কানের সমস্যায় হোমিও চিকিৎসাঃ
কানে পানি যাওয়া, ঠান্ডা লাগা, কাঠি দিয়ে কান খোঁচানো, আঘাত লাগা, প্রদাহ, হাম জ্বর বসন্তাদির পর কানে পুঁজ হওয়া, বধিরতা।
Arnica Mont: কানে কটন বাড প্রবেশ করানো বা কোন আঘাত থকে উপসর্গের উৎপত্তি হলে নতুনদের জন্য ৩x-৩০, পুরাতন অবস্থায় ২০০- ১০এম।
Tellurium: নতুন পুরাতন কান পাকা। লালচে পাতলা পানি, ভীষণ দূর্গন্ধ। নতুনদের জন্য ৬-৩০ শক্তি, পুরনো হলে ২০০ থেকে উচ্চশক্তি।
Chamomilla: রুক্ষ মেজাজী শিশু, খিটখিটে স্বভাব, গালাগালি, ঝগড়াঝাটি, কান্নাকাটি ক্যামোমিলার চরিত্র। এমন রোগীদের কান ব্যথায় ৬-২০০ ফলপ্রদ।
Cal.Pic: কানের ভিতর ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ফোঁড়ার মত উদ্ভেদ, ব্যথা। ৩x-৬ শক্তি।
Psorinum: যেকোন কান পাকায়, দূর্গন্ধযুক্ত হলুদ বর্ণের পুঁজ, কানে চুলকানি, প্রস্রাব-পায়খানা বা ঘামে দূর্গন্ধ, অপরিস্কার নোংরা, শীতকাতর রোগীদের ঔষধ। ২০০-উচ্চক্রম।
Merc.Sol: রাতে রোগ লক্ষণ বৃদ্ধি, হলুদ বা সবুজ পুঁজ, লালচে পানি। ২০০-১এম।
Plantego, Mulen Oil: ঔষধ দু’টি Q শক্তি বাহ্যিক ব্যবহার্য্য।
বায়োকেমিকঃ
Ferrum Phos, Mag Phos: ব্যথার ক্ষেত্রে গরম জলে সেব্য। ৬xশক্তি।
Cal.Sulph, Silicea: কান পাকা বা পাতলা স্রাবে ১২x-২০০x, হোমিওপ্যাথি ২০০-১এম।
★কানের পর্দা ফেটে গেলে করনীয়----
কানের ভেতরের দিকে একটি পর্দার মতো থাকে, যা টিমপ্যানিক মেমব্রেন নামে পরিচিত। মধ্যকর্ণ থেকে অন্তঃকর্ণের মাঝখানে এটি পর্দা হিসেবে থাকে। এটি খুবই স্পর্শকাতর, শব্দতরঙ্গ কানের পর্দায় কম্পন তৈরি করে। এই কম্পন মধ্যকর্ণের ছোট ছোট হাড়ের মাধ্যমে অন্তঃকর্ণে পৌঁছায়। অতঃপর অন্তঃকর্ণ থেকে মস্তিষ্কে পৌঁছায়। এভাবে আমরা শুনতে পাই।
কিন্তু বহু কারণে এই পর্দা ফেটে যেতে পারে, ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, ছিঁড়ে যেতে পারে। এতে শুনতে অসুবিধা হয়, কখনো কখনো শ্রবণশক্তি পুরোপুরি লোপ পায়। কানের পর্দা ফেটে গেলে বা ক্ষতিগ্রস্ত হলে মধ্যকর্ণে ইনফেকশন হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়।

কানের পর্দা বিভিন্ন কারণে ফাটতে পারে বা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। যেমন-
১.কানের কোনো অসুখ যেমন-মধ্যকর্ণে ক্রনিক সাপোরেটিভ অটাইটিস মিডিয়া হলে
২. কোনো কিছু দিয়ে কান খোঁচালে। যেমন-কটন বাড।
৩.কানে কোনো কিছু প্রবেশ করলে এবং অদক্ষ হাতে তা বের করার চেষ্টা করলে
৪.দুর্ঘটনা বা আঘাতে কান ক্ষতিগ্রস্ত হলে
৫.হঠাৎ কানে বাতাসের চাপ বেড়ে গেলে। যেমন-থাপ্পড় মারা, বোমা বিস্ফোরণ, অতি উচ্চ শব্দের শব্দ ইত্যাদি কারণে
৬.পানিতে ডাইভিং বা সাঁতার কাটার সময় হঠাৎ পানির বাড়তি চাপের কারণে পর্দায় চাপ পড়লে
৭. কানের অন্য অপারেশনের সময়ও কানের পর্দা ক্ষতিগ্রস্ত হলে
৮.যাদের কানের পর্দা আগে থেকেই দুর্বল বা ক্ষতিগ্রস্ত, তাদের ক্ষেত্রে নাক চেপে কানে বাতাস দিয়ে চাপ দিলে।

১.প্রথমে তীব্র ব্যথা অনুভূত হয়, যা পরবর্তী সময়ে কমে আসে
২.কান দিয়ে রক্ত পড়া। বিশেষ করে আঘাতজনিত কারণে কানের পর্দা ফেটে গেলে কান দিয়ে রক্ত পড়তে পারে
৩.কানে কম শোনা
৪.মাথা ঘোরানো বা ভার্টিগো
৫.কানে শোঁ শোঁ বা ভোঁ ভোঁ শব্দ (টিনিটাস) হওয়া।

অটোস্কোপের মাধ্যমে খালি চোখেই ডাক্তার বেশির ভাগ ক্ষেত্রে কানের পর্দা ফেটে গেছে কি না তা নির্ণয় করতে পারেন। এ ছাড়া কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষারও প্রয়োজন হতে পারে। এর মধ্যে আছে কানের ভেতর থেকে বের হওয়া তরলের কালচার পরীক্ষা, টিউনিং ফর্ক এভালুয়েশন, টিমপ্যানোমেট্রি। এগুলো থেকেও যথাযথ রোগ নির্ণয় না করা গেলে অডিওলজি টেস্ট করা হয়।

অনেকেই কানে কোনো সমস্যা হলে নিজেরাই কানের ড্রপ ব্যবহার করে, যা উচিত নয়। কানের পর্দা ফেটে গেলে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও পরামর্শ নেওয়া উচিত। যাদের কানে আগে থেকেই কোনো সমস্যা আছে বা কানের পর্দা ফেটে যাওয়ার ইতিহাস আছে, তাঁদের নিচের পরামর্শগুলো মেনে চলা উচিত।
১. কানে কোনোভাবেই যেন পানি প্রবেশ না করে এ জন্য গোসলের সময় কানে তুলা বা ইয়ার প্লাগ ব্যবহার করা।
২.সাঁতার না কাটা
৩.উড়োজাহাজে ভ্রমণ এড়িয়ে চলা
৪.উচ্চ শব্দে গান না শোনা, হেড ফোন ব্যবহার না করা।
৫.কানে যাতে কোনো ইনফেকশন না হয়, এ জন্য কানো কোনো অসুবিধা হওয়ামাত্র ডাক্তার দেখিয়ে উপযুক্ত ওষুধ সেবন করা।
৬.কান না খোঁচানো
৭.নিজে নিজে কোনো ওষুধ দেওয়া থেকে বিরত থাকা
৮.কানে কোনো কিছু গেলে বা আটকে থাকলে নিজে তা বের করার চেষ্টা না করা।
কানের পর্দার ছিদ্র যদি ছোট হয় বা অল্প একটু ফেটে যায়, তাহলে কয়েক সপ্তাহ পর আপনা আপনি তা ঠিক হয়ে যায়।
যদি তিন মাসের মধ্যেও ক্ষতিগ্রস্ত পর্দা ঠিক না হয়, সে ক্ষেত্রে প্রয়োজনে অপারেশনের মাধ্যমে কানের পর্দা ঠিক করা যায়।
কানের পর্দা ফেটে যাওয়া জনিত সমস্যায় লক্ষন ভিত্তিক হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা আছে। হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা নিয়ে যেকেউ এ সমস্যা থেকে সুস্থ হতে পারে।
একোনাইট – ঠান্ডা লাগার কারনে হঠাৎ করে কানে ব্যথা-বেদনা যন্ত্রনা হয়। কটকট দপদপ করে, ছটফটানি ও ভয় কাজ করে। কোন প্রকার শব্দ বা বাদ্যযন্ত্র সহ্য হয় না।
ক্যামোমিলা – কানের ভিতর ব্যথা, কান কটকটানি বেদনা। কানে ব্যথা বাহিরে হাটিলে উপশম হয়, ঘরে টুকিলে কানের ব্যথা বৃদ্ধি হয়। শিশু কোলে নিয়ে হাটিলে উপশম।
বেলেডোনা – হঠাৎ আসে কিছুক্ষণ ব্যথা করে আবার ধীরে ধীরে চলে যায়, চুপ করিয়া থাকিলে ব্যথার উপশম হয়, কথা বলিলে বৃদ্ধি। কোন কিছু ভাল লাগেনা, কারো ভালো কথা শুনতেও বিষের মত মনে হয়, নড়াচড়ায় বৃদ্ধি।
পালসেটিলা - কানে ভয়ানক বেদনা ও দপদপ করে, কানে যে পুঁজ হয় তাহা অত্যন্ত ঘন এবং হলদে বা একটু সবুজ রঙের। বিশেষ করে মহিলাদের কানের ব্যথায় ভালো কাজ করে।
0 Comments: