষের মধ্যে কিছু বংশগত রোগ যেমন: বর্ণভ্রষ্টতা, দূরদৃষ্টি, দূরদৃষ্টি ইত্যাদি।
বংশগতি বিদ্যা কাকে বলে?
জীববিজ্ঞানের যে শাখায় বংশগতি সম্বন্ধে বিশদভাবে আলোচনা করা হয় তাকেই বংশগতি বিদ্যা বলে।
জীববিজ্ঞানকে দুইটি শাখাতে ভাগ করা যায় যথাঃ
- উদ্ভিদবিজ্ঞান (Botany)
- প্রাণিবিজ্ঞান (Zoology)
জীবের কোন দিক আলোচনা করা হয়েছে তার উপর ভিত্তি করে জীববিজ্ঞানকে আবার দুইটি ভাগে ভাগ করা যায় যথাঃ
- ভৌত জীববিজ্ঞান (Physical Biology)
- ফলিত জীববিজ্ঞান (Applied Biology)
ভৌত জীববিজ্ঞানঃ (Physical Biology)
ভৌত জীববিজ্ঞান শাখায় তত্ত্বীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়।
জীববিজ্ঞানের যে শাখায়, জীবের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য, রীতি, আজরণ, অঙ্গ ট্যাক্সোনমি ইত্যাদি তাত্ত্বিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয় তাকে ভৌত জীববিজ্ঞান বলে। যেমন অঙ্গসংস্থান বিদ্যা। এখানে শুধু জীবের বিভিন্ন অঙ্গের তাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য উৎপত্তি ও বিবর্তন গঠন ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করা হয়। ভৌত জীববিজ্ঞান জীবের অঙ্গসংস্থান, ট্যাক্সোনমি, শারীরবিদ্যা, হিস্টোলজি, ভ্রুনবিদ্যা, কোষবিদ্যা, বংশগতিবিদ্যা, বিবর্তন, বাস্তুবিদ্যা, এন্ডোক্রোইনোলজি, জীবভূগোল, ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করে।
নিম্নে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য শাখার কথা উল্লেখ করা হলো –
১। অঙ্গসংস্থান (Morphology) : এখানে জীবের সার্বিক অঙ্গসংস্থানিক বা দৈহিক গঠন বর্ণনা করা হয় দেশের বাইরের বর্ণনার বিষয়কে বহিরঙ্গ সংস্থান এবং দেহের ভিতরের বর্ণনার অন্ত অঙ্গসংস্থান বলা হয়।
২। শ্রেণিবিন্যাসবিদ্যা বা ট্যাক্সোনমি (Taxonomy) : এখানে জীবের শ্রেণীবিন্যাস ও তার রীতিনীতি গুলো আলোচনা করা হয়।
৩। শরীর বিদ্যা (Physiology) : জীবদেহের নানা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের জৈব-রাসায়নিক ,কার্যক্রম যেমন সরণ সালোকসংশ্লেষণ ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করা হয়।
৪। হিস্টলজি (Histology) : জীব দেহের টিস্যুসমূহকে গঠন বিন্যাস এর সম্পর্কে আলোচনা করা হয়।
৫। ভ্রূণবিদ্যা (Embroyology ) : জনন কোষের উৎপত্তি জনন কোষের উৎপত্তি নিষিক্ত জাইগোট থেকে ভ্রূনের সৃষ্টি ,গঠন বিকাশ ,প্রভৃতির নিয়ে শাখায় আলোচনা করা হয়েছে।
৬। কোষবিদ্যা (Cytology) : জীবদেহের গঠন কার্যাবলী ও বিভাজন সম্পর্কে আলোচনা করা হয়।
৭। বংশগতিবিদ্যা বা জেনেটিক্স (Genetics) :জিন ও জীবের বংশগতি ধারা সম্পর্কে এর শাখায় আলোচনা করা হয়।
৮। বিবর্তন বিদ্যা (Evolution) : পৃথিবীতে প্রাণের বিকাশ ও জীবের বিবর্তন এবং ক্রমবিকাশের তথ্যসমূহের আলোচনা করা হয় ।
৯। বাস্তুবিদ্যা (Ecology ) : শাখায় প্রাকৃতিক পরিবেশের সাথে জীবের আন্তঃসম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করা হয়।
১০।এন্ডোক্রাইনোলজি (Endrocrinology) : জীবদেহে আলোচনা করা হয় এর শাখায়।
১১। জীবভূগোল (Biogeography) : পৃথিবীর বিভিন্ন ভৌগোলিক সীমারেখা জীবের বিস্তৃতি ও অভিযোজন সম্পর্কে আলোচনা করা হয়।
ফলিত জীববিজ্ঞানঃ (Applied Biology)
জীববিজ্ঞানের যে শাখায় জীব সংশ্লিষ্ট প্রায়োগিক বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হয় সেই শাখাটিকে ফলিত জীববিজ্ঞান বলে।
জীববিজ্ঞানের যে শাখায় জীব সংশ্লিষ্ট প্রায়োগিক বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হয় সেই শাখাটিকে ফলিত জীববিজ্ঞান বলে । অথাৎ জীববিজ্ঞানের যে শাখায় জীবের নানা তত্ত্বের প্রয়োগ, জীবকে কাজে ব্যবহার, জীবজ উপাদান সংগ্রহ, চাষ, পরিচর্যা ও উৎপাদন ও ব্যবহার নিয়ে আলোচনা করে থাকে তাকে ফলিত জীববিজ্ঞান বলে। যেমনঃ চিকিৎসাবিজ্ঞান, কৃষিবিজ্ঞান, জীবপ্রযুক্তি ইত্যাদি ।
নিম্নে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য শাখার কথা উল্লেখ করা হলো –
১। জীবাশ্মবিজ্ঞান (Palaeontology ) প্রাগৈতিহাসিক জীব এর বিবরণ এবং জীবাশ্ম সম্পর্কিত বিজ্ঞান সম্পর্কে আলোচনা করা হয়।
২। জীবপরিসংখ্যানবিদ্যা ( Biostatistics ) জীবপরিসংখ্যান বিষয়ক বিজ্ঞান সম্পর্কে আলোচনা করা হয়।
৩।পরজীববিদ্যা (Parasitology): পরজীবিতা পরজীবী জীবের জীবন প্রণালী এবং রোগ সম্পর্কে আলোচনা করা হয় এই শাখায়।
৪। মৎস্যবিজ্ঞান (Fisheries): মাছ মাছ উৎপাদন মৎস্য সম্পদ ব্যবস্থাপনা ও সংরক্ষণ সম্পর্কে আলোচনা করা হয়।
৫। কীটতত্ত্ব( Entomology) : উপকারিতা-অপকারিতা ইত্যাদি সম্পর্কিত বিজ্ঞান।
৬। অণুজীববিজ্ঞান (Microbiology) :ভাইরাস ব্যাকটেরিয়া আণুবীক্ষণিক ছত্রাক এবং অন্যান্য অনুজীব সম্পর্কিত বিজ্ঞান।
৭। কৃষিবিজ্ঞান (Agriculture) : কৃষি বিষয়ক বিজ্ঞান।
৮। চিকিৎসা বিজ্ঞান ( Medical Science ): মানবদেহে রোগ চিকিৎসা ইত্যাদি সম্পর্কিত বিজ্ঞান
৯।জিন প্রযুক্তি (Genetic ):প্রযুক্তি ও এর ব্যবহার সম্পর্কিত বিজ্ঞান।
১০। প্রাণরসায়ন ( Biochemistry): জীবের প্রাণরাসায়নিক কার্যপ্রণালী রোগ ইত্যাদি সম্পর্কিত বিজ্ঞান।
১১। জিন প্রযুক্তি ( Genetic Engineering ) :প্রযুক্তি ও এর ব্যবহার সম্পর্কিত বিজ্ঞান।
১২।পরিবেশ বিজ্ঞান ( Environmental Science): পরিবেশ সম্পর্কিত বিজ্ঞান।
১৩। সামুদ্রিক জীববিজ্ঞান (Oceanography): সামুদ্রিক জীব সম্পর্কিত বিজ্ঞান।
১৪। বনবিজ্ঞান (Forestry): বন বন সম্পদ ব্যবস্থাপনা, এবং সংরক্ষণ সম্পর্কিত বিজ্ঞান।
১৫ । ফার্মেসি (Pharmacy): ওষুধ শিল্প ও প্রযুক্তি বিষয়ক বিজ্ঞান।
১৬। জীবপ্রযুক্তি (Biotechnology): মানব এবং পরিবেশের কল্যাণের জীব ব্যবহারের প্রযুক্তি সম্পর্কিত বিজ্ঞান।
১৭। বন্যপ্রাণীবিদ্যা ( Wildlife ) :বন্যপ্রাণী বিষয়ক বিজ্ঞান।
১৮। বায়োইনফরমেটিক্স (Bioinformation ): কম্পিউটার, প্রযুক্তি নির্ভর জীব বিজ্ঞান ভিত্তিক তথ্য যেমন ক্যান্সার বিশ্লেষণ বিষয়ক বিজ্ঞান।
জীববিজ্ঞান পাঠের প্রয়োজনিয়তাঃ
জীববিজ্ঞানের প্রাথমিক কথাই হল জীবন ।বিজ্ঞানের অন্য কোন বিষয় জানার আগে নিজেকে রক্ষার তাগিদে প্রানী ও উদ্ভিদ সম্পর্কে মানুষের জ্ঞান অর্জন করতে হয় ।নিম্নে বিশেষ কয়েকটি ক্ষেত্রে জীববিজ্ঞান পাঠের প্রয়োজনিয়তা আলোচনা করা হলঃ
🌱। অন্যান্য জীবের ন্যায় মানুষ ও জীববিজ্ঞানের আলোচ্য বিষয় ।তাই নিজের সম্পর্কে জানতে হলে জীববিজ্ঞান পাঠ করতে হবে।
🌱।জীববিজ্ঞান পাঠে জেনেটিক ও বংশধারার বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জ্ঞানলাভ করা যায়। এই জ্ঞানের সাহায্যেই উদ্ভিদ প্রজননবিদরা উন্নত জা্তের শস্য উদ্ভাবন করেছেন। নতুন জাতের ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য এবং কৃষিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের জন্য আমাদের জীববিজ্ঞান পাঠ করা প্রয়োজন।
🌱।জীববিজ্ঞানের ফলিত শাখা কৃষিবিজ্ঞান ও প্রাণী প্রজননের মাধমে গো সম্পদ উন্নয়ন ও উন্নত জাতের গবাদি পশু উদ্ভাবন সম্ভব হয়েছে। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার সহিত খাদ্যউতপাদন ও পশু সম্পদের উন্নয়নের লক্ষ্যে জীববিজ্ঞানের জ্ঞান থাকা একান্ত প্রয়োজন।
🌱।উদ্ভিদ জগত হতে আমাদের নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রী যেমন বন হতে কাষ্ঠ কাগজ তৈরির উপাদান ,কাপড় তৈরির জন্য তুলা ,বন হতে মধু ,মোম ,প্রাণী জগত হতে পাই বিভিন্ন প্রানীর চর্বি ও তৈল , রেশম প্রভৃতি।জীববিজ্ঞান পাঠে এই সকলের উন্নতি সম্পর্কে আমরা জ্ঞান লাভ করতে পারি।
🌱। জীববিজ্ঞানের জ্ঞানের সাহায্যে চিকিৎসা বিদ্যায় ব্যবহৃত বিভিন্ন ওষধপত্র উদ্ভিদ প্রাণী জগত হতে আহরণ সম্ভবপর হয়েছে ।ইহা ছাড়া ছত্রাক জাতীয় উদ্ভিদের দেহ হতে পেনিসিলিন , স্টেপ্টোমাইসিন ,ক্লোরোমাইসিটিন প্রভৃতি ওষধপত্র আবিষ্কার সম্ভবপর হয়েছে। জীববিজ্ঞানের জ্ঞানের দ্বারাই শারীরবিদ্যা পাঠের মাধ্যমে চিকিৎসা শাস্ত্রের প্রয়োজনীয় অধ্যায় শল্যবিদ্যা সম্ভব হয়েছে।
🌱। জীবজগত সম্পর্কে মানুষকে ক্বতহলি করার প্রয়াসে ,জীববিজ্ঞানের উৎকর্ষ সাধনে ,প্রকৃতির ভারসাম্য বজায় রাখতে ,ফসলের প্রাচুর্যে দেশকে ভরিয়া তোলার জন্য, পরমাণু লাভের মানসে ,মানব জীবন সুখময় করার লক্ষে জীববিজ্ঞান পাঠ করা ও জ্ঞান লাভ করা একান্তই প্রয়োজন।
ভৌত জীববিজ্ঞান ও ফলিত জীববিজ্ঞানের মধ্যে পার্থক্যঃ
১। জীববিজ্ঞানের যে শাখায় তত্ত্বীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয় তাকে ভৌত জীববিজ্ঞান বলে । যেমনঃ শরীরবিদ্যা, ভ্রূণবিদ্যা, কোষবিদ্যা ইত্যাদি । অন্যদিকে জীববিজ্ঞান’র যে শাখায় জীব সংশ্লিষ্ট প্রায়োগিক বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হয় সেই শাখাটিকে ফলিত জীববিজ্ঞান বলে । যেমনঃ চিকিৎসাবিজ্ঞান, কৃষিবিজ্ঞান, জীবপ্রযুক্তি ইত্যাদি ।
২। ভৌত জীববিজ্ঞানে তত্ত্বীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়। অন্যদিকে ফলিত জীববিজ্ঞানে জীব সংশ্লিষ্ট প্রায়োগিক বিষয়সমূহ নিয়ে আলোচনা করা হয়।
৩। ভৌত জীববিজ্ঞানে জীবদেহের অঙ্গপ্রত্যঙ্গের জৈব রাসায়নিক কার্যাদি যেমন- শ্বসন, রেচন ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করা হয়। অন্যদিকে ফলিত জীববিজ্ঞানে রোগ, চিকিৎসা ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করা হয়।
৪। জিন ও জীবের বংশগতি ধারা ভৌত জীববিজ্ঞানে আলোচ্য বিষয়। অন্যদিকে জিনপ্রযুক্তি ও এর ব্যবহার ফলিত জীববিজ্ঞানে আলোচ্য বিষয়।
৫। ভৌত জীববিজ্ঞান জীবের অঙ্গসংস্থান, ট্যাক্সোনমি, শারীরবিদ্যা, হিস্টোলজি, ভ্রুনবিদ্যা, কোষবিদ্যা, বংশগতিবিদ্যা ,বিবর্তন,বাস্তুবিদ্যা, এন্ডোক্রোইনোলজি,জীবভূগোল, ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করে। অন্যদিকে জীবের নানা তত্ত্বের প্রয়োগ, জীবকে কাজে ব্যবহার, জীবজ উপাদান সংগ্রহ, চাষ, পরিচর্যা ও উৎপাদন ও ব্যবহার নিয়ে আলোচনা করে থাকে তাকে ফলিত জীববিজ্ঞান।
ক্যারোলাস লিনিয়াস এর সময়কাল থেকে শুরু করে বিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত জীবজগতকে উদ্ভিদজগৎ এবং প্রাণীজগৎ হিসেবে বিবেচনা করে দুটি রাজ্যে(Kingdom) শ্রেণীবিন্যাস করা হতো। বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রায় বর্তমানে কোষের DNA এবং RNA- এর প্রকারভেদ, জীবদেহে কোষের বৈশিষ্ট্য, কোষের সংখ্যা ও খাদ্যাভ্যাসের তথ্য-উপাত্তের উপর জীবজগতের পাঁচটি রাজ্যের ভিত্তি করে আর.এইচ.হুইটেকার (R.H. Whittaker) 1969 সালে জীবজগতকে পাঁচটি রাজ্য বা ফাইভ কিংডম এ ভাগ করার প্রস্তাব করেন।
- উদাহরণ- রাইজোবিয়াম, নিউমোকক্কাস।
- কোষের প্রকৃতি ও সংখ্যা- এককোষী
- নিউক্লিয়াসের গঠন- ক্রোমোটিন বস্তু থাকে। নিউক্লিওলাস ও নিউক্লিয়ার পর্দা নেই।
- সাইটোপ্লাজমীয় অঙ্গানুসমূহ- প্লাস্টিড, মাইটোকন্ড্রিয়া, এন্ডোপ্লাজমিক জালিকা ইত্যাদি নেই, কিন্তু রাইবোজোম আছে।
- কোষ বিভাজন- দ্বিবিভাজন প্রক্রিয়ায়।
- খাদ্যাভ্যাস- শোষণ, সালোকসংশ্লেষণ পদ্ধতি।
- জনন পদ্ধতি- যৌন জনন।
- ভ্রুণ গঠন-
- উদাহরণ- আমাশয়ের জীবাণু, স্পাইরোগাইরা।
- কোষের প্রকৃতি ও সংখ্যা- এককোষী বা বহুকোষী।
- নিউক্লিয়াসের গঠন- নিউক্লিয়ার মেমব্রেন, নিউক্লিয়ার রন্ধ্র, নিউক্লিওলাস, নিউক্লিওপ্লাজম, নিউক্লিয়ার রেটিকুলাম।
- সাইটোপ্লাজমীয় অঙ্গানুসমূহ- DNA, RNA.
- কোষ বিভাজন- মাইটোসিস।
- খাদ্যাভ্যাস- শোষণ, গ্রহণ বা ফটোসিনথেটিক পদ্ধতি।
- জনন পদ্ধতি- যৌন ও অযৌন পদ্ধতি।
- ভ্রুণ গঠন- হয় না।
- উদাহরণ- মিউকর, অ্যাগারিকাস।
- কোষের প্রকৃতি ও সংখ্যা- এককোষী।
- নিউক্লিয়াসের গঠন- নিউক্লিয়ার মেমব্রেন, নিউক্লিয়ার রন্ধ্র, নিউক্লিওলাস, নিউক্লিওপ্লাজম, নিউক্লিয়ার রেটিকুলাম।
- সাইটোপ্লাজমীয় অঙ্গানুসমূহ-
- কোষ বিভাজন- মিয়োসিস।
- খাদ্যাভ্যাস- শোষণ পদ্ধতি।
- জনন পদ্ধতি-
- ভ্রুণ গঠন- হ্যাপ্লয়েড স্পোর পদ্ধতি।
- উদাহরণ- আমগাছ, সাইকাস।
- কোষের প্রকৃতি ও সংখ্যা-
- নিউক্লিয়াসের গঠন- নিউক্লিয়ার মেমব্রেন, নিউক্লিয়ার রন্ধ্র, নিউক্লিওলাস, নিউক্লিওপ্লাজম, নিউক্লিয়ার রেটিকুলাম।
- সাইটোপ্লাজমীয় অঙ্গানুসমূহ-
- কোষ বিভাজন-
- খাদ্যাভ্যাস-
- জনন পদ্ধতি- যৌন জনন।
- ভ্রুণ গঠন- ডিপ্লয়েড পর্যায়ে ভ্রুণ সৃষ্টি হয়।
- উদাহরণ- দোয়েল, শামুক,।
- কোষের প্রকৃতি ও সংখ্যা- বহুকোষী প্রাণী।
- নিউক্লিয়াসের গঠন- নিউক্লিয়ার মেমব্রেন, নিউক্লিয়ার রন্ধ্র, নিউক্লিওলাস, নিউক্লিওপ্লাজম, নিউক্লিয়ার রেটিকুলাম।
- সাইটোপ্লাজমীয় অঙ্গানুসমূহ-
- কোষ বিভাজন-
- খাদ্যাভ্যাস- হেটারোট্রাফিক/পরভোজী।
- জনন পদ্ধতি- যৌন জনন।
- ভ্রুণ গঠন- হ্যাপ্লয়েড ও ডিপ্লয়েড পর্যায় থেকে ভ্রুণ সৃষ্টি হয়।
0 Comments: