কোষ্ঠকাঠিন্য

কোষ্ঠকাঠিন্য

Constipation / Astringency -কোষ্ঠকাঠিন্য, কোষ্ঠবদ্ধতা

কোষ্ঠকাঠিন্য হলে করণীয় ও পায়খানা ক্লিয়ার হওয়ার উপায় জেনে নিন-

জেনে রাখা ভালো – কোষ্ঠকাঠিন্য মানে শক্ত পায়খানা হওয়া বা প্রতিদিন পায়খানা না হওয়া। একেই সাধারণত আমরা কোষ্ঠকাঠিন্য বলে জানি। অসুখ বা উপসর্গ হিসেবে যতটা না মারাত্মক কোষ্ঠকাঠিন্য মানে অনেক বেশি অস্বস্তি। আসুন আজ জেনে নেই কোষ্ঠকাঠিন্য সম্পর্কে।

কোষ্ঠকাঠিন্য কি ?

আবার যাদের মল এমনিতেই একটু নরম হয় তাদের স্বাভাবিকের চেয়ে একটু বেশি শুকনো মলই কোষ্ঠকাঠিন্য। শক্ত ও কঠিন মল ছাড়াও কোষ্ঠকাঠিন্য হলে মলত্যাগে অনেক বেশি সময় এবং চাপ দেয়া লাগে। মলত্যাগের পরেও অসম্পূর্ণ মনে হতে পারে। মলদ্বারের আশেপাশে ও তলপেটে ব্যথা বা অস্বস্তি বোধ হয়।

অনেকেরই পায়খানা ক্লিয়ার না হলেই কোষ্ঠকাঠিন্য (Constipation) এর লক্ষণ বলে চিন্তা করতে থাকেন এবং এটি দূর করার ঔষধ বা পায়খানা না হলে কি করা উচিত বা নিয়মিত পায়খানা হওয়ার উপায় হিসেবে কি কি করণীয়, এর জন্য খাবার এমনকি ব্যায়াম নিয়েও ভাবনা চিন্তা শুরু করেন অনেকেই।

শক্ত ও পরিমাণে কম এবং সপ্তাহে তিন বারের কম পায়খানা হওয়া কে কোষ্ঠকাঠিন্য বলে। তবে বয়স, মল ত্যাগের অভ্যাস, মলের ধরনভেদে কোষ্ঠকাঠিন্য বিভিন্ন রকম হতে পারে, যেমনঃ যাদের দৈনিক দু বার মলত্যাগ হয় তাদের জন্য একদিন মলত্যাগ না হলে সেটাই কোষ্ঠকাঠিন্য।

কোষ্ঠকাঠিন্য অথবা পায়খানা না হওয়ার কারণঃ

কোষ্ঠকাঠিন্য কোন অসুখ ছাড়াই হতে পারে তবে কখনো কখনো কোন রোগের উপসর্গ হিসেবে দেখা দেয়। এছাড়া এর সাথে খাদ্যাভ্যাস, লাইফ স্টাইল ও অন্যান্য বিষয় জড়িত। যেমনঃ

  • পরিবেশ পরিস্থিতি (যেমন অফিসে, ভ্রমণের সময়, অপরিচিত জায়গায়) অনুযায়ী সময়মতো মলত্যাগ না করে চেপে রাখার প্রবণতা।
  • দুশ্চিন্তা ও মানসিক চাপ, শারীরিক পরিশ্রম না করা।
  • নিয়মিত ফাস্টফুড খাওয়া।
  • আঁশযুক্ত খাবার ও শাক সবজি না খাওয়া।
  • পর্যাপ্ত পানি বা তরল খাবার কম খাওয়া।
  • গর্ভকালীন সময়ে, যাদের দুধ এবং দুধ জাতীয় খাবার হজমে অসুবিধা হয়, অনেকের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত চাপ-কফি।
  • অসুখ- স্ট্রোক, পারকিনসন্স ডিজিস, এক ধরনের ইরিটেবল বাওয়েল সিন্ড্রোমে, হাইপোথাইরয়েডিসম।
  • ওষুধ যেমন – ভিটামিন, আয়রন, ক্যালসিয়াম, এলুমিনিয়াম সমৃদ্ধ ওষুধ, ব্যথানাশক, ডিপ্রেশনের ওষুধ, উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ, কফ সিরাপ।

 
কোষ্ঠকাঠিন্য হলে জটিলতাঃ দীর্ঘ দিনের কোষ্ঠকাঠিন্যে নানা রকম জটিলতা দেখা দেয়, যেমনঃ
  • অর্শ(পাইলস),
  • ফিস্টুলা,
  • এনাল ফিশার(মলদ্বারে ব্যথা), 
  • কটাল প্রলাপ্স(মলদ্বার দিয়ে কোন কিছু বের হয়ে আসা),
  • প্রস্রাবের সমস্যা,
  • ইন্টেসটিনাল অবস্ট্রাকশন।
কোষ্ঠকাঠিন্যের সাথে যদি কখনো মলের সাথে রক্ত যায়, ওজন কমে যায় তবে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে, কারণ এটা অর্শ রোগ থেকে শুরু করে অন্ত্রের ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে।

এছাড়া কোষ্ঠকাঠিন্যের সাথে বমি, পেট ফুলে উঠা, তীব্র পেট ব্যথা থাকলে চিকিৎসকের কাছে যত দ্রুত সম্ভব দেখা করতে হবে।

কোষ্ঠকাঠিন্য হলে করণীয় বা পায়খানা ক্লিয়ার হওয়ার উপায় কি?
আপনি যদি চান কিছু নিয়ম কানুন পালন করেও কিছটা স্বস্তি পেতে পারেন। কিন্তু স্থায়ী ভাবে এই সমস্যা থেকে আরোগ্য লাভ করতে হলে অভিজ্ঞ হোমিও চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে চিকিৎসা নিতে হবে।
  • প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে গরম পানি পান করতে পারেন।
  • কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে প্রতিদিন বেশি করে শাকসবজি, ফলমূল ও আঁশযুক্ত খাবার খেতে হবে। তৈলাক্ত খাবার, ভাজাপোড়া ও মাংস খাওয়া কমাতে হবে।
  • প্রতিদিন সকালে ইসবগুলের ভুসি খাওয়া যেতে পারে। দেখা গেছে এটিই অধিকাংশ ক্ষেত্রে ভালো ফল দিচ্ছে।
অধিক দুশ্চিন্তা কোষ্ঠকাঠিন্যের একটি কারন। তাই দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকার চেষ্টা করতে হবে। অনেকে মনে করেন রুটি খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে কিন্তু আটা, বিশেষ করে লাল আটায় অধিক পরিমাণে আঁশ থাকে। তাই লাল আটায় কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়ার সম্ভাবনা নেই তবে পরোটার ক্ষেত্রে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। তাই অধিক পরিমানে পরোটা না খাওয়াই ভাল।

প্রতিদিন সময় করে কায়িক পরিশ্রম অথবা ব্যয়াম করতে হবে। এটি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সহায়ক হতে পারে। যদি কোষ্ঠকাঠিন্যের পাশাপাশি মলত্যাগের আগে কিংবা পরে রক্ত আসে অথবা মলের সঙ্গে রক্ত লেগে থাকে, এরকম ক্ষেত্রে দ্রুত একজন অভিজ্ঞ হোমিও চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

কোষ্ঠকাঠিন্য হলে চিকিৎসাঃ

প্রচুর পানি(২ লিটার), তরল জাতীয় খাবার, গরম দুধ গ্রহণ। বেশি করে শাক সবজি, ফল ও আঁশযুক্ত খাবার খাওয়া। নিয়মিত ব্যায়াম এবং হাঁটা চলা করা। কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধকারী খাবার যেমন ইসবগুলের ভুষি, বেল, পেপে, আলুবোখারা, কিসমিস, সিমের বিচি, বাদাম খাওয়া। দিনের এক বা একাধিক নির্দিষ্ট সময়ে মলত্যাগের অভ্যাস গড়ে তোলা।

তবে যদি কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে স্থায়ীভাবে মুক্তি পেতে চান তাহলে আপনাকে অভিজ্ঞ একজন হোমিও চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে proper treatment নিতে হবে। তাহলে এই সমস্যা থেকে স্থায়ী ভাবে মুক্তি পেতে পারেন।

হোমিওপ্যাথিতে কোষ্ঠকাঠিন্য নির্মূলের জন্য অনেক উন্নত ঔষধ রয়েছে যেগুলি পার্শপ্রতিক্রিয়ামুক্ত। যত দিনের যত পুরাতন কোষ্ঠকাঠিন্যই হোক না কেন – অভিজ্ঞ একজন হোমিও চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে যথাযথ চিকিৎসা নিলে এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সময়ের ব্যাপার মাত্র।

কোষ্ঠকাঠিন্য (Constipation) একটি অস্বাভাবিক শারীরিক অবস্থা। যখন একজন ব্যক্তি সহজে মলত্যাগ করতে করতে পারে না এবং সাধারণত: এক-দুই দিন পরপর মলত্যাগের বেগ হওয়া এবং শুষ্ক ও কঠিন মল নিষ্কাশন কোষ্ঠকাঠিন্য বলে পরিচিত। শিশু, নারী ও পুরুষ সবাই এ সমস্যায় কম-বেশি ভুগে থাকেন।

কারণ: কম পানি পান করা, শাক-সবজি ও আঁশযুক্ত খাবার না খাওয়া, শারীরিক পরিশ্রম না করা, অলস জীবন-যাপন করা, আইবিএস(ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রম), হাইপোথাইরয়েড রোগ,দীর্ঘদিন ডায়াবেটিস রোগ হলে, নিয়মিতভাবে দীর্ঘদিন ঔষধ সেবন করতে থাকলে।

লক্ষণ: মল শুষ্ক, শক্ত ও কঠিন মল, মলত্যাগে অনেক বেশি সময় লাগা, মল ত্যাগের জন্য অনেক বেশি চাপের দরকার হওয়া, অধিক সময় ধরে মলত্যাগ করার পরও অসম্পূর্ণ মনে হওয়া, মলদ্বারের আশপাশে ও তলপেটে ব্যথা অনুভব, এবং প্রায়ই আঙুল, সাপোজিটরি বা অন্য কোনো উপায়ে মল ত্যাগ করা।

কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে সাধারণত: যে সব রোগ হয় সেগুলি হলো অবসাদ(ক্লান্তি), অনিদ্রা, চোখে ব্যথা, চোখের নিচে কালি পড়া, মাথা ঘোরা, কোমর ব্যথা, ক্রমান্বয়ে আলস্য বৃদ্ধি পাওয়া এবং মনোযোগ হ্রাস পাওয়া। কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা যত তীব্র হয়, রোগী তত বেশি দুর্বল ও হীনমন্য হয়ে পড়ে। দীর্ঘস্থায়ী কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে চর্ম রোগ, পাইলস, এনালফিশার, ইউটেরাস প্রলাপ্স ও প¯্রাবের সমস্যা হতে পারে।

প্রতিকার: 
  • প্রচুর বিশুদ্ধ পানি পান করা, নিয়মিত মলত্যাগের অভ্যাস করা, দৈনিন্দন খাবার তালিকায় আঁশযুক্ত খাবার যোগ করা। যেমনঃ
  • সবজি- পুইশাক, লাউশাক, লাল শাক, কলমি শাক, মিষ্টি কুমড়ো, কাঁচা কলা, লাউ, ধুন্ধুল, ঝিঙা, সজনে, ডাটা, ডেড়স, ব্রুকলি, বরবটি, মটরশুটি।
  • ফল- বেল, বেলের সরবত, আম, কাঁঠাল,কলা, পেঁপে, আনারস, খেজুর, আমলকি, হরিতকি, বহেরা, বাদাম ইত্যাদি।
  • নিয়মিত খাদ্যভ্যাস, পরিকল্পিত জীবন-যাপন ও সঠিক চিকিৎসায় কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময় হয়।


চিকিৎসা: লক্ষণ অনুযায়ী যে সকল ঔষধ ব্যবহৃত হয়ে থাকে।



Stool-মল (বোরিক)--- কোষ্ঠকাঠিন্য, মল শক্ত, শুষ্ক, যেন পুড়ে গেছে, মল আয়াতনে বেশ বড়।মল বাদামী বর্ণের, পুরু, রক্তমিশ্রিত, সকালে নড়াচড়ায়, গরম আবহাওয়ায়, উওপ্ত হবার পরে, ঠান্ডা পানীয় পান করার পরে, গরম আবহাওয়ায় সাময়িক বিরামকালে বৃদ্ধি।

Alumina-এলুমিনা

কোষ্ঠবন্ধ ও উদরাময়--- অত্যন্ত কোষ্ঠকাঠিন্য, মল যেন পাথরের ন্যায় কাঠিন, কখনো কখনো এক সাপ্তাহে কাল পর্যন্ত মলত্যাগের বেগ বা কোনও ইচ্ছা থাকে না, বাহ্যের সময় অত্যন্ত বেগ দিতে হয়। গুহ্যদ্বারে চুলকানি ও জ্বালা তরল মল হইলেও জোরে বেহ না দিলে সহজে বাহ্যে হয় না। বাহ্যের মত প্রস্রাবও ঔরুপ বেগ দিতে হয়। পেটে অধিক পরিমাণে মল না জমিলে মলত্যাগের ইচ্ছা বা ক্ষমতা একেবারে থাকে না।


এলোসকেটিনা
Graphities-গ্রাফাইটিস

কোষ্ঠবদ্ধতায়---কোষ্ঠবদ্ধতায় কঠিন মল। অর্ধসিদ্ধ ডিমের সাদা অংশের মত আমে আবৃত থাকে অথবা মলে আমের টুকরা দেখতে পাওয়া যায়। অত্যন্ত কোথ দিতে হয়, মলদ্বার ফাটা থাকে।মালবৃহৎ, কষ্ঠকর, গুটলে প্রকৃতির, যা শ্লেম্মাদ্বারা সংযুক্ত থাকে। জ্বালাকর অর্শ। সরলন্ত্রের স্থানচ্যুতি, উদরাময়, বাগামী বর্ণের তরল মল, মলের সঙ্গে অভুক্ত খাদ্যবস্তু মিশ্রিত থাকে, তীব্র, দুর্গন্ধযুক্ত, টক গন্ধ। মলত্যাগের সময় মলদ্বারে বেদনা, টাটানি ব্যথা ও চুলকায়। পিন্ডের মত মল, শ্লেম্মা সূতা দিয়ে সংযুক্ত থাকে। সরলন্ত্রের শিরা স্ফীতি। মলদ্বার ফাটা (রাটানহিয়া, পিয়োনিয়া)


Stool-মল (বোরিক)---দুর্দমনীয় কোষ্ঠকাঠিন্য; মলত্যাগ করার কোন প্রকার ইচ্ছা থাকে না। মল গোলাকার, শক্ত, কালচে বর্ণের মত। মল বেরিয়ে আসার সময় পুনরায় ভিতরে ঢুকে যায় (থুজা, সাইলেসিয়া)। ক্ষুদ্রান্ত্রে মলের আক্ষেপিক অবোরধ। অসাড়ে মলত্যাগ, কালো, দুর্গন্ধযুক্ত ও ফেনা মিশ্রিত। সরলান্ত্রে তীব্র বেদনা, মনে হয় যেন সরলান্ত্র চেপে পৃথক করা হচ্ছে।



এসিড মিউর


Abdominal cavity-উদর গহ্বর (বোরিক)--- মল সগোরে ও কলকল শব্দেনির্গত হয়। উদরের উপর পিঙ্গল বর্ণের দাগ। উদর স্ফীতি, উদর প্রসারন, মাঝে মাঝে এক এক স্থান উচু দেখায়। পেটে গড় গড় শব্দ ও শূল বেদনা। কোষ্ঠকাঠিন্য তৎসহ সরলান্ত্রে তীব্র বেদনা। মল খানিকটা বের হয়ে আবার ঢুকে যায় (সাইলি, স্যানিকিউলা)। অর্শ বলি, স্ফীত, বসলে বেদনার বৃদ্ধি তৎসহ মলদ্বারে খোঁচামারা ও জ্বালাকর বেদনা। মলদ্বার ফাটাফাটা, আঁচিলযুক্ত এবং সেই জন্য বেদনা। উদর গহ্বরে যেন জীবন্ত কোন কিছু নড়াচড়া করছে (ক্রোকাস) কিন্তু কোন বেদনা থাকে না।










Previous Post
Next Post

post written by:

DHMS (BHB), PDT and MBA

2 comments:

  1. can i get your contract number to know more about this. Thank you doctor

    ReplyDelete
  2. okay, this my phone number-01721654480

    ReplyDelete