Ignatia Amara_ইগ্নেসিয়া অ্যামারা
প্রতিশব্দ:-
১.ফাবা ইন্ডিকা,
২.ফাবা সেষ্কটি ইগনাশি,
৩. ইগনেশিয়ানা ফিলিফাইনিকা,
৪. সেন্ট ইগনেশাস বিন,
৫. স্টিকনস ইগনাশি।
ইগ্নেশিয়া গাছের বর্ণনা:- ফিলিফিইনিকা নামক গাছড়া হইতে প্রস্তুত হয়। ইহা লতা জাতীয়, যাহার শাখাগুলি সোজা থাকে, পাঁচ হইতে সাত ইঞ্চি লম্ভা হয়। ফুলগুলি সাদা, লম্বা বা ছোট আকারের বিভিন্ন ধরনের হয়, বীজগুলি ১ ইঞ্চি লম্ভা ডিম্বাকৃতি হয়ে থাকে।
![]() |
Ignatia Amara_ইগ্নেসিয়া অ্যামারা |
প্রপ্তিস্থান:- কোচির, চীন এবং ফিলিফাইন দীপপুজ্জে এই গাছগুলি পাওয়া যায়।
প্রুভার:- ডাঃ হ্যানিমান ইহা প্রুভ করেন।
প্রস্তুত প্রণালী:- ফলসহ সমগ্র গাছটি ইহার সুরাসার সহযোগে মূল অরিষ্ট প্রস্তুত হয় ২x এবং উচ্চ শক্তি পরিশ্রুত সুরাসারের সহিত প্রয়োগ হয়। বিচূর্ণকারেও ঔষধটি প্রস্তুত হয়।
সমনামঃ ইগ্নেসিয়া, ফাবা-সেঙ্কটি ইগনাশি, সেন্ট ইগ্নেশিয়ান বিন।
মায়াজমঃ সোরিক, টিউবারকুলার।
সাইডঃ ডানপাশ, ওপরে ডানপাশ নিচে বামপাশ।
কাতরতাঃ শীতকাতর।
ইচ্ছাঃ অম্ল খাদ্য, রুটি, মাখন, পনির, ফল।
অনিচ্ছাঃ তামাক, মদপান, গরম খাদ্য, মাংস, দুধ, কফি।
শত্রুভাবাপন্নঃ কফি, নাক্স, ট্যাবেকাম।
বৈশিষ্ট্যঃ সকল ইন্দ্রয়শক্তির সংজ্ঞাধিক্য এবং ইন্দিয়গুলোর ক্ষণিক সঙ্কোচন উৎপন্ন করে। রোগিনী অত্যানুভূতিসম্পন্না, সহজেই উত্তেজিত হয়, কোমলস্বভাব, সব কিছুই দ্রুত বুঝে ফেলে, দ্রুত কাজ করে। অতি দ্রুত শারীরিক লক্ষণ ও মানসিক ভাবের পরিবর্তন ঘটে; একটির বৃদ্ধিতে অপরটির হ্রাস। মন ও দেহের কাজ পরস্পরবিরোধী ভাবাপন্ন। রোগ লক্ষণের কৃত্রিমতা ও পরিবর্তনশীলতাই এটার চরিত্রগত লক্ষণ।
ক্রিয়াস্থান:-
মস্কিষ্ক ও স্নায়ুমন্ডলীর উপরে ইহার প্রধান ক্রিয়া ।
গলদেশে, গ্ল্যান্ড ও পরিপাতন্ত্রের উপর ক্রিয়া প্রকাশ করিয়া থাকে।
শোক দুঃখ লক্ষণসমূহ প্রকাশ পায়।
ইগ্নেশিয়ার কোন রুগির উপর ব্যবহৃত হয়:-
সহজে উত্তেজনাশীল, পরিবর্তনশীল, দ্রুত অনুভব ও তাড়াতাড়ি কাজ শেষ করা, পিত্ত প্রধান স্ত্রীলোকদের পক্ষে।
মানসিক লক্ষন:-
১. মনের দুঃখ কষ্ট কাহাকে বলে না নীরবে সহ্য করে ও দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে।
২. রোগীর মন অত্যন্ত পরিবর্তনশীল। কখনো ছেলেমানুষী করে।
৩. নির্জনে থাকিয়া একাকী দুঃখভোগ করিতে ইচ্ছা করে।
৪. প্রেমে নিরাশ হেতু মানসিক কষ্ট।
৫. দুঃখের বোঝা লুকিয়ে রেখে কাঁদবে ও দীর্ঘশ্বাস ফেলবে।
৬. সান্তনা বা সমবেদনা জানাইতে গেলে রোগী খিপ্ত হয়ে উঠে।
চরিত্রগত লক্ষন:-
১. শোক, দুঃখ, ক্রোধ বা ব্যর্থ প্রেম মনে পোষণ করা হেতু পীড়া, বার বার দীর্ঘশ্বাস ফেলা।
২. অত্যন্ত মাথা ব্যথা, মনে হয় যেন কেহ মাথার এক পার্শ্ব পেরাগ ঢুকাইয়া দিতেছে।
৩. সেই দিতে চাপিয়া শুইলে মাথা ব্যথা উপসম, তামাকের ধোঁয়া সহ্য হয় না।
৪. তাহাতে মাথা ধরে ও মাথা ব্যথা করে, পেট খালি খালি বোধ।
৫. সবিরাম জ্বর- শীতবস্থায় উত্তাপ প্রয়োগে রুগী আরাম বোধ করে।
৬. শিতাবস্থায় পিপাসা, উত্তাপ বা অন্য কোনও অবস্থায় পিপাসার লেশমাত্র থাকে না।
৭. একই সময়ে জ্বরে আক্রমণ।
৮. শিশুদেরকে শাসন করিবার পর পিট হয়, তড়কা প্রভৃতি। টনসিল ফোলে ও পাকে।
অদ্ভুত লক্ষন:-
রোগী গঠনে পুরুষ কিন্তু স্বভাবে স্ত্রী।
ভরপুর আহারের পরেও পেট যেন খালি।
দন্ত শূল বেদনা চলাপেরায় উপসম।
জ্বরে শীতাবস্থায় শীতল জলপান, উত্তাপে পিপাসাহীনতা।
স্ত্রী রোগে ইগ্নেশিয়া লক্ষন:-
ইগ্নেশিয়ার রক্তস্রাব অকালে প্রকাশ পায়, ১০/১৫ দিন পর পর স্রাব দেখা দেয়।
রক্তের বর্ণ কালো ও চাপ চাপ, রোগী আলো সহ্য করিতে পারেনা,মাথা ভারবোধ, উত্তপ্ত ও বেদনাযুক্ত।
বাধক বেদনা, জরায়ুর মধ্যে সংকোচন হইয়া প্রবল বেদনা।
ইগ্নেশিয়া মলদ্বারের লক্ষন:-
বার বার পায়খানার উচ্ছা অথচ পায়খানায় বসিলে পায়খানা হয় না।
শুধুমাত্র সরলান্ত্র বাহির হইয়া পড়ে।
রোগী সরলান্ত্র বাহির হইয়া যাইবার কারনে কোঁথ দিতে ভয় পায়।
বাহ্যের পর কয়েক ঘন্টা মল দ্বার টাটানি ব্যথা।
যানবাহনে চলিবার সময় পায়খানার রাস্তায় অত্যান্ত ব্যথা।
গলনালীর পীড়া:- গলায় মাছের কাঁটা ফুটিবার মত বেদনা, রোগী যতবার ঢোক গেলে বা কিছু খায়, ততবারই মনে করে যেন গলায় কাঁটা ফুটিয়া আছে, প্রকৃতপক্ষে ইহা কাঁটা বা অন্য কিছুই নহে, ইহাতে তরল কোন পানীয় পান করিলে গলায় আটকায়; কিন্তু কঠিন বস্তু সহজে খাইতে পারে ।
উদরাময়ঃ হঠাৎ বাহ্যের বেগ আসে, তাড়াতাড়ি পায়খানায় ছুটিতে হয়, বাহ্যের পর কোঁথানি থাকে; কিন্তু পেটে কোনও প্রকার বেদনা থাকে না। পেটে গড়গড় করিয়া ডাকে, বায়ু নিঃসরণ হয়, একবার কোষ্ঠবন্ধ – একবার উদরাময়।
Hiccup/ হেঁচকি/হিক্কাঃ পানাহারের পর ও তামাকের গন্ধে হিক্কার বৃদ্ধি হইলে।
কাশি:- গলা সুড় সুড় করিয়া কাশি, এই প্রকার কাশি স্নায়বিক কিম্বা জরায়ু ডিম্বাকোষে প্রভৃতির কোন পীড়া অথবা ক্রিমির নিমিত্ত হয়। রোগীর মনে হয় যেন পালকের মত কি একটা পদার্থ তাহর গলায় লাগিয়া আছে, তজ্জন্য ক্রমাগত কাশে, সুড়সুড় করে ।
কাশি রাত্রিতে শুইলে অত্যন্ত বাড়ে, রোগী যতই কাশে ততই গলায় সুড়সুড়নি ও কাশির বৃদ্ধি হয়, কিছুতেই কাশি থামেনা, শেষে প্রণপণ চেষ্টায় কাশি চাপিয়া রাখিবার চেষ্টা করে।
শিরঃপীড়া বা মাথাব্যথা:- কথা কহিলে, কোনও এক বিষয় মনঃসংযোগ করিলে অথবা গল্পাদি কিছু শুনিলে মাথা ধরে, মাথা ব্যথা ভারী হয়, সম্মুখে নত হইলে একটু উপশম বোধ হয় ।
বৃদ্ধি:- প্রাতে, মুক্ত বাতাসে, আহারান্তে, কফি পানে, ধুমপানে, তামাকের গন্ধে, তরল পদার্থ পানে। বাহ্যিক উত্তপে, তীব্র গন্ধে, শোকে, শীতে, মানসিক চাঞ্চল্যে।
হ্রাশ/ উপশম:- কঠিন দ্রব্য বক্ষণে, উত্তাপে, প্রবল চাপে, চলিয়া বেড়াইলে।
পরবর্তী ঔষধ :- রাস, পালস, লাইকো, সালফ, সিপিয়া, আর্স, বেল, ক্যালকে, চায়না।
ক্রিয়ানাশকঃ অ্যাসিড-অ্যাসে, আর্নি, কোক্কাস, ককু, ক্যামো, পালস, ক্যাম্ফ, কফি, নাক্স-ভ।
ক্রিয়াকাল:- ৯ দিন।
ব্যবহার শক্তি:- ৬ থেকে ২০০ শক্তি।
0 Comments: