Rectopen: হোমিওপ্যাথিক দর্শন

Download Free Android Apps

Ads 728x90

Showing posts with label হোমিওপ্যাথিক দর্শন. Show all posts
Showing posts with label হোমিওপ্যাথিক দর্শন. Show all posts
হোমিওপ্যাথিক ফিলোসফি_পরীক্ষার সাজেশন
September 23, 2022
হোমিওপ্যাথিক ফিলোসফি_পরীক্ষার সাজেশন
তৃতীয় বর্ষ 
বিষয় কোড- ৩০৩
১. দর্শক কাকে বলে ? দর্শনের উদ্দেশ্য কী?
২. ষড়-রিপু কাকে বলে? এবং ৬টি রিপু কী কী?
৩. দর্শক ও দার্শনিক:
৪. হোমিও দর্শনের প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব আলোচনা করঃ
৫. ডাঃ হ্যানিম্যানের চিকিৎসা দর্শনের মূলনীতিগুিল কি কি?
৬. হোমিওপ্যাথি একটি আরোগ্য কলা-ব্যাখ্যা কর।
৭. লক্ষণ কি? গুরুত্ব অনুসারে লক্ষণের স্তরসমূহ বর্ণনা দাও।
৮. ঔষধ নির্বাচনে লক্ষণ সমষ্টির গুরুত্ব আলোচনা কর।
৯. মায়াজম কি? মায়াজম (Miasm) প্রধানত কয় প্রকার ও কি কি।
১০. টিউবারকুলিনাম রোগীর ধাতুগত লক্ষণ :
১১. ভেষজ পরীক্ষণ কাহাকে বলে ?
১২. ভেষজ (ঔষধ) পরীক্ষার উদ্দেশ্য বা প্রয়োজনীয়তা কি ?
১৩. হোমিও ঔষধের পরীক্ষণের শর্তাবলী কি কি ?
১৪. নির্বাচিত ঔষধের শক্তি কিভাবে নির্ধারণ করিতে হয় ?
১৫. রোগের ডায়নামিক সূত্র কি ?
১৬. মানসিক , দৈহিক , চরিত্রগত , অদ্ভুত , ধাতুগত , লক্ষণের দুইটি করে উদাহরণ দাও।
১৭. রোগ লক্ষণ কত প্রকার ও কি কি ?
১৮. লক্ষণ ও চিহ্নের মধ্যে পার্থক্য কি ?
১৯. রোগ প্রবণতা দূর করার উপায় কী?
২০. ব্যবস্থাপত্র কি  ? ব্যবস্থাপত্রের বিভিন্ন অংশের বর্ণনা দাও।
২১. বিজ্ঞান ও দর্শনের মধ্যে পার্থক্য আলোচনা কর
২২. Drug-ভেষজ কাকে বলে ? ভেষজের উৎসের বিবরণ দাওঃ
২৩. হ্যানিম্যানের চিকিৎসা দর্শন আলোচনা কর
২৪. রোগ কি? উহার শ্রেণীবিভাগ আলোচনা কর।
২৫. জীবনী শক্তির বিশৃঙ্খলাই রোগ-ব্যাখ্যা কর
টিকাঃ
১. জ্ঞানবিদ্যা
২. তত্ত্ববিদ্যা
৩. যুক্তিবিদ্যা
৪. মাত্রাতত্ব
৫. Drug-ভেষজ
৬. দ্বিতীয় ব্যবস্থাপত্র কি?
৭. সেরা 
৮. সিফিলিস
৯. সাইকোসিস 
১০. টিউবারকুলোসিস


হোমিওপ্যাথিক ফিলোসফি





হোমিওপ্যাথিক দর্শন
September 17, 2021
 তৃতীয় পত্রঃ হোমিওপ্যাথিক দর্শন !! তৃতীয় বর্ষ 

⏯-What is Philosophy? দর্শন কাহাকে বলে ?

⏯-What is homeopathic philosophy? হোমিওপ্যাথিক দর্শন কাহাকে বলে ?

⏯-Hahnemann's life and medical philosophy- হ্যানিম্যানের জীবন ও চিকিৎসা দর্শন।

⏯-Homeopathy doctrine and vitality about disease- রোগ সম্বন্ধে হোমিও মতবাদ ও জীবনীশক্তি।

⏯-Homeopathic ideas about herbs and medicines- ভেষজ ও ঔষধ সম্বদ্ধে হোমিওপ্যাথিক ধারণা।

⏯-Drug Proving- ঔষধ পরীক্ষা।


⏯-Symptoms and homeopathy its value- লক্ষণ ও হোমিওপ্যাথিতে ইহার মূল্য।

⏯-Symptoms and drug selection- লক্ষণ সমষ্টি ও ঔষধ নির্বাচন।

⏯-Pathology- প্যাথলজি।

⏯-রোগলিপি বা রোগচিত্র।

⏯-The ideal cure- আদর্শ আরোগ্য।

⏯-Prescription- ব্যবস্থাপত্র।

⏯-Short question of homeopathy philosophy.

⫿⃦ Miasm ⫿⃦ Psora ⫿⃦ Sycosis ⫿⃦ Syphilis ⫿⃦ Tuberculosis ⫿⃦



Principles of Homeo Philosophy


ঔষধের শক্তিকরণ- Drug Potentization
September 15, 2021
Drug Potentization-ঔষধ শক্তিকরণ।
হোমিও ঔষধের শক্তিকরণ বলিতে কি বুঝ।
১৮২৭ খ্রিস্টাব্দে হ্যানিমান ঘোষনা করেন যে, সাধারণ অর্থে  জড় পদার্থ বলিতে যাহা বুঝায় ভেষজ পদর্থ তেমন জড় অনড় নয়। তাহার আসল স্বরূপ হইল বিশুদ্ধ শক্তি। এই শক্তি ভেষজ পদার্থে সুপ্ত থাকে। বিশেষ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ভেষজের শক্তির ক্রিয়া ক্ষমতাকে ইচ্ছামত বৃদ্ধি করা যায়। যে প্রক্রিয়ার দ্বারা প্রাকৃতিক পদার্থের অন্তর্নিহিত সূক্ষ্ম ভেষজগুণ স্ফুরিত, বিকশিত ও ঔষধরূপে ব্যবহারের উপযোগী হয় তাহাকে ভেষজের শক্তির বিকাশন বা শক্তিকরণ প্রক্রিয়া বলে।

হ্যানিমান ভেষজের অন্তর্নিহিত শক্তিকে জাগ্রত করার প্রক্রিয়াই শুধু আবিস্কার করেন নাই বরং তিনি একটি সুনিদির্ষ্ট মান অনুযায়ী সেই শক্তিকে বিভিন্ন স্তরে উন্নীত করার পন্থা ও উদ্ভাবন করিলেন যাহাতে প্রয়োজন অনুযায়ী ঔষধ বিভিন্ন শক্তিতে ও বিভিন্ন মাত্রায় স্বচ্ছন্দে ব্যবহার করা চলে।
Drug Potentization

শক্তিকরণ প্রক্রিয়া কিরূপে সম্পাদিত হয় ?
সাধারনতঃ বিশেষ রীতিতে ঘর্ষণ ও চূর্ণীকরণ অথবা দ্রবীকরণ ও আলোড়ন দ্বারা ভেষজের আবদ্ধ শক্তিকে মুক্ত করা হয়। যে বস্তুকে শক্তিতে রূপানতরিত করিতে হইবে সেই বস্তুর এক ক্ষুদ্র অংশ কোন এক ভেষজগুনহীন নিস্ক্রিয় পদার্থের সঙ্গে ঘর্ষণ, পেষন ও আলোড়ন করা হয়। দুগ্ধ শর্করা, সুরাসর, এবং পরিশ্রুত জল সাধারনত অনৌষধি মাধ্যম রূপে ব্যবহৃত হয়। এই প্রক্রিয়ার ফলে পদার্থের অনু পরমানুতে যে সূক্ষ্ম ভেষজ গুনগুলি আবদ্ধ ছিল সেগুলি ক্রমে ক্রমে মুক্ত হইতে থকে। যতই প্রক্রিয়া চালানো যায় ততই পদার্থের গভীরে নিহিত সূক্ষ্মতম গুণাবলীর স্ফুরণ হইতে থাকে। পদার্থের জড়সত্তা ধীরে ধীরে শক্তিতে রূপান্তরিত হয় এবং সেই শক্তি অনৌষধি মাধ্যমে সঞ্চারিত হয়। এই প্রক্রিয়াতে প্রতিটি ভেষজের প্রকৃতিগত বৈশিষ্ট অক্ষুন্ন থাকে।

বিভিন্ন রোগী ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রকারের হোমিও ঔষধ শক্তি নির্ধাণের নিয়ম কি কি?
১. রোগীর অবস্থাঃ
ডাঃ জার বলেন , যদি কোন ক্ষেত্রে রোগলক্ষণ সমূহ স্পষ্টভাবে প্রকাশিত হয়না কিংবা পরিচায়ক লক্ষণসমূর অভাব বা সংখ্যাল্পতা থাকে অথবা যেখানে ২/৩ টি ঔষধের লক্ষণ ফুটিয়া উঠে সেখানে রোগীর প্রবণতা কম বলিয়া ধরিতে হইবে। এইসব ক্ষেত্রে যে ঔষধ রোগলক্ষণের সহিত সর্বাধিক সাদৃশ্য বহন করে সেই ঔষধ নিম্নশক্তিতে (৩-১২) প্রদান করিতে হয়। কিন্তু যেখানে লক্ষণসমষ্টি সুস্পষ্ট ভাবে সেই ঔষধই নির্দেশ করে সেখানে ঔষধের উচ্চশক্তি (২০০ ও উর্ধে) প্রদান করিতে হয়।

(ক) রোগীর বয়সঃ শিশু, যুবক ও তেজস্বী ব্যক্তিদের প্রবণতা বেশী, সেইজন্য তাহাদের ক্ষেত্রে মধ্য ও উচ্চশক্তি প্রয়োগ করিতে হয়, বয়সের সঙ্গে প্রবনতা কমে, তাই বয়স্কদের ক্ষেত্রে নিম্ন হইতে মধ্যশক্তির ঔষধ প্রয়োগ করিতে হয়।

(খ) ধাতু ও গড়নঃ স্নায়ু প্রধান, রক্ত প্রধান, রাগ প্রধান ধাতু ব্যক্তি এবং বুদ্ধিজীবি, উৎসাহী ও আবেগ প্রবণ ব্যক্তিদের প্রবণতা বেশী। কাজেই এই সব ক্ষেত্রে উচ্চ শক্তি প্রয়োগ করিতে হয়। শ্লেম্মা প্রধান ধাতুর ব্যক্তি, জড়বুদ্ধি, কর্মে শ্লথ, আলস্যপরায়ণ যাহাদের মাংসপেশী দৃঢ় ও সবল এবং যাহারা দৈহিক পরিশ্রম করে তাহাদের প্রবণতা কম, এই সবক্ষেত্রে ঔষধের নিম্নশক্তি, বৃহৎমাত্রা ও পুনঃপ্রয়োগের প্রয়োজন হয়। জড়ধী , পৌরুষহীন , বধির , বোবা ব্যক্তিদের প্রবণতা নিচুস্তরের এই সব ক্ষেত্রেও নিম্নশক্তির ঔষধ প্রদান করিতে হয়।

(গ) নিদানগত (Diagnostic-রোগনির্ণয়সংক্রান্ত) অবস্থাঃ নিদানগত অবস্থা প্রবণতার পরিবর্তন সাধন করে। এই অবস্থায় প্রাণসত্তার প্রতিক্রিয়ার ক্ষমতা কমিয়া যায়। কাজেই এইসব অবস্থার সর্বদাই নিম্নশক্তি ব্যবহার করিতে হয়। হৃদপিন্ডের পীড়ার অন্তিম অবস্থায় ডিজিটেলিস নির্দিষ্ট হইলেও এই ঔষধের কোন শক্তিতেই বিশেষ কোন ক্রিয়া হয়না। একমাত্র মূল আরকের স্থুলমাত্রা জীবনী শক্তিকে পুনরুজ্জীবিত করিতে পারে। আবার যাহারা অধিক ঔষধ ব্যবহার করেন, তাহাদের ক্ষেত্রে উচ্চশক্তির ঔষধ ভাল কাজ করে।  

(ঘ) রোগীর দৈহিক ও মানসিক অবস্থাঃ যেখানে রোগীতে প্রতিক্রিয়া তীব্র সেখানে উচ্চশক্তি , আর যেখানে প্রতিক্রিয়া দুর্বল সেখানে নিম্নশক্তি প্রদান করিতে হয়। রোগী অত্যন্ত দুর্বল হইলে নিম্নশক্তি এবং সবল হইলে উচ্চশক্তি। রোগী অস্থির ও অসহিঞ্চু হইলে সর্বদাই নিম্নশক্তি।

(ঙ) চিকিৎসার উদ্দেশ্যঃ রোগীর অভিপ্রায়ের উপর ও শক্তি নির্বাচিত হইয়া থাকে। চিররোগের যদি কোনরূপ উপশম চায় তবে নিম্নশক্তিতে এবং যদি স্থায়ী আরোগ্য লাভ করিতে চায় এবং তার জন্য যথোচিত ধৈর্য ধারণ করিতে রাজী থাকে তবে ঔষধের উচ্চশক্তি প্রদেয়।

(চ) ধাতুগত চিকিৎসাঃ ধাতুগত চিকিৎসায় সর্বদাই উচ্চশক্তি ব্যবহৃত হয়। ধাতুগত চিকিৎসায় কোন ঔষধ উচ্চশক্তিতে প্রদান করার পর নতুন কোন উপসর্গ দেখা দিলে যদি সেই সমস্ত লক্ষণ রোগীতে পূর্বে কখনও দেখা না দিয়া থাকে তবে সদৃশমতে নির্বাচিত ঔষধের নিম্নশক্তি প্রদান করিতে হয়।

২. রোগীর প্রকৃতি , অবস্থা , গতি , তীব্রতা ও দেহে বিকাশ , স্থায়িত্ব ও স্থিতির স্থানঃ




৩. ঔষধের প্রকৃতিঃ
ঔষধের প্রকৃতির উপর ও শক্তি নির্ধারণ নির্ভর করে।

(ক) লঘু ক্রিয়া ও দীর্ঘ ক্রিয়া ঔষধঃ যেসব ঔষধের ক্রিয়া অগভীর এবং স্বল্পকাল স্থায়ী সে সব ঔষধ নিম্নশক্তিতে ব্যবহৃত হয়। যেসব ঔষধের ক্রিয়া গভীর ও দীর্ঘকাল স্থায়ী সেগুলি মধ্য ও উচ্চশক্তিতে প্রযুক্ত হয়।

(খ) যেসব ঔষধ তাহাদের স্বাভাবিক অবস্থায় সুস্থ দেহে প্রয়োগ করিলে বিশেষ কোন লক্ষণ উৎপন্ন হয় না সেগুলি মধ্য বা উচ্চ শক্তিতে প্রয়োগ করিতে হয়। যেসব ঔষধ তাহাদের স্বাভাবিক অবস্থায় সু্স্থ দেহে দহযন্ত্রের বৈলক্ষণ্য সৃষ্টি করিতে পারে সেগুলি সাধারনতঃ নিম্নশক্তিতে প্রযুক্ত হয়। আবার যে সব ঔষধ স্বাভাবিক অবস্থায় দেহযন্ত্রের উপর ধবংসাত্নক ক্রিয়া করে সেগুলি উচ্চশক্তিতেই প্রয়োগ বিধেয়।

রোগজ ভেষজ সর্বদাই উচ্চশক্তিতে ব্যবহৃত হয়।
(গ) সুনির্বাচিত ঔষধে কোন প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি না হইলে প্রতিক্রিয়া আনার জন্য অন্তর্বতী যে ঔষধ ব্যবহৃত হয় তাহা উচ্চশক্তিতে প্রয়োগ করা হয়।

(ঘ) কতকগুলো ঔষধ বিভিন্ন শক্তিতে বিভিন্নরূপ ক্রিয়া করে। যেমনঃ

১. হিপার সালফ, মার্কুরিয়াস, সাইলিসিয়া নিম্নশক্তিতে পুঁজ উৎপাদন করে, উচ্চশক্তিতে পুঁজ নিবারণ করে।

২. ব্রায়োনিয়া ২০০ স্তন দুগ্ধ বৃদ্ধিতে এবং ৩X স্তন্য হ্রাসের নিমিত্ত প্রযুক্ত হয়।

৩. আঘাত লাগার দরুণ তরুণ পীড়ার আর্ণিকা নিম্নশক্তি কিন্তু আঘাতজনিত কারণে যদি পরবর্তীকালে কোন পীড়া দেখা দেয় তবে আর্ণিকা উচ্চশক্তি অধিকতর উপযোগী।

৪. কোষ্ঠকাঠিন্য নির্দিষ্ট হইলে নাক্সভম নিম্নশক্তি এবং উদরাময়ে উচ্চশক্তি।

৫. আফিম সেবীদের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট হইলে ওপিয়াম উচ্চশক্তি।

৬. আর্সেনিক এলবাম পাকস্থালী, অন্ত্র ও কিডনীর পীড়ায় নিম্নশক্তি এবং নিউরালজিয়া , স্নায়ু ও চর্মের পীড়ায় উচ্চ শক্তিতে। ক্রণিক পীড়ায় আর্সেনিক নির্দিষ্ট হইলে উচ্চশক্তিতে প্রযোজ্য।

৭. যৌনক্রিয়ার আধিক্য হেতু দুর্বলতায় নির্দিষ্ট হইলে এসিড ফস নিম্নশক্তি।

৮. যৌনক্রিয়ার অতিশয্য হেতু দুর্বলতা , শ্বাসকষ্ট, বার বার প্রস্রাবের বেগ প্রভৃতি উপসর্গযুক্ত রোগে নির্দিষ্ট হইলে ৩০ শক্তি বিশেষ উপযোগী।

৯. পডোফাইলাম ব্যবহারকালে যকৃতের তরুণ রোগে মধ্য ও উচ্চশক্তি , পুরাতন রোগে নিম্নশক্তি , শিশু কলেরা , কলেরা ও উদরাময় রোগে উচ্চশক্তি , সবিরাম জ্বরে মধ্য ও উচ্চশক্তি।

উপরোক্ত আলোচনা হইতে প্রতিয়মান হয় যে ঔষধের শক্তি নির্ধারণের ভিত্তি কোন একটি কারণের উপর নির্ভর করে না। রোগীর সামগ্রিক অবস্থা নির্দেশক যাবতীয় ঘটনার বিচার করিয়া ঔষধের শক্তি নির্ধারণে করিতে হয়। 

Related Topics Click Here::




 Homeopathic medicine application method
September 15, 2021
 Homeopathic medicine application method- হোমিওপ্যাথিক ওষুধ প্রয়োগ পদ্ধতি।

১৭৯০ সালে ওষুধ বিজ্ঞানের জগতে সূচনা হয় এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন। বিজ্ঞানী হ্যানিম্যান এ পরিবর্তনের সূচনা করেন। এ জন্য তাকে বলা হয় হোমিওপ্যাথি এর পিতা। ১৭৯৬ সালে তিনি বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরেন আধুনিক হোমিওপ্যাথি এর পদ্ধতি। এরপর থেকেই এগিয়ে চলে নতুন ওষুধের অগ্রযাত্রা।

হ্যানিম্যানই প্রথম বলেন, ভেষজ বস্তুকে ওষুধ হতে হবে তার অভ্যন্তরীণ ক্ষমতার গুণে। সাধারণ ভেষজগুণাবলি থাকলেই কোনো বস্তু ওষুধ হিসেবে স্বীকৃত হবে না, যতক্ষণ না তার অভ্যন্তরীণ ক্ষমতার বিকাশ ঘটানো হয়। একটি বস্তুর অভ্যন্তরীণ ক্ষমতার উন্নয়ন ঘটিয়ে যখন তা সুস্থ মানবদেহে প্রয়োগ করা হবে এবং তার ঔষধি গুণাবলির প্রকাশ দেখা যাবে, তখন তাকে ওষুধ হিসেবে বিবেচনা করা হবে। এমনিভাবে কোনো বস্তুুর অভ্যন্তরীণ ক্ষমতা উন্নয়নের প্রক্রিয়াকে বলা হয় ডাইনামাইজেশন বা পোটেন্টাইজেশন।

হোমিওপ্যাথিতে ওষুধ হচ্ছে শক্তির আধার। কোনো ওষুধ বস্তুর অভ্যন্তরীণ ক্ষমতার উন্নয়ন ঘটিয়ে যখন শক্তিকরণ করা হবে, তখন তা ওষুধেরূপান্তরিত হবে। এ ওষুধ যখন রোগীর দেহে প্রয়োগ করা হবে, তখন তা রিমেডি হিসেবে বিবেচিত হবে। এভাবে অনেক সাধারণ ভেষজ গুণাবলিহীন বস্তুু ও হোমিওপ্যাথিতে ওষুধে রূপান্তরিত হয়ে রোগীর জন্য রিমেডি হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এককথায় হোমিওপ্যাথি ভেষজ দ্রব্যকে ওষুধে রূপান্তরিত করে রিমেডি হিসেবে ব্যবহার করে।

 Homeopathic medicine application method

হ্যানিম্যানের নতুন পদ্ধতিঃ
বিজ্ঞানী হ্যানিম্যান ১৮৪২ সালে জীবনের শেষ মুহূর্তে অর্গানন অব মেডিসিনের ষষ্ঠ সংস্করণ রচনা সমাপ্ত করেন। এ সংস্করণে পঞ্চম সংস্করণের ওষুধ প্রস্তুত অনুচ্ছেদ ২৭০-২৭১ সম্পূর্ণ বদলিয়ে নতুন ভাবে লিখেছেন। ষষ্ঠ সংস্করণের ২৭০-২৭১ অনুচ্ছেদে ওষুধ তৈরির নতুন পদ্ধতি বর্ণনা করেন, যা ১৮৩৩ থেকে ১৮৪২ সাল পর্যন্ত হ্যানিম্যানের গভীর পর্যবেক্ষণের ফসল। মূলত শততমিক পদ্ধতির তৃতীয় বিচ্ছুন্ন থেকেই নতুন পদ্ধতির যাত্রা।

কত শক্তি থেকে ওষুধ ব্যবহার শুরু হবে?
নতুন পদ্ধতির ওষুধ প্রথম শক্তি থেকেই প্রয়োগ শুরু করা যায়। তবে দ্বিতীয় শক্তি থেকে শুরু করা উত্তম। সুনির্বাচিত ওষুধ দীর্ঘক্রিয় হলেও রোগী উপকার পেলে মাসের পর মাস ধরে দৈনিক প্রয়োগ করা যায়। এ রকম ক্ষেত্রে ওষুধের প্রথম শক্তি (০১) শেষ হলে দ্বিতীয় শক্তি (০২), দ্বিতীয় শক্তি শেষ হলে তৃতীয় শক্তি (০৩) এভাবে ক্রমবর্ধমান হারে ব্যবহার করতে হবে।

কত সময় পরে রোগী ওষুধ খাবে?
নতুন পদ্ধতির ওষুধ ক্রনিক রোগগুলোতে প্রতিদিন বা এক দিন পরপর সেবন করা যায়। প্রয়োজনে দিনে কয়েকবারও সেবন করা যায় (অর্গা ২৪৮, ২৮২, ক, ৬ষ্ঠ)

একিউট রোগে ৬, ৪, ৩ ও ২ ঘণ্টা পরপর এবং অত্যন্ত জরুরি ক্ষেত্রে এক ঘণ্টা পরপর কিংবা আরো কম সময়ের ব্যবধানে ঘন ঘন ওষুধ সেবন করা যায় (অর্গা-২৪৮, ৬ষ্ঠ)।

কিভাবে ওষুধ পুনঃপ্রয়োগ করবেনঃ
নতুন পদ্ধতির ওষুধ শক্তির (হসয়পষধী) কোনো রকম পরিবর্তন না করে একই ওষুধের একই মাত্রা একবার ও পুনঃপ্রয়োগ করা যায় না। মাত্রার শক্তি ক্ষেত্রে পূর্বমাত্রা থেকে পরবর্তী মাত্রা অবশ্যই ভিন্নতর হতে হবে (অর্গা ২৪৬, ২৪৭, ৬ষ্ঠ)।

সর্বতোভাবে সুনির্বাচিত ওষুধের একটি শুকনো গ্লোবিউল যদি প্রথমবার রোগীর ক্ষেত্রে বেশ কার্যকরী হয়, তাহলে দ্বিতীয়বার সে ওষুধ শুকনো অবস্থায় আর ব্যবহার করা যায় না। এমনিভাবে পানির সাথে মিশ্রিত ওষুধও যদি প্রথম মাত্রায় বেশ কার্যকরী হয়, তাহলে দ্বিতীয়বার তা ঝাঁকি না দিয়ে অর্থাৎ মাত্রার শক্তি পরিবর্তন না করে ব্যবহার করা যায় না। এজন্যই ওষুধ প্রতিবার ব্যবহারের আগে ৮, ১০, ১২ ঝাঁকি দেয়ার নিয়ম। কারণ মাত্রা শক্তির পরিবর্তন না হলে প্রাণশক্তি এ ধরনের অভিন্ন মাত্রা শক্তিকে বিনা প্রতিরোধে গ্রহণ করে না, ফলে রোগীর ক্ষেত্রে রোগ আরোগ্যের বদলে বৃদ্ধি দেখা দিতে পারে। এ জন্যই ওষুধের সত্যিকার ক্রিয়া লাভের জন্য ওষুধ ব্যবহারে মাত্রা শক্তির পরিবর্তন আবশ্যক (অর্গা ২৪৭, ক, ২৪৮, ৬ষ্ঠ)।

কত দিন পর্যন্ত ওষুধ চলবেঃ
একিউট রোগের ক্ষেত্রে নির্বাচিত ওষুধ প্রয়োগের পর যখন সুসপষ্ট উন্নতি দেখা দেয় এবং রোগী যতক্ষণ পর্যন্ত ভালো বোধ করতে থাকবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আর কোনো ওষুধ প্রয়োগ করা যাবে না (অর্গা-২৪৬, ৬ষ্ঠ)।

ক্রনিক রোগের ক্ষেত্রে যতক্ষণ পর্যন্ত একটা ওষুধ রোগীকে উপকার দিতে থাকে এবং নতুন কোনো লক্ষণ প্রকাশ না করে ততক্ষণ পর্যন্ত ওষুধটি ক্রমোন্নত শক্তিতে বর্ধিত মাত্রায় চালিয়ে যেতে হবে। (অর্গা-২৮০, ৬ষ্ঠ)

এক সময় একটি ওষুধ প্রয়োগ করতে হবেঃ
হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় এক সময় একটি মাত্র ওষুধ প্রয়োগ করতে হয়। একই সময় দুই বা ততোধিক ওষুধ প্রয়োগ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। বিজ্ঞানী হ্যানিম্যান বলেন, হোমিওপ্যাথিই হচ্ছে একমাত্র সঠিক এবং সহজ প্রাকৃতিক চিকিৎসা পদ্ধতি। তাই হোমিওপ্যাথিতে একই সময়ে দু’টি ভিন্ন প্রকৃতির ওষুধ প্রয়োগ সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ। কারণ চিকিৎসাধীন রোগীকে এক সময় একটির বেশি ওষুধ প্রয়োগের কোনো প্রয়োজন নেই।

ক্ষুদ্র মাত্রার পরিমাণ কী হবেঃ
হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় শক্তিকৃত ক্ষুদ্র মাত্রার ওষুধ প্রয়োগ করতে হয়। সর্বোত্তম আরোগ্য সাধনের জন্য মাত্রাকে কতটুকু ক্ষুদ্র করতে হবে? এ ব্যাপারে পরিমাণটা নির্দিষ্ট করা খুব কঠিন। তবে চিকিৎসকের গভীর জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা এবং রোগীর সংবেদনশীলতার নির্ভুল পর্যবেক্ষণই ক্ষুদ্রতম মাত্রার পরিমাণ ঠিক করে দেবে (অর্গা-২৭৮, ৫ম ও ৬ষ্ঠ)। 

সাধারণত শুকনো একটি ওষুধি গ্লোবিউলকে (যার ১০০টির ওজন এক গ্রেন) প্রাথমিকভাবে ক্ষুদ্র মাত্রার পরিমাণ হিসেবে বিবেচনা করা যায় (অর্গা-২৭২, ৬ষ্ঠ)। মাত্রাকে আরো ক্ষুদ্র করার জন্য একটি ওষুধি গ্লোবিউলকে পরিশ্রুত পানির সাথে (৭-৮ টেবিল চামচ) মিশ্রণ তৈরি করে ব্যবহার করতে হয় (অর্গা-২৪৮, ক, ৬ষ্ঠ)। অত্যন্ত সংবেদনশীল রোগীর জন্য প্রথমবার ব্যবহৃত ওষুধ মিশ্রণ থেকে গ্লাস বদলানো পদ্ধতিতে মাত্রাকে আরো ক্ষুদ্রতম করে ব্যবহার করা যেতে পারে। রোগী আরো বেশি সংবেদনশীল হলে ঘ্রাণে ওষুধ প্রয়োগ করতে হবে।

শিশুরা কিভাবে ওষুধ খাবেঃ
যারা দুগ্ধপোষ্য শিশু তারা কিভাবে ওষুধ সেবন করবে?
বিজ্ঞানী হ্যানিম্যান বলেছেন, দুগ্ধপোষ্য শিশুর ওপর ওষুধ তার মায়ের দুধের মাধ্যমে বিস্ময়করভাবে কার্যকরী। শিশুর জন্য নির্বাচিত ওষুধটি তার স্তন্যদায়িনী মাকে প্রয়োগ করতে হবে (অর্গা-২৮৪, ক, ৬ষ্ঠ)। কিন্তু মাত্রা কী হবে? হ্যাঁ, মাকে ওষুধ প্রয়োগ করলেও এ ক্ষেত্রে মাত্রা হবে সাধারণ মাত্রার তুলনায় কম (শসনপড়থয়প নসঢ়প)। অর্থাৎ সাধারণ মাত্রা যদি হয় এক টেবিল চামচ পরিমাণ, তবে শিশুর মায়ের জন্য হবে এক চা চামচ বা তার চেয়ে কম। (ক্রনিক ডিজিজেজ-পৃঃ ২৬৫)।


ক্রনিক রোগে ওষুধ প্রয়োগঃ
ক্রনিক রোগে যতক্ষণ পর্যন্ত একটি ওষুধ উপকার দেয়, ততক্ষণ পর্যন্ত ওষুধটি চালাতে হবে। কিন্তু কিভাবে?

প্রথমত, নির্বাচিত ওষুধটি চলবে ততক্ষণ পর্যন্ত, যতক্ষণ পর্যন্ত নতুন কোনো লক্ষণ প্রকাশ না পায়। ওষুধ প্রতিদিন কিংবা এক দিন পরপর ব্যবহার করতে হবে। ওষুধ ঘন ঘন প্রয়োগ করা ঠিক হবে না। তবে বিশেষ ক্ষেত্রে দিনে কয়েকবার পর্যন্ত ওষুধ দেয়া যেতে পারে (অর্গা, ২৮২, ক, ৬ষ্ঠ)।

দ্বিতীয়ত, ওষুধটি প্রয়োগ করতে হবে ক্রমোন্নত ও পরিবর্তিত শক্তিতে। অর্থাৎ ওষুধের প্রথম শক্তি উপকার দিলে দ্বিতীয় শক্তি, তৃতীয় শক্তি এভাবে এবং প্রতিবার সেবনের পূর্বে ঝাঁকি (৮, ১০, ১২) দিতে হবে।

তৃতীয়ত, উপকার প্রাপ্ত ওষুধের মাত্রাটাও ধীরে ধীরে বাড়াতে হবে (অর্গা ২৮০, ৬ষ্ঠ, কুনজলি)।

চতুর্থত, ওষুধ ব্যবহার করতে হবে ততক্ষণ পর্যন্ত যতক্ষণ রোগী সাধারণভাবে সুস্থতা বোধ করবে এবং তার এক বা একাধিক পুরনো রোগ লক্ষণ পরিবর্তিত পর্যায়ে ফিরে না আসবে-(অর্গা, ২৮০, ৬ষ্ঠ, কুনজলি)।

পঞ্চমত, পরিবর্তিত এবং ক্রমোন্নতি শক্তি ও বর্ধিত মাত্রায় ওষুধ ব্যবহারে যখন পুরনো রোগ লক্ষণ ফিরে আসবে তখন বুঝতে হবে যে রোগীর আরোগ্য আসন্ন। এ অবস্থায় রোগীর ওষুধ এক বা দুই সপ্তাহ বন্ধ রাখতে হবে। এ সময় রোগীকে প্লাসিবো দিয়ে পর্যবেক্ষণ করে যেতে হবে (অর্গা, ২৮১, ৬ষ্ঠ, কুনজলি)।

ষষ্ঠত, ওষুধবিহীন পর্যবেক্ষণকালে যদি আগত পুরনো রোগের লক্ষণগুলো কয়েক দিন বা কয়েক ঘণ্টার মধ্যে চলে যায় এবং আর কোনো লক্ষণ ফিরে না আসে এবং রোগী স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে শুরু করে তাহলে বুঝতে হবে রোগী আরোগ্য লাভ করেছে (অর্গা-২৮১, ৬ষ্ঠ, কুনজলি)। সুতরাং তাকে আর কোনো ওষুধ দেয়ার প্রয়োজন নেই।

সপ্তমত, ওষুধবিহীন পর্যবেক্ষণকালে যদি পুরনো রোগের লক্ষণগুলো আসতেই থাকেএবং তা চলে না গিয়ে থেকেই যায় তাহলে পুনরায় নির্বাচিত ওষুধের উচ্চতর শক্তির দ্বারা পূর্ব নিয়মে চিকিৎসা চালিয়ে যেতে হবে (অর্গা, ২৮১, ৬ষ্ঠ, কুনজলি)।

অষ্টমত, এমনি অবস্থায় ওষুধ প্রয়োগে আগের মতো মাত্রাকে অবশ্যই ক্রমান্বয়ে বাড়াতে হবে. কিন্তু রোগী যদি একটু বেশি অনুভূতিপ্রবণ হয় তাহলে কি মাত্রা একই হারে ক্রমান্বয়ে বাড়ানো যাবে না। এ ক্ষেত্রে অত্যন্ত ধীর গতিতে এবং সামান্য পরিমাণে মাত্রা বাড়াতে হবে। অথচ সাধারণ ক্রনিক রোগীদের ক্ষেত্রে এ মাত্রা অত্যন্ত দ্রুত গতিতে বাড়ানো যায়। রোগী যদি আরো বেশি অনুভূতিপ্রবণ হয় তাহলে মাত্রা যথাসম্ভব ক্ষুদ্র করতে হবে।

গর্ভবতী মাকে ওষুধ সেবনঃ
গর্ভাবস্থার প্রথম দিকে মাকে এন্টিসোরিক ওষুধ সেবন করানোর জন্য বিজ্ঞানী হ্যানিম্যান পরামর্শ দিয়েছেন। এ সময় নতুন পদ্ধতিতে শক্তিকৃত সালফার প্রয়োগের জন্য তিনি নির্দেশ দিয়েছেন। যাতে করে গর্ভস্থ সন্তান সোরামুক্ত হতে পারে। কারণ সোরা হচ্ছে অধিকাংশ ক্রনিক রোগের প্রধান কারণ এবং যা উত্তরাধিকার সূত্রে সন্তানের মধ্যে প্রবাহিত হয়। এভাবে জন্মের সময় থেকেই সন্তানকে সোরার প্রভাবমুক্ত করতে পারলে ভবিষ্যতে সে সুস্থ সবল জীবনযাপন করতে পারবে। বিজ্ঞানী হ্যানিম্যান জোর দিয়ে বলেছেন, সবার কাছে বিস্ময় লাগে যে, এভাবে চিকিৎসিত স্ত্রীলোকদের সন্তানরা সাধারণভাবে অধিকতর শক্তিশালী ও স্বাস্থ্যবান হয়ে জন্ম নেয়, এটা আমার সোরাতত্ত্বের মহান সত্যেরই একটি প্রমাণ (অর্গা, ২৮৪, ক, ৬ষ্ঠ।

স্মরণ রাখা দরকার গর্ভবতী মাকে প্রথম পর্যায়ে সালফার দিয়েই চিকিৎসা শুরু করতে হবে। কিন্তু তাকে লক্ষণ অনুযায়ী অন্যান্য ওষুধও সময় সময় দিতে হবে। এভাবে পূর্ণ গর্ভকালীন সময়টা একজন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে থাকলে নিরাপদ প্রসবের নিশ্চয়তা দেয়া যায়।

মহিলাদের মাসিক স্রাবের সময়ে ওষুধ প্রয়োগ বিধানঃ
বিজ্ঞানী হ্যানিম্যান মহিলাদের মাসিক স্রাব শুরুর আগে এবং মাসিক স্রাব চলাকালীন ক্রনিক রোগে ওষুধ প্রয়োগ করতে নিষেধ করেছেন। যদি প্রয়োজন হয় তাহলে স্রাব চলার চতুর্থ দিন থেকে ওষুধ প্রয়োগ করা যেতে পারে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে যেমন অপরিপক্ব মাসিক, অত্যধিক রক্তস্রাব কিংবা দীর্ঘদিনস্রাব চলতে থাকলে চতুর্থ দিনে উচ্চশক্তির নতুন পদ্ধতির নাক্সভমিকা ঘ্রাণে প্রয়োগ করতে হয়। 

এরপর আবার ষষ্ঠ দিন থেকে এন্টিসোরিক ওষুধ দিতে হবে। যদি কোনো রোগী এসব ক্ষেত্রে অত্যন্ত সংবেদনশীল ও স্নায়বিক কাতর হয় তাহলে তাকে তার স্রাব শুরু হওয়ার পর থেকে প্রতি তিন দিন পর একবার নাক্স ভমিকা ঘ্রাণে প্রয়োগ করতে হবে। এ সময় তার এন্টিসোরিক ওষুধ বন্ধ না রেখে চালিয়ে যেতে হবে। কারণ মাসিক স্রাবের এ নাজুক অবস্থায় মাঝে মধ্যে যদি নাক্স ভমিকা প্রয়োগ না করা হয়, তাহলে ক্রনিক রোগের আরোগ্যের জন্য কিছুই করা যাবে না। 

বিশেষত নাক্স ভমিকা রোগীর স্নায়বিক বিশৃঙ্খলাকে শৃঙ্খলায় ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে। মাসিক স্রাবের অস্বাভাবিকতা রোগীর মধ্যে এক ধরনের মানসিক উত্তেজনা ও অস্থিরতার জন্ম দেয়, যা এন্টিসোরিক ওষুধের ক্রিয়াকে প্রচণ্ডভাবে বাধাগ্রস্ত করে। এ কারণেই মাঝে মধ্যে নাক্স ভমিকা প্রয়োগ করে এন্টিসোরিক ওষুধের ক্রিয়াকে গতিশীল করে নিতে হয় (ক্রনিক ডিজিজেজ, পৃঃ ২৩৫)।

Related Topics Click Here::





Dr.Kent's 12 observations and explanations
September 09, 2021
ডা. কেন্টের ১২টি পর্যবেক্ষণ ও ব্যাখ্যা:
Dr.Kent's 12 observations and explanations
১। দীর্ঘকালীন রোগের বৃদ্ধি, শেষ পর্যন্ত রোগীর ক্রমাবনতি।
ব্যাখ্যা : এক্ষেত্রে বুঝতে হবে জীবনীশক্তি খুব দুর্বল, ফলে গভীর অ্যান্টি-সোরিক ওষুধ সহ্য করতে পারছে না। তাই দীর্ঘকালীন রোগ বৃদ্ধি। বা 30 শক্তির বেশি অর্থাৎ উচ্চ শক্তির ঔষধ ব্যবহার করা ঠিক হয়নি। নিম্ন শক্তির ঔষধ ব্যবহার করা উচিত ছিল। রোগের কারণে শরীরের কোন যন্ত্রের পরিবর্তন হয়ে গেছে। রোগ সারার অবস্থায় নাই। এই দীর্ঘকালীন বৃদ্ধিকে এখন‌ই কোন নিম্ন শক্তির ঔষধ দিয়ে উপশম করা দরকার। নচেৎ জীবন সংশয় হওয়ার আশঙ্কা আছে। এরূপ অবস্থায় প্রথম থেকেই নিম্ন শক্তির ঔষধ দিয়ে জীবনী শক্তিকে উজ্জীবিত করার চেষ্টা করা ভালো।

২। দীর্ঘকালীন বৃদ্ধি ও শেষে ধীরগতিতে রোগের উন্নতি।
ব্যাখ্যা : ঔষধ প্রয়োগের পর কয়েক দিন বা কয়েক সপ্তাহ রোগ বৃদ্ধির পর যদি অল্প অধীর গতিতে উপশম হতে থাকে, তাহলে বুঝবেন শরীরের ভিতরে অল্প হলেও টিসুর পরিবর্তন শুরু হয়েছে। জীবনীশক্তি যান্ত্রিক প্রক্রিয়া তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে। তাই ধীরে ধীরে রোগ সারার দিকে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে রোগের গতি প্রকৃতি লক্ষ্য করে যেতে হবে। ঔষধ ঘন ঘন দেয়া যাবে না। প্রয়োজনে অনেকদিন অপেক্ষা করতে হতে পারে। তা কয়েক মাসও হতে পারে।

৩। তড়িঘড়ি কিন্তু সংক্ষিপ্ত ও জোরালো রোগ বৃদ্ধি, তারপর শুরু হয় অতি দ্রুত গতিতে রোগের উন্নতি।
ব্যাখ্যা : এক্ষেত্রে বুঝতে হবে জীবনীশক্তির প্রতিক্রিয়া খুবই জোরালো, শরীরে কোন যান্ত্রিক পরিবর্তন হয়নি, অতি প্রয়োজনীয় যন্ত্রের খারাপ কোনো পরিবর্তন হয়নি। এক্ষেত্রে রোগ সম্পূর্ণ নিরাময় হবে ও নিরাময় দীর্ঘস্থায়ী হবে। এই বৃদ্ধি হোমিওপ্যাথিক বৃদ্ধি। অস্বাভাবিক নয়। বুঝতে হবে, ঔষধ নির্বাচন সঠিক হয়েছে কিন্তু শক্তি ও মাত্রা একটু বেশি হয়েছে। ঔষধ প্রয়োগের পর বৃদ্ধি লক্ষ্য করা গেলে, ঔষধ পুনঃ প্রয়োগ করা যাবে না। তরুণ রোগের ক্ষেত্রে প্রায় এসব লক্ষ্য করা যায়।

৪। কিছু কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে দেখা যায় ঔষধ প্রয়োগের পর রোগ আদৌ বৃদ্ধি হয় না বরং স্বাভাবিক নিরাময়ের দিকে যাচ্ছে।
ব্যাখ্যা : এ অবস্থা থেকে বোঝা যায় ঔষধের শক্তি ও মাত্রা সঠিক হয়েছে, যা সচরাচর আশা করা যায় না। জীবনীশক্তি যথেষ্ট শক্তিশালী অবস্থায় রয়েছে। শরীরের কোন যান্ত্রিক পরিবর্তন হয়নি।

৫। রোগ লক্ষণ সমূহের প্রথমে উপশম শুরু হলো তারপরে বৃদ্ধি হতে থাকলো।
ব্যাখ্যা : ওষুধ প্রয়োগের কয়েক দিন বা ১/২ সপ্তাহ পর থেকে ঔষধ প্রয়োগের আগের অবস্থা ফিরে আসে। অনেক সময় কিছু লক্ষণ নিয়ে ফিরে আসে।
ডা. কেন্ট এর দুটি কারণ ব্যাখ্যা করেছেন যথা :
(ক) নির্ধারিত ঔষধটি হয়তো আংশিক সঠিক হয়েছে, ফলে রোগ পূর্ণ নিরাময়ের বদলে, উপশম হয়েছিল তাই কয়েকদিনের মধ্যে আবার লক্ষণগুলি ফিরে আসছে। এর মানে রোগীকে ধাতুগত ভাবে যথাযথ বিচার বিশ্লেষণ করা হয়নি।
কিন্তু যদি ঔষধ সুনির্বাচিত হয়েছে বলে মনে হয় তাহলে আরো উচ্চ শক্তি প্রয়োগে ভালো ফল পাওয়া যায়। তাতেও রোগলক্ষণ ফিরে ফিরে আসলে, আরো উচ্চ শক্তি দিতে হবে।
(খ) তাতেও নিরাময় না হলে বুঝবেন রোগটি সারার অবস্থায় নাই। সে ক্ষেত্রে নির্বাচিত ঔষধের নিম্নশক্তি দিয়ে রোগটিকে উপশম করে রাখার চেষ্টা করতে হবে।
মন্তব্য : সুনির্বাচিত আন্টি-মায়াজমটিক ঔষধে ১/২ মাত্রাতেই কাজ হয় ও পূর্ণ আরোগ্য হয়।

৬। ঔষধ প্রয়োগের পর খুব কম সময়ের জন্য রোগ লক্ষণ উপশম হয়।
ব্যাখ্যা : ঔষধ প্রয়োগের পর দীর্ঘকালীন ও স্থায়ী রোগ আরোগ্য থাকার কথা কিন্তু তা থাকছে না। কারণ এমন কিছু প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়ে আছে ফলে এমন হচ্ছে।
যথা : কেউ নেশা জাতীয় দ্রব্য তামাক, জর্দা, মদ ইত্যাদি সেবন করে, ফলে ঔষধের কাজে বাধা সৃষ্টি করে। এসব ত্যাগ করলেই ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে এটাই প্রমাণ হয় যে ঔষধ নির্বাচন সঠিক আছে, রোগীর জীবনীশক্তি ঠিক আছে।
অনেক সময় চিররোগের ক্ষেত্রে রোগ না সারার পিছনে কোন ধাতুগত কারণ লুকিয়ে থাকে। সে ক্ষেত্রে কোন আন্টি-মায়াজমটিক ঔষধ প্রয়োগে বাধা দূর হয়ে স্থায়ী আরোগ্য হয়। আবার এমনও হতে পারে যে দেহের অভ্যান্তরে যন্ত্রাংশ খুব খারাপ অবস্থায় আছে বা ধ্বংস হয়ে গেছে। যা চিররোগের ক্ষেত্রে হয়, সে ক্ষেত্রে ফলাফল অস্থায়ী হতে পারে।
অচির রোগের ক্ষেত্রে ঔষধ পুনঃ পুনঃ প্রয়োগ করা উচিত, তাতে প্রতিবারেই অল্প সময়ের জন্য হলেও উপশম দেখা দিবে, শেষ পর্যন্ত রোগী সুস্থ হয়ে উঠবে।

৭। রোগ লক্ষণগুলি পুরোপুরি বিলুপ্ত হয়েছে তবুও রোগী পূর্ণভাবে সুস্থতা অনুভব করছে না।
ব্যাখ্যা : হোমিওপ্যাথি মতে ঔষধ প্রয়োগের পর রোগ লক্ষণগুলি বিলুপ্তি হওয়ার সাথে সাথে মন ভালো হবে, শরীরে জোর পাবে, মন ও শরীর তাজা হবে, ক্ষুধা, ঘুম হজম, মল, মুত্র ত্যাগ স্বাভাবিক হবে, স্বাছন্দবোধ করবে। কিন্তু এর ব্যাতিক্রম হলে বুঝবেন রোগী সুস্থ হয়নি।
রোগী ও পূর্ণ সুস্থতা ফিওে আসছে না; কারণ দেহ অভ্যন্তরে এমন কিছুর অভাব আছে বা দেহের যন্ত্রাংশের এমন কিছু স্থায়ী ক্ষতি হয়ে গেছে যে , রোগীকে খানিকটা সুস্থ করলেও পুরোপুরি সারিয়ে তুলতে পারছে না।
যদিও ঔষধ নির্বাচন সঠিক হয়েছে, যথেষ্ঠ সময় নিয়ে কাজ করছে, রোগ লক্ষণ দুর হয়েছে, তবুও রোগী পূর্ণ না হয়ে আংশিক সুস্থ হচ্ছে।
বুঝতে হবে এ রোগটি সম্পূর্ণ সুস্থ হবে না বা হবার নয়।

৮। এমন কিছু কিছু রোগী আছে যারা প্রত্যেকটি ঔষধ সেবন করে প্রুভারের মতো আচরণ করে।

ব্যাখ্যা : এইসব রোগীরা অল্পতেই এমনই উত্তেজিত যে, যে কোন বাহিরের বস্তুতে সে অদ্ভুত উত্তেজিত হয়, ঠিক তড়কা রোগীর মতো। যে কোন কারণেই হোক এদের স্নায়ুতন্ত্র ভীষণভাবে উত্তেজিত হয়। এদের শরীর হোমিওপ্যাথি ঔষধ প্রুভিংয়ের জন্য বেশ উপুযুক্ত। বিশেষ করে উচ্চতর শক্তি প্রয়োগ করলে এদের শরীরে ঔষধের লক্ষণাবলী পরিস্কারভাবে ফুটে উঠে।
এসব ক্ষেত্রে তরুণ রোগ সারাতে কোন অসুবিধা হয় না। কিন্তু চির রোগে উচ্চতর শক্তির ঔষধ প্রয়োগ করলে এই ধরণের রোগীরা অদ্ভুত আচরণ করে। তবে ৩০, ২০০ শক্তিতে স্বাভাবিক আচরণ করে।
মন্তব্য : এসব রোগীরা দুরারোগ্য। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সারার অযোগ্য।

৯। প্রুভারদের উপর হোমিও ঔষধের কার্যাবলী ।
ব্যাখ্যা : সুস্থ প্রভারদের দ্বারা সঠিক পদ্ধতিতে নিখুঁত ও সম্পূর্ণভাবে প্রুভিং হওয়া উচিৎ। কারণ তা থেকেই নিখুঁত মেটিরিয়া মেডিকা তৈরী হবে। তাতে প্রুভাররা উপকৃত হন। প্রুভারদের ধাতুগত বৈচিত্র ভালো ভাবে লক্ষ্য করে লিখে রাখা উচিত। কারণ প্রুভিংয়ের পর কোন পরিবর্তন হলে তা প্রুভিংকৃত ঔষধের লক্ষণ হিসাবে বিবেচিত হবে এবং ঔষধের লক্ষণাবলী স্পষ্ট হবে। অর্গাননে নিদৃষ্ট করা আছে কিভাবে প্রুভিং হওয়া উচিত।

১০। ঔষধ প্রয়োগের পর নতুন নতুন লক্ষণাবলী দেখা দেয়।
ব্যাখ্যা : যদি দেখা যায় ঔষধ প্রয়োগের পর প্রচুর পরিমানে নতুন নতুন লক্ষণ বার বার ফিরে আসছে আবার চলেও যাচ্ছে কিন্তু রোগীর চিহিৃত নিদৃষ্ট লক্ষণাবলী যাচ্ছে না বা সারছে না তা হলে বুঝবেন ঔষধ নির্বাচন সঠিক হয়নি।
হয়তো এটা ঠিক যে এগুলো রোগীর নতুন লক্ষণ নয়। এগুলি পুরানো লক্ষণ, যা রোগীর স্বরণে ছিলো না।
এসব ঘটনা প্রমান করে ঔষধ নির্বাচন সঠিক হয়নি। নতুন করে ভালো ভাবে পর্যবেক্ষণ করে ঔষধ নির্বাচন করতে হবে।

১১। ঔষধ প্রয়োগের পর রোগীর পুরানো লক্ষণাবলী একের পর এক ফিরে আসছে।
ব্যাখ্যা : যদি দেখা যায় পুরানো লক্ষণাবলী একের পর ফিরে আসছে, কিছুদিন পর চলেও যাচ্ছে এবং ক্রমশ সুস্থবোধ করছে, তাহলে বুঝবেন রোগী সারার পথে
আছে। এক্ষেত্রে ঔষধ পুনঃ প্রয়োগ প্রয়োজন নাই। লক্ষণাবলীর এই আসা-যাওয়া বহুদিন চলতে পারে, মাসের অধিক কাল চলতে পারে। লক্ষ্য করতে হবে লক্ষণগুলি দেহের অভ্যন্তর হতে বাহির দিকে, উপর থেকে নীচের দিকে, দেহের বেশি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ থেকে কম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের দিকে যাচ্ছে কি না ?
যদি দেখা যায় পুরানো কোন লক্ষণ এসে চলে না গিয়ে থেকে গেল তাহলে ঔষধটি পুনঃ প্রয়োগের প্রয়োজন হতে পারে বা নতুন কোন ঔষধ নির্বাচনের প্রয়োজন হতে পারে।

১২। ঔষধ প্রয়োগের পর থেকে রোগ লক্ষণাবলী উল্টো পথে চলছে।
ব্যাখ্যা : রোগ সারার নিদৃষ্ট নিয়ম আছে। যথা :
(ক) রোগীর রোগ লক্ষণসমূহ উপর থেকে নীচ অর্থাৎ মাথা থেকে পায়ের দিকে যাবে।
(খ) দেহের অভ্যন্তর হতে বাহির দিকে যাবে।
(গ) দেহের বেশি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ থেকে কম গুরুত্ব অঙ্গের দিকে যাবে।
কিন্তু যদি দেখা যায় রোগ লক্ষনগুলি এই নিয়মের উল্টোপথে চলছে তাহলে বুঝতে হবে রোগটি সারার পথে নাই। এবং ক্রমশই রোগীকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। যথা - চর্মরোগ ভালো হয়ে হাঁপানী দেখা দিলো বা বাতের অসুখ ভালো হয়ে হার্টের অসুখ দেখা দিলো। এই লক্ষণ মোটেও ভালো নয়। দ্রুত এই অবস্থাকে প্রতিষেধক করতে হবে। এই ভাবে রোগ লক্ষণ উল্টো পথে প্রসারিত হলে রোগীর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

Miasm
September 05, 2021
মায়াজম পরিচিতি:
Miasm আক্রান্ত রোগীই চিররোগ। তাই এ সংশ্লিষ্ট রোগী চিকিৎসায় মায়াজম সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারনা থাকা অবশ্যই দরকার/প্রয়োজন।

উল্লেখ্য যে, কেবল মাত্র, প্রাকৃতিক ও সদৃশ বিধান “হোমিওপ্যাথি” চিকিৎসায়- ই Miasm ধ্বংস করতে পারে। অনেকের ধারণা সোরা একটা মায়াজম, যার দ্বারা চিররোগের আটভাগের সাতভাগ সংঘটিত হয়। কিন্তু এখানেই আমাদের মারাত্নক ভুল। সোরা মায়াজম নয়, একটা মায়াজমেটিক অবস্থা যা সোরিক মায়াজমের দ্বারা সৃষ্টি হয়। সিফিলিস ও সাইকোসিস মায়াজম নয় মায়াজমেটিক অবস্থা, যা সিফিলিটিক ও সাইকোটিক মায়াজম দ্বারা সৃষ্ট হয়। একটা রোগাবস্থা এবং তার কারণ এক নয়।টিউবারকুলোসিস টিউবারকুলার কখনই এক হতে পারে না। দ্বিতীয়টি হলো কারণ এবং প্রথমটি হলো রোগ।

মায়াজম কি?
মায়াজম হল হোমিওপ্যাথির গোড়ার কথা এবং এই গোড়ার কথাটি গোড়া থেকে বুঝে না নিলে এবং তদ্রুপ ব্যবস্থাপত্র অজানা থাকলে চিকিৎসকের সকল শ্রম যে পন্ডশ্রমে পরিণত হবে তাতে সন্দেহ নেই।

হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা বিধান মতে, মায়াজম হল রোগের মূল কারণ এবং জীবাণু গুলো হল উত্তেজক কারণ।যে সকল প্রাকৃতিক অদৃশ্য কারণসমূহ হইতে রোগ উৎপত্তি হয়, সে সকল কারণ সমূহকে মায়াজম বলে।

মহাত্মা হ্যানিম্যান বলেন, “যাবতীয় রোগ মায়াজমের অশুভ প্রভাবে সৃষ্টি হয়।” মায়াজম শব্দের অর্থ উপবিষ, কলুষ, পুতিবাষ্প, ম্যালেরিয়ার বিষ প্রভৃতি। যাবতীয় রোগের কারণই হল এই মায়াজম। তরুণ পীড়া তরুণ মায়াজমের অশুভ প্রভাবে এবং চিররোগ চির মায়াজমের অশুভ প্রভাবে সৃষ্টি হয়। ইহা প্রাকৃতিক রোগ সৃষ্টিকারী দানব।

হ্যানিম্যান বলেছেন, চিররোগ সৃষ্টির মূল কারণ হইল তিনটি চিররোগবীজ। ইহাদের মধ্যে সোরা হইল আদি রোগ বীজ। সকল রোগের মূল কারণ হইল সোরা।

হ্যানিম্যান বলেছেন, বংশ পরস্পরের মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ মানব দেহের মধ্যে এই সোরা মায়াজম কল্পনাতীতভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এখন অসংখ্য প্রকারের বিকৃতি, ক্ষত, বিশৃঙ্খলা ও যন্ত্রণার প্রতিমূর্তি রুপে অন্ত পীড়ায় সৃষ্টি করে থাকে। অপরদিকে দূষিত সঙ্গমের মাধ্যমে সাইকোসিস ও সিফিলিস মায়াজম অর্জিত হয়। এই দিক দিয়া চিন্তা করিলে মায়াজমকে আমরা অর্জিত এবং বংশানুক্রমিক উভয়ই বলতে পারি

সুতরাং মায়াজম হচ্ছে এক ধরনের গতিময় দূষণ মাধ্যম যাহা জীব দেহের মধ্যে বিভিন্ন অঙ্গে একবার প্রবিষ্ট হলে জীবনীশক্তির উপর প্রভুত্ব করে, ব্যক্তিকে সার্বিকভাবে এমনিধারায় দূষিত করে যার পিছনে একটি স্থায়ী রোগজ অবস্থা স্থাপন করে যাহা সম্পূর্ণ রুপে মায়াজম বিরোধী প্রতিকারক দ্বারা দূরীভূত না হলে রোগীর সারাজীবন ব্যাপী বিরাজ করবে এবং বংশপরস্পরায় প্রবাহমান থাকে।

কোন রোগ স্থুল ঔষধ প্রয়োগে বা অসম বিধানে চিকিৎসা করায় তার দ্বারা চাপা পড়ে শক্তিশালী রোগ বীজ নামে দেহাভ্যন্তরে অবস্থান করে। এটাই রোগ জীবানু বা উপবিশ (Miasm)। এই উপবিষই (Miasm) যা বংশ পরস্পরায় মানব দেহে চিরস্থায়ী রুপ লাভ করে।

মায়াজম হচ্ছে এমন কিছু যা একবার মানব দেহে ঢুকলে এবং সুচিকিৎসিত না হলে এমন একটা অবস্থার সৃষ্টি করে, যা সারা জীবন ধরে চলতে থাকে এবং সন্তান সন্ততির মধ্যেও তার ফলজনিত অস্বাভাবিক অবস্থার চিহ্ন প্রায়শই সুপ্ত অবস্থায় বর্তমান থাকে।
Miasm
মায়াজম অর্জিত না বংশানুক্রমিক -- হ্যানিম্যানের মতে মায়াজম বা  অশুভ প্রভাবের ফলে যাবতীয় চিররোগ সৃষ্টি হয়। লক্ষ্যণীয় যে আদিরোগবীজ সোরা মায়াজম আদিকাল হইতে মানব সমাজে বংশানুক্রমে বিস্তৃতি লাভ করিয়াছে। অপরদিকে দূষিত সঙ্গমের মাধ্যমে সাইকোসিস ও সিফিলিস মায়াজম অর্জিত হয়। এইদিক দিয়া চিন্তা করিলে মায়াজমকে আমরা অর্জিত এবং বংশানুক্রমিক উভয়ই বলিতে পারি। 

হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা বিজ্ঞানের জনক জার্মানীর ডাঃ স্যামুয়েল হ্যানিম্যান (এম,ডি) এর মতানুসারে মুসা (আঃ) যুগ হতে সোরা এর আবিভাব। তিনি বলেন, মানুষের পাপের প্রায়শ্চিক্তই  সোরা বা কুন্ডয়ন। আর সোরার বহিঃ প্রকাশ হলো চুলকানি।

মায়াজম (Miasm) প্রধানত তিন প্রকার।

Psora: বা কুন্ডয়ন অসম বিধানে চিকিৎসা করায় তা উপবিষ নামে দেহাভ্যন্তরে লুপ্ত অবস্থায় সজীব থাকে। এই সজীব Psora বীজানুই Psoric Miasm.

Sycosis: দেহে অবস্থান নিলে বাহ্যিক ভাবে আচিল বা টিউমার প্রকাশ করে, তা অসম বিধানে চিকিৎসা করলে উপবিষ সৃষ্টি হয়ে দেহে চিরস্থায়ী ভাবে অবস্থান নেয়। Sycosis এর উপবিষই Sycosis Miasm.

Syphilis: যৌন ক্ষত অসম বিধানে চিকিৎসায় চিরস্থায়ী সিফিলিস উপবিষ নামে বীজানু দেহে স্থায়ী বসবাসের সুযোগ পায়। এই Syphilis উপবিষই Syphilitic Miasm.

Tuberculosis: উপরে উল্লেখিত এই তিন ধরনের Miasm- ই যখন উত্তরসূরীর দেহে স্থানান্তরিত হয় তখন তাকে Tuberculosis বলা হয়।

Vaccin Miasm: সভ্য সমাজে আমরা আরও একটি মানব সৃষ্ট আর এক প্রকার মায়াজম দেখতে পাই। আর তা হলো বিভিন্ন Vaccin Miasm. অর্থাৎ টীকা ও ইনজেকশন মানবদেহে পুশ করার পর যে Miasm এর সৃষ্টি হয়, তাই Vaccin Miasm.

হোমিওপ্যাথি মেডিকেল সায়েন্স এর জনক ডাঃ স্যামুয়েল হ্যানিম্যান (এম,ডি) অর্গানন বই এর ৭৮ নং সূত্র অনুসারে Miasm আক্রান্ত রোগীই চিররোগ। তাই এ সংশ্লিষ্ট রোগী চিকিৎসায় মায়াজম সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারনা থাকা অবশ্যই দরকার / প্রয়োজন। উল্লেখ্য যে, কেবল মাত্র, প্রাকৃতিক ও সদৃশ বিধান "হোমিওপ্যাথি" চিকিৎসায়ই  Miasm ধ্বংস করতে পারে।

মায়াজম হচ্ছে এমন কিছু যা একবার মানব দেহে ঢুকলে এবং সুচিকিৎসিত না হলে এমন একটা অবস্থার সৃষ্টি করে, যা সারা জীবন ধরে চলতে থাকে এবং সন্তান সন্ততির মধ্যেও তার ফলজনিত অস্বাভাবিক অবস্থার চিহ্ন প্রায়শই সুপ্ত অবস্থায় বর্তমান থাকে

অনেকের ধারণা সোরা একটা মায়াজম, যার দ্বারা চির রোগের আট ভাগের সাত ভাগ সংঘটিত হয়। কিন্তু এখানেই আমাদের মারাত্নক ভুল। সোরা মায়াজম নয়, একটা মায়াজমেটিক অবস্থা যা সোরিক মায়াজমের দ্বারা সৃষ্টি হয়।

সিফিলিস ও সাইকোসিস মায়াজম নয় মায়াজমেটিক অবস্থা, যা সিফিলিটিক ও সাইকোটিক মায়াজম দ্বারা সৃষ্ট হয়। একটা রোগাবস্থা এবং তার কারণ এক নয়। টিউবার-কুলোসিস ও টিউবারকুলার ব্যাসিলাই কখনই এক হতে পারে না। দ্বিতীয়টি হলো কারণ এবং প্রথমটি হলো রোগ।

মায়াজম (Miasm): কোন রোগ স্থুল ঔষধ প্রয়োগে বা অসম বিধানে চিকিৎসা করায় তার দ্বারা চাপা পড়ে শক্তিশালী রোগ বীজ নামে দেহাভ্যন্তরে অবস্থান করে। এটাই রোগ-জীবানু বা উপবিষ (Miasm)। এই উপবিষই (Miasm) যা বংশ পরস্পরায় মানব দেহে চিরস্থায়ী রুপ লাভ করে।

মায়াজম ক্ষেত্রে আমরা কিছু ভুল করি, যেমন-
১. সোরাকে আমরা মায়াজম বলি, প্রকৃত পক্ষে সোরা কিন্তু মায়াজম নয়। একটা মায়াজমেটিক অবস্থা যা সোরিক মায়াজমের দ্বারা সৃষ্টি হয়।
            🌱প্রকৃত পক্ষে মায়াজমটি হলো সোরিক।

২. সিফিলিসকে আমরা মায়াজম বলি, প্রকৃত পক্ষে সিফিলিস কিন্তু মায়াজম নয়। একটা মায়াজমেটিক অবস্থা যা সিফিলিটিক মায়াজম দ্বারা সৃষ্টি হয়।
            🌱প্রকৃত পক্ষে মায়াজমটি হলো সিফিলিটিক।  

৩. সাইকোসিসকে আমরা মায়াজম বলি, প্রকৃত পক্ষে সাইকোসিস মায়াজম নয়। এটা মায়াজমেটিক অবস্থা, যা সাইকোটিক মায়াজম দ্বারা সৃষ্ট হয়।
            🌱প্রকৃত পক্ষে মায়াজমটি হলো সাইকোটিক।

৪. টিউবারকুলোসিসকে আমরা মায়াজম বলি, প্রকৃত পক্ষে টিউবারকুলোসিস মায়াজম নয়। এটা মায়াজমেটিক অবস্থা, যা টিউবারকুলার মায়াজম দ্বারা সৃষ্ট হয়। 
            🌱প্রকৃত পক্ষে মায়াজমটি হলো টিউবারকুলার।

ডা. অ্যালেন ষষ্ঠ সংস্করণ পড়েন নাই। তবুও ১৯ নং সূত্রের ব্যাখ্যা মায়াজমের দৃষ্টিভঙ্গিতে প্রাঞ্জলভাবে দিয়েছেন। ডা. অ্যালেন বললেন,

“In other words; disease is but the influence of some subversive force, acting in conjunction with the life force, subverting the action and changing the physiological momentum.”

ডা. অ্যালেনের এই বক্তব্যটি বোঝা বেশ কঠিন। সহজ করে কিছু বলি। ধরুন একজন ব্যক্তি মুখের ঘা (Ulcer) ও উচ্চরক্তচাপ (High pressure) নামক অবস্থাতে ভুগছেন। অর্থডক্স স্কুলের নিয়ম অনুসারে, এটি ভিন্ন রোগ সুতরাং রোগের অবস্থানও ভিন্ন। ডা. অ্যালেন দৃষ্টিভঙ্গিতে দুটি রোগই একই রোগ-সৃজনী শক্তির দ্বারা সৃষ্ট। এখানে সোরা ও সিফিলিসে মিলিত আক্রমণের ফসল। আসলে ব্যক্তি স্বতন্ত্রতার জন্য ভিন্ন ভিন্ন প্রকাশ হলেও দুটোই একই মায়াজমের ক্রিয়ার ভিন্ন ভিন্ন রূপ। তাই রূপের মোহে অন্ধ না হয়ে মায়াজমের এই স্বরূপটি উপলব্ধি করতে পারলে রোগীকে সহজেই আরোগ্য করতে পারবো। মায়াজম নাশক ওষুধ দিলে মায়াজমের প্রভাব কেটে গেলেই প্রাণশক্তির প্রভাবে আবার পূর্বের অবস্থায় ফিরে আসবে।

সোরা মায়াজম (Psora):
পৃথিবীর সর্বাপেক্ষা প্রাচীন, সর্বাপেক্ষা ব্যাপক এবং মারাত্বক মায়াজম ঘটিত চিরব্যাধি হইল সোরা। যুগ যুগ ধরিয়া এই সোরা মানব সমাজে অজস্র রকমের বিচিত্র চির ও অচির পীড়ার জনকরূপে ক্রিয়াশীল রহিয়াছে। যাবতীয় চির ও অচির রোগ আক্রমনের প্রবণতার মুলে রহিয়াছে চিরমায়াজম সোরা। সোরার প্রথম পরিচয় মানব মনে। অপ্রয়োজনীয় সামগ্রী পাইবার ব্যাকুলতাপূর্ণ কামনা বা মানসিক চঞ্চলতাই সোরার আদি বা প্রাথমিক চিত্র।

সোরা শব্দের ব্যুৎপওিগত অর্থ হইল খোস পাঁচড়া, চুলকানি প্রভৃতি চর্মরোগ, স্ক্যাবিস, সোরিয়াসিস কুষ্ঠ ইত্যাদি এবং চর্মরোগ জীবাণু। ডাঃরবার্টসের মতে সোরা হিব্রুু শব্দ Tsoral হতে উৎপন্ন হয়েছে এবং পরবর্তীকালে গ্রীক ও ল্যাটিন ভাষার মধ্য দিয়া রূপান্তরিত হইয়া Psora হইয়েছে। পৃথিবীর সর্বাপেক্ষা প্রাচীন, সর্বাপেক্ষা ব্যাপক মায়াজম গঠিত চিররোগ হল সোরা। বাবা আদম ও মা হাওয়া এর গন্ধম খাওয়াটাই হল সোরা।

পবিত্র মনে সোরার সুপ্তাবস্থা ভীতি আশংকা, স্বার্থপরতা, শ্রমবিমুখতা, অবসাদ, রুক্ষ্র মেজাজ, পরশ্রীকাতরতা, ভন্ডামী এবং যাবতীয় নোংরামী স্বভাব সৃষ্টি করে। নীতি ভঙ্গের সুচনা মনোমধ্যে অংকুরিত হয়ে দেহে আসিয়া তাহা পল্লবিত ও কুসুমিত হয়।

হ্যানিম্যান বলিয়াছেন আটের সাত অংশ তরুন রোগের কারনই সোরা এবং তরুন রোগসমূহ পুরাতন ও সুপ্তদোষ সমূহেরই সাময়িক উচছ্বাস ব্যতীত আর কিছু নয়। সোরা দোষের প্রভাবে মানুষের ইচছা, অনিচছা, রোগের হ্রাস-বৃদ্ধির রুপ বা প্রকৃতি এবং শরীরের বিভিন্ন যন্ত্রসমূহে বিকশিত লক্ষণসমূহের সহিত ঔষধসমূহের লক্ষণাবলীর সাদৃশ্য মেটিরিয়া মেডিকা পাঠকালে লক্ষ্য করা একান্ত আবশ্যক

Miasm


দেখা গেছে, যদি একিউট (acute) রোগগুলো সুনির্বাচিত ঔষধ প্রয়োগের ফলে সম্পূর্ণভাবে আরোগ্য হয়ে যায় কিন্তু চিররোগ (Chronic) প্রকৃতির রোগগুলো সবসময় কম বেশী বিভিন্ন নতুন লক্ষণ নিয়ে ঘুরে ফিরে আসে এমন একটা প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়।

হোমিওপ্যাথি আবিষ্কারের ৩০ বছর পর (১৭৯০-১৮২০)এই অসফলতা দৃষ্টিগোচর হয়। হ্যানিম্যান কে এ বিষয়টি গভীরভাবে ভাবিয়ে তুলে। তিনি চিররোগের কারণ অনুসন্ধান মহান সত্যের প্রমাণ নির্ধারণ, সংগ্রহ এবং সোরা( psora) বিরোধী ঔষধ আবিষ্কারের জন্য বারো বছর অতিবাহিত করেছেন।

হ্যানিম্যানের মতেঃ

মানুষের সকল রোগের ১৬ আনার ১৪ আনা সোরার জন্য দায়ী।বাকি ২ আনা সিফিলিস ও সাইকোসিস এর জন্য হয়ে থাকে। 

হ্যানিম্যান ক্রনিক ডিজিজ গ্রন্থে তিনি লিখেছেন সোরার মায়াজম সোরা ভেসিকেল (Psora vesicle) এর রসের মধ্যেই থাকে। কোন প্রকারে ঐ রস কোন সুস্থ লোকের চামড়ায় লাগলে সোরা শরীর অভ্যন্তরে প্রবেশ করে। যেদিন এই রস লাগবে তার ছয়, আট, দশ বা চৌদ্দ দিন পরে লোকটির প্রথমে শীত শীত ভাব লাগবে। সন্ধ্যার দিকে শরীর খুব গরম এবং জ্বরজ্বর লাগবে, সারারাত্রি এইভাবটা থাকবে, ভোরবেলার দিকে ঘাম দেবে এবং পরদিন সকালে উদ্ভেদ (Itch vesicle) দেখা দেবে। কাজেই দেখা গেল সোরা রোগ সংক্রমিত হতে কিছু সময় লাগে- স্পর্শমাত্রই সংক্রমিত হয় না। তাছাড়া মন আক্রান্ত হয়ে বা শ্বাসক্রিয়ার মাধ্যমে হাওয়া থেকে এই রোগ দেহে প্রবেশ করে না।

সোরার মানসিক লক্ষন -  দার্শনিকের ন্যায় সর্বদা চিন্তা করে এবং অপরিস্কার, অপরিচ্ছন্ন, অগোছাল থাকার প্রকৃতি। ছেঁরা কাঁথায় শুয়ে রাজা হবার স্বপ্ন দেখে। ভীতু, কৃপন, স্বার্থপর, অলস্যপ্রিয়, ব্যস্তবাগীশ। সর্বদা অস্থির একস্থানে স্থির থাকতে পারে না। ধপাস করে এক স্থানে বসে পরে। ঈর্ষাপরায়ন, বকধার্মিক, হটকারিতায় পটু এবং হুকুম দেওয়া তার নৈমিওিক স্বভাব। গোসলে অনিচ্ছা এবং নিজের শরীরে দুর্গন্ধ নিজের নাকে শুকিয়ে দেখা তার অভ্যাস। (নাসিকা স্রাব, কানে গন্ধ ইত্যাদি)।

সোরার সার্বদৈহিক লক্ষণ  -   যান্ত্রিক কোন পরিবর্তন না ঘটিয়ে স্নায়ুতন্ত্রের উপর ক্রিয়া করে মানসিক এবং শারীরিক বিপর্যয় সৃষ্টি করে থাকে। সমস্ত শরীরে জ্বালা বিশেষতঃ হাত-পা ও মাথার তালুতে। প্রাতঃকালে মলত্যাগের বেগ এবং মধ্যাহেৃর পুর্বে প্রচন্ড ক্ষুধার অনুভুতি। প্রায় সবসময় খোঁস-পাচড়া লেগেই থাকে। গোছলে অনিচ্ছা ও দুগ্ধে অরুচি। প্রচন্ড শীতে মাথা ও পা ঢেকে ঘুমাতে পাড়ে না। ঠোট, নাসারন্ধ ও শরীরের বহির্গমনের ছিদ্রপথগুলি রক্তিম আকার ধারণ করে।

সোরার কথা ও কাজকর্মের প্রকৃতি -  সোরা রোগী সর্বদা অস্থির, চঞ্চল। কোন কাজ কর্মের মধ্যে স্থিরতা নাই। সব কিছুর মধ্যে তড়িঘড়ি ভাব, কথাবর্তা, কাজ কর্ম, খাওয়া দাওয়া, উঠা বসা, এমন কি ঘুমের মধ্যেও স্থির থাকতে পারে না। গান বাজনা খুব পছন্দ করে।

সোরার দোষসৃষ্টির কারণ -   দুঃশ্চিন্তা হতে চর্ম রোগের সৃস্টি হতে পারে। চর্ম রোগ চাপা পড়েও সোরার দোষ সৃষ্টি হতে পারে। পূর্ব পুরুষ হতেও সোরার আবির্ভাব হতে পারে। আসলে পৃথিবী সৃষ্টির পর ধেকে সোরার জন্ম।

সোরার জিহ্বার স্বাদ-   মিষ্টি, টক ও বিস্বাদ তিক্ত হয়।

সোরার ক্ষুধার অবস্থা -  অত্যাধিক ক্ষুধা, রাতে উঠে খেতে চায়। আহারের পরেই ক্ষুধা, ক্ষুধার জন্য অস্থির, শুন্যতাবোধ, বিশেষ করে সকাল ১০-১১ টার সময়।

সোরার খাদ্য পছন্দ অপছন্দ ও অসহ্য --  মিষ্টি, টক খেতে ইচ্ছে করে, গরম খাবার খেলে ভাল থাকে। গর্ভাবস্থায় অস্বাবাভিক খাদ্য খেতে চায়। তৈলাক্ত খাবার খেতে চায় কিন্তু সহ্য হয় না, দুধ খেতে চায় না এবং সহ্যও হয় না।

সোরার শেষ আক্রমণের স্থান -  স্নায়ূ মন্ডলী, চর্ম, মন, মস্তিস্ক ও পরিপাকতন্ত্র।

সোরার ঘুমের অবস্থা -  ঘুম পাতলা, উঁচু বালিশে শুইতে চায়, সাধারনত কপালে হাত রেখে ঘুমায়।

সোরার স্বপ্নের অবস্থা-   স্বপ্নের মধ্যে গান গায়, বোবায় ধরে, জীব জন্তু, ভুত-প্রেত মৃত ব্যক্তি, মলমুত্র ত্যাগ ও আগুন ইত্যাদি স্বপ্ন দেখে।

সোরার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ -  হস্ত পদের তলা গরম, শুস্ক ও জ¦ালা যুক্ত, ব্যথা বেদনা থাকে। জ¦লা বিশেষত হাত, পায়ের তালু এবং মাথায়। অঙ্গ প্রত্যঙ্গে ব্যথা, বেদনা নড়াচড়ায় উপশম বোধ করে।

সোরার নখসমূহ -   নখ বড় করে রাখে। তার নোংরা স্বভাবের জন্য ময়লা জমে থাকে।

সোরার চর্মরোগ প্রবণতা -  চর্মে সাধারনতঃ পুঁজ, জন্মে না অত্যন্ত সুখানুভুতীয়ুক্ত চুলকানীর পর জ্বালা। স্বল্প পুঁজ, চর্ম শুস্ক, সহজে ক্ষত শুকিয়ে যায়। সোরার মামড়ী পাতলা, সরু, সুক্ষè, ক্ষুদ্র, চুলকানীতে জ্বালা থাকে। পানিতে এবং বিছানার গড়মে বৃদ্ধি দেখাযায়। চর্মরোগ প্রায়ই লেগে থাকে।

সোরার ঘর্ম প্রবণতা -  সোরর রোগী ঘর্মে উপশম বোধ কওে, ঘুমের পর, আহারের পর ঘর্ম এবং দুর্গন্ধ থাকে।

সোরার দৈহিক গঠন ও আকৃতি -  ঘাড়টি কুঁজ, উস্ক, শুস্ক চেহারা, অপরিস্কার মুখমন্ডল, চুলগুলি আগোছাল ও অকালে চুলে পাক ধরে, মুখ মন্ডল অরক্তিমাভ, চর্ম রোগের প্রাবল্য, শরীরের বহির্গমনের ছিদ্রপথগুলি রক্তিম যেমন ঠোট, নাসারন্দ্র ও মলদ্বার।

সোরার হ্রাস-বৃদ্ধি -  প্রাতঃ কালে, বেলা ১০-১১টার সময় হতে মধ্য রাত্রি পর্যন্ত এবং সুর্যেও তাপে বৃদ্ধি দেখা যায়। অগ্নিতাপে রোগের উপশম হয়, পর্যাক্রমে বা নির্দিষ্ট সময় অন্তর রোগের আক্রমণ সোরা দোষ লক্ষণ।

সোরার রোগ সমূহ -  মানসিক দুঃশ্চিন্তা ও কু-মনয়ন হতে কু-প্রবৃতি, চুলকানী, বিসর্গ, পক্ষাঘাত, হিষ্টিরিয়া, গর্ভপাত, এপেন্ডিসাইটিস, বেরিবেরি, রক্তস্রাব, বসন্ত, কলেরা, উদরাময়, খুসকী, লিউকেরিয়া, সোরাইসিস, সায়েটিকা, চর্মরোগ প্রবণতা ইত্যাদি।

সোরার ঔষধ সমূহ -  সালফার, সোরিনাম, সিপিয়া, সাইলি, এলোমি, ল্যাক, আর্স, লাইকো, ক্যাপসি, নেটমিউর, সেলিনি, ডালকা, ক্রোটেল, নেটসালফ, এমন মিউর, জিঙ্ক, এলো, হিপার, আর্স সালফ, এনাকার্ড, এসিড ফস, এসিড ফ্লোর, ফসফর, গ্রাফা, হাইড্রা, ক্যা-কার্ব ইত্যাদি।

সেরা (ঘাটতি) 
১. সোরা দৈহিক গঠনগত কোন পরিবর্তন সাধন না করিয়া বরং ক্রিয়াগত পরিবর্তন করে ।
২. চুল- শুঙ্ক, কর্কশ,খুশকি যুক্ত
৩. চর্ম - শুস্ক,কর্কশ
৪. নখ- শুস্ক,কর্কশ
৫. ঠোঁট- শুস্ক,সাইয়ানোসিসের মতো নীলাভ
৬. মুখমণ্ডল - নীলাভ মুখমণ্ডল
৭. মুখভঙ্গি - উদ্বিগ্ন,নার্ভাস, ভীতু শঙ্কিত
৮. পোশাক- হালকা রংয়ের পোশাক পরে।

সোরার রোগীর ধাতুগত লক্ষণ:
১. সর্বদা ভীতিপূর্ণ, পরিপূর্ণ, অবসাদগ্রস্ত, শ্রমবিমুখ।
২. মেজাজ খিটখিটে সামান্য মতের অমিল হলে ক্ষিপ্ত হয়।
৩. স্বার্থপরতা কিন্তু নাটকীয় উদারতা দেখায়।  
৪. অস্বাভাবিক ক্ষুধা, খেলে আবার ক্ষুধা লেগে যায়।
৫. অসম্ভব চুলকানি, চুলকানোর পর জ্বালা।
৬. হাত পায়ের তলা জ্বলে।
৭. দেহের বর্র্জ নির্গমন পথগুলি লাল বর্ণের।
৮. যে কোন স্রাব নির্গমনে আরাম বোধ।
৯. দাঁতে, মাড়ীতে ময়লা জমে।
১০. কেবলই শুয়ে থাকতে চায়।
১১. নোংরামি পছন্দ।
১২. স্নয়ুকেন্দ্রে প্রবল বিস্তার করে কিন্তু যান্ত্রিক পরিবর্তন ঘটে না।
১৩. যে কোন সময় রোগাক্রমন বা বৃদ্ধি ।
১৪. চোখে নানা রং দেখে ও দৃষ্টিভ্রম হয়।

সোরার তিনটি ধাপঃ
  1. Primary
  2. Latent
  3. Secondary
প্রাথমিক ধাপ-

একটি জীবানু যখন পরিপূর্ণ বিকাশ লাভ করে তখন চাপড়ার উপরে সেটা ফুস্কুড়ি মতো দেখা যায়।
সোরার প্রকাশকাল ৬-১৪ দিন। আর এ সময়কাল অতিবাহিত হওয়ার পরে বিকালের দিকে শীত শীত লাগে রাতে তাপ ও ঘাম দিয়ে ফুস্কুড়ি আকারে দেখা যায়। এগুলোতে প্রথম অবস্থায় নখ দিয়ে জোড়ে ঘষতে ভালো লাগে এতে উপশম মনে হয় কিন্তু পরে জ্বলতে শুরু করে। সন্ধ্যা থেকে মাঝরাত পর্যন্ত চুলকানি হয় আরও বেশি অসহ্য করে তুলে। প্রথমে জলের মতো রস বের হয় পরে পুঁজে পরিণত হয় এগুলো।এ পর্যায়ে রোগীকে সুনির্বাচিত ঔষধ সেবন করা হলে রোগী সুস্থ হয়ে যায়।

দ্বিতীয় ধাপ -সুপ্ত সোরা ( Latent Psora)-

উপযুক্ত ঔষধ নির্বাচন না করে যদি সোরার প্রাথমিক দশাকে আরও ব্যাপক আকার ধারণ করার সুযোগ দেওয়া হয় বা বাহ্যিকভাবে মলম দিয়ে চাপা দেওয়া হয় তাহলে সেটা সুপ্ত অবস্থা প্রাপ্ত হয় যা পরবর্তীতে ভয়ংকর আকার ধারণ করে। হুপিং কাশি, হাম,আগুনে পোড়া, মানসিক আঘাত, ক্ষত,আঘাতজনিত কোন অসুস্থতায় যদি সোরা প্রকট হয়ে ওঠে তখন সেটা Chronic disease অবস্থা প্রকাশ করে।

সুপ্ত সোরার কয়েকটি লক্ষণঃ (Symptoms of Latent Psora)-

(১) মানসিক দিক-থেকে খুবই সচেতন, ভয়, দুশ্চিন্তা ও দুর্ভাবনাগ্রস্ত এবং অল্পেতেই রেগে যায়।
(২) অল্পেতে এবং সহজে দৈহিক ও মানসিক অবসাদ। 
(৩) হাত ও পায়ের তলায় জ্বালা ও ঘাম। 
(৪) ঘুমের মধ্যে পেশীসমূহ লাফান। 
(৫) শীতকাতরতা ও অল্পেতেই ঠান্ডা লাগা। 
(6) ঠান্ডা অপছন্দ এবং ভিতরে ও বাইরে গরম পছন্দ করা। 
(৭) মাঝে মাঝে নাক দিয়ে রক্ত পড়া।
(৮) ঘুমের মাঝে দাঁত কাটা এবং মলের সঙ্গে বড় কৃমি (Round worms) বের হওয়া। 
(৯) ঠোট, নাসারন্ধ্র এবং শরীরের বহির্গমনের ছিদ্রপথগুলির লালবর্ণ ধারণ করা।
(১০) মিষ্টি, টক, ভাজা এবং চর্বিজাতীয় খাদ্য পছন্দ। 
(১১) ঘুমের মাঝে অস্থিরতা। 
(১২) স্নানে অনিচ্ছা এবং অপরিস্কার ও নোংরা থাকার ইচ্ছা। 
(১৩) সারাদিন ও রাত্রি শুয়ে থাকার ইচ্ছা এবং তাতে ভাল অনুভব করা। 
(১৪) প্রচন্ড ক্ষুধা, বিশেষ করে সকালে।
(১৫) স্বাভাবিক স্রাব নির্গত হলে আরাম পাওয়া-যথা ঘাম, প্রস্রাব, মাসিকের রক্তস্রাব ইত্যাদি।
(১৬) ঘুমাবার সময় মাথায় ঘাম হওয়া। 
(১৭) মাঝে মাঝে চোখ, মুখ, নাক গরম হওয়া। 
(১৮) হামেশায় গলায় কফ জমা হওয়া।
(১৯ বুদ্বিমান_নানা কল্পনাপ্রবণ কিন্তু করে দেখানোর প্রবণতা নেই।


সোরার তৃতীয় ধাপ-- 
Secondary symptoms of Psora
  • মাথা -- মাথায় ঘাম হয় রাতে শোবার পর। মাথার চুল উঠে যায়।প্রচুর খুশকি হয়।
  • চোখ -- চোখে প্রায় প্রদাহ হয়।
  • মুখ -- মুখ ফ্যাকাসে, চামড়া কুঁচকানো, হঠাৎ করেই মুখ লাল হয়ে উঠে, ভয়েও এমন হয়না।
  • জিহ্বা --সাদা ও ফ্যাকাসে।জিহ্বায় ফুস্কুড়ি।
  • গলা -- ঘন ঘন স্বর ভঙ্গ।গলায় চুলের মতো কিছু লেগে আছে এমন অনুভুতি।
  • বুকে -- ঘন ঘন শ্বাসকষ্ট
  • পেট -- খালি খালি অনুভুতি
  • হাত ও পা -- ঠাণ্ডা বা হাতের তালুতে ঘাম। কাজ করতে গেলে কবজ্বিতে কট কট শব্দ হয়।
  • পায়খানা -- এক দিন থেকে কয়েকদিন পরপর পায়খানা হয়।
  • প্রসাব -- ঘন ঘন।
  • উপশম -- বিশ্রামে যন্ত্রণা উপসর্গগুলো ফিরে আসে যখন চলাফেরা করা হয়।
(১) মাথাঘোরা- চলাফেরায় বৃদ্ধি। 
(২) দীর্ঘদিনের পুরাতন মাথার যন্ত্রণা-যথা মাইগ্রেন। 
(৩) মাথার খুসকি ও মরামাস। 
(৪) কান দিয়ে পুঁজ পড়া (Otorrhoea)। 
(৫) কানের মধ্যে ভো ভো করা। 
(৬) নাক দিয়ে রক্ত পড়া এবং নাকের পলিপাস হওয়া । 
(৭) সর্বপ্রকার চর্মরোগ। 
(৮) গলায় গ্রন্থি বৃদ্ধি হওয়া এবং গলা ব্যথা। 
(৯) অসহ্য দাঁতের যন্ত্রণা। 
(১০) অম্ল ও ডিসপেপসিয়ার যাবতীয় লক্ষণ। 
(১১) বমনেচ্ছা, বমি এবং হিক্কা। 
(১২) পাকস্থলী এবং যকৃতে যন্ত্রণা। 
(১৩) অর্শ, মলদ্বারে ফিসচুলা এবং রেকটাল পলিপ। 
(১৪) মধুমেহ (ডায়াবেটিস মেলিটাস)। 
(১৫) বিছানায় প্রস্রাব করা।
(১৬) স্বপ্নদোষ, সহজে বীর্যস্খলন ও ধ্বজভঙ্গ, পায়খানা বা প্রস্রাব করার সময় প্রস্টেটিক তরল (Fluid) নির্গত হওয়া ইত্যাদি।
(১৭) সব রকমের ঋতুস্রাব সংক্রান্ত- অস্বাভাবিকতা এবং বন্ধ্যাত্ব।
(১৮) যোনিদ্বার বা জরায়ুর মধ্যে পলিপ। 
(১৯) শ্বেতপ্রদর। 
(২০) যে কোন রকম স্বপ্নভঙ্গ। 
(২১) ব্রঙ্কিয়াল অ্যাজমা। 
(২২) বিভিন্ন ধরণের বাতরোগ, অস্থিস্ফিতি, হাড় বাঁকিয়া যাওয়া। 
(২৩) নিম্নাঙ্গে ভেরিকোজ ভেন (Varicose vein)। 
(২৪) উরু, গোড়ালি এবং পায়ে ক্ষত।
(২৫) হিউমেরাস,ফিমার, প্যাটেলা, আঙ্গুলের হাড় ইত্যাদি পচনক্রিয়া (Suppuration and necrosis)
(২৬) মুখে, বাহুতে এবং হাতে আঁচিল (warts)। 
(২৭) বিভিন্ন প্রকার টিউমার (Encysted) 
(২৮) যাবতীয় মনোরোগ। 
(২৯) ক্যানসার, সারকোমা ইত্যাদি। 
(৩০) টিউবারকিউলোসিস ও কুষ্ঠ। 
(৩১) মৃগী।
(৩২) এরিসিপেলাস,আঙ্গুল হাড়া ইত্যাদি। 






সিফিলিস (ধবংস) :
  • চুল- চুল কম,চুল পড়ার কারনে সংখা কম।হালকা চুল
  • চর্ম - ফাটা ফাটা, ক্ষতযুক্ত
  • নখ- পাতলা,ভগুর, লম্বা ফাটাযুক্ত,গর্ভযুক্ত, অবতল চামচের মতো।
  • ঠোট - ফাটাযুক্ত
  • মুখমণ্ডল - লালচে মুখমণ্ডল, জন্মগত অসাভাবিকতা (যেমন- ঠোট কাটা, তালুকাটা)
  • মুখভঙ্গি - নির্দয়, পাশবিক,প্রতি-হিংসাপরায়ন, আক্রোশ,
  • পূর্ণ, উগ্র,নিস্তেজ,ভগ্ন বা বিষন্ন চেহারা।
  • পোশাক - কালো,ফ্যাকাসে, অসামজস্য রং এর পোশাক পরে।
সিফিলিসের রোগীর ধাতুগত লক্ষণ
১. আত্নহত্যা করার ইচ্ছা।
২. নৈরাশ্য, হঠকারিতা, মূর্খতা, বিতৃষ্ণা।
৩. স্মরণশক্তি ও ধারণশক্তি হ্রাস।
৪. মানসিক জড়তায় কথা কম বলে।
৫. মাংসে অরুচি কিন্তু দুগ্ধ খাইবার ইচ্ছা।
৬. অগ্নিকান্ড, হত্যাকান্ডের স্বপ্ন দেখে।
৭. সূর্যাস্ত হতে সূর্যোদয় পর্যন্ত বৃদ্ধি।
৮. জীভ মোটা ও দাঁতের ছাপযুক্ত।
৯. চুলকানীবিহীন চর্মরোগ।
১০. বিকলঙ্গতা।
১১. অস্থির ক্ষয়প্রাপ্তি।
১২. স্রাবের প্রচুরতা, দুর্গন্ধতা এবং স্রাব নিসরনে রোগ বৃদ্ধি।
১৩. দুষ্টজাতীয় ফোঁড়া।
১৪. অতিরিক্ত গরম-ঠান্ডা অসহ্য।

সাইকোসিস :
  • চুল- শরীরে অধিক চুল,ঘন চুল
  • চর্ম - পুরু বা ভারী,মাছের আইঁশের মতো,কোষ কোষ
  • নখ- পুরু, শিরাযুক্ত,ঢেউ যুক্ত, উত্তল
  • ঠোট - পুরু বা ভারী
  • মুখমণ্ডল - হলুদাভ,ফোলা ফোলা ভাব,জন্মগত বা অর্জিত ওভার গ্রোথ।
  • মুখভঙ্গি - লোলুপ, সন্দেহ প্রবণ, ধুর্ত,হিংসার্থক,দুষ্ট
  • পোশাক - হলুদ রং বা গাঢ় উজ্জল রংয়ের পোশাক পরে।
সাইকোসিস রোগীর ধাতুগত লক্ষণ :
১. ডাক্তারের কাছে লক্ষণ বলতে গিয়ে দেখে আশেপাশে কেউ আছে কিনা।
২. ডাক্তার ঔষধ দিয়েছে! সে আবার খোঁজাখুঁজি করে। কারণ ডাক্তার লক্ষণ গুলো পুরাপুররি শুনল কিনা। আবার জিজ্ঞাস করে কোন ঔষধ কিসের জন্য দিয়েছে।
৩. পড়ালেখা করতে গেলেও সন্দেহ । একলাইন লেখে তো বারবার কাটাকাটি করে। চিন্তা করে এই শব্দের বদলে ঐশব্দ যোগ করি।
৪. ঘর থেকে বের হবে দেখবে সক ঠিকঠাক মত আছে তো?
৫. হিসাব করতে যাবে ব্যবসা অথবা চাকুরিতে সেখানেও সমস্যা, সন্দেহ আর ভূলে যাওয়া।
৬. মনেও সন্দেহ! রাতে এই বুঝি কেউ পিছনে পিছনে আসছে; আশেপাশে কেউ আছে।
৭. বাজার করতে যাবে সেখানেও সমস্যা এই বুঝি দোকানদার আমাকে ঠকিয়ে বেশি নিল । আমি বাজার করেছি কেউ দেখে পেলল না তো।
৮. এই ডাক্তার আমার রোগ বুঝবে কি বুঝবেনা, আমার রোগ সারাবে কি সারাবে না সন্দেহ। আরো ২-৩ জন ডাক্তার একাত্রিত হলে ভাল হতো।  
৯. মনটি রোগের উপর পড়ে থাকে । সব সময় রোগের কথা বলে ।
১০. রোগ সূর্যোদয় হতে সূর্যান্ত পর্যন্ত বৃদ্ধি ।
১১. আঁচিল, টিউমার মাংস বৃদ্ধি, অন্ডকোষ প্রদাহ এর নিদর্শক।
১২. অস্বাভাবিক গঠন। যেমন- হাত পায়ের আঙ্গুল বেশী বা কম।
১৩. ঝড়-বৃষ্টির পূর্বে বা সময় ঘনঘন মূত্র ত্যাগ।

টিউবারকুলোসিস বা উচ্ছাস ও ক্ষয় :
  • চুল- চুল ভেগুে যায়,চুল ফেটে যায়,জট পাকায়
  • চর্ম - অতিরিক্ত রক্তসঞ্চালন যুক্ত, রক্তক্ষরণ যুক্ত।
  • নখ- উজ্জল চকচকে মসৃন,নখের নিচে রক্তের উচ্ছাস, সাদা স্পটযুক্ত।
  • ঠোট - উজ্জল লাল,রক্তের উচ্ছাস যুক্ত।
  • মুখমণ্ডল - রক্ত বর্ন, গাল লাল(red cheek)
  • মুখভঙ্গি - উদাসীন, অসুন্তুুস্ট, স্বাধীন, একগুঁয়ে - জেদী, অস্থির।
  • পোশাক - লাল, লালচে বেগুনী, গোলাপী পোশাক পরিধান করে।
টিউবারকুলিনাম রোগীর ধাতুগত লক্ষণ : ১. চিকিৎসাধীন অবস্থায়ও রোগী একই লক্ষণ ঘুরে ফিরে আসে। ২. একই সময়ে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়। ৩. যে খাবারে বৃদ্ধি সেই খাবারেই আকাঙ্খা। ৪. বিনা কারণে ঠান্ডা-সর্দ্দি লাগে। ৫. যথেষ্ট পানাহার সত্বেও দুর্বলতা, শুষ্কতা শীর্ণতা প্রাপ্ত হয়। ৬. কুকুর ভীতি বিদ্যমান। ৭. উদাসীনতা ও চিন্তাশূন্যতা। ৮. ক্রোধপরায়ণ, অসন্তুষ্ট, চঞ্চল, পরিবর্তনশীল মেজাজ। ৯. কামোত্ততার জন্য যে কোন উপায়ে শুক্রক্ষয় করে। ১০. বার বার চিকিৎসক বদল করে । ১১. জাঁকজমকের সাথে কাজ শুরু করলেও তা অসম্পূর্ণ থেকে যায়। ১২. অনবরত ঘুরে বেড়ানো স্বভাব। ১৩. নিদ্রায় চিৎকার করে কথা বলে ।


টিউবারকুলিনামের রোগীরা দেখতে কেমন হবে ?

 ১) লম্বা।
২) হালকা পাতলা দেহ।
৩) বুকটা সংকীর্ণ, কবুতরের বুকের মতো।
৪) এনিমিক।
৫) গৌর বর্ণ।
৬) ভ্রু দুটি যুক্ত।
৭) ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের চুলে জটা।
৮) ঠোঁট রক্তবর্ণ (বেল, ল্যাকেসিস, সালফার)।
৯) পেট জয়ঢাকের মতো।
১০) এরা শারীরিক ও মানসিকভাবে বাড়ন্ত প্রকৃতির হয়।
১১) চোখে চশমা থাকতে পারে কারণ এদের ঘন ঘন চশমা বদলাতে হয় ।


টিউবারকুলিনামের রোগীরা দেখতে কেমন হবে ?

  •  ১) লম্বা।
  • ২) হালকা পাতলা দেহ।
  • ৩) বুকটা সংকীর্ণ, কবুতরের বুকের মতো।
  • ৪) এনিমিক।
  • ৫) গৌর বর্ণ।
  • ৬) ভ্রু দুটি যুক্ত।
  • ৭) ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের চুলে জটা।
  • ৮) ঠোঁট রক্তবর্ণ (বেল, ল্যাকেসিস, সালফার)।
  • ৯) পেট জয়ঢাকের মতো।
  • ১০) এরা শারীরিক ও মানসিকভাবে বাড়ন্ত প্রকৃতির হয়।
  • ১১) চোখে চশমা থাকতে পারে কারণ এদের ঘন ঘন চশমা বদলাতে হয় ।





“সোরা, সিফিলিস ও সাইকোসিসের সনাক্তকরণের উপায় সম্বন্ধে একটু ভিন্ন চিন্তাধারা” আমরা জানি রোগ প্রধানত দুই প্রকারের১. তরুণ রোগ ২. চির রোগ

⏯- তরুণ রোগ তিন প্রকারের, যথা১. ব্যাক্তিতান্ত্রিক ২. বিক্ষিপ্ত ও ৩. সঙ্ক্রামক
⏯- চির রোগও তিন প্রকারের, যথা১. ভেষজ ২. মিথ্যা ৩. প্রকৃত
⏯- এই প্রকৃত চির রোগগুলি কারণতত্ব অনুযায়ী তিনভাগে বিভক্ত। যথা১.সোরা ২. সিফিলিস ৩.সাইকোসিস


মায়াজম দোষ দূরিকরণের জন্য যে সকল ওষুধ ব্যবহৃত হয়: রোগীলিপি করার সময় রোগী কোন মায়াজমের তা নির্ণয় করতে হবে। কারণ রোগীর চিকিৎসার শেষের দিকে রোগীর উপর কোন মায়াজমের প্রভাব বেশি ছিল তা নির্ধরণ করা যায় না। এখন যত রোগী দেখি, প্রায় রোগীই মিশ্র মায়াজমের, একেক জন একাধিক মায়াজম নিয়ে আসেন। তাই রোগীর ওষুধ শুরু করার সময় রোগীলিপিতে রোগীটি কোন মায়াজমের তা লিখে রাখতে হবে। রোগীর চিকিৎসা করার সময়, রোগীর লক্ষণ সদৃশে যে ওষুধ সেটিই প্রয়োগ করতে হবে কিন্তু রোগীর চিকিৎসা সম্পূর্ণ করার সময় খেয়াল রাখতে হবে, রোগীকে সর্বশেষ যে ওষুধটি প্রয়োগ করা হলো সেটি রোগী যে মায়াজমের সে মায়াজমের কিনা? যেমন- সোরা: সালফার, সোরিনাম, ক্যাল্কে-কার্ব, লাইকোপডিয়াম ইত্যাদি। সাইকোসিস : থুজা, মেডোরিনাম, নেট্রাম সালফ, নাইট্রিক এসিড, স্ট্যাফিস্যাগ্রিয়া ইত্যাদি। সিফিলিস : মার্কুরিয়াস, সিফিলিনাম, অরাম মেট, নাইট্রিক এসিড, সাইলিসিয়া ইত্যাদি। টিউবারকুলার: টিউবারকুলিনাম বোভিনাম, টিউবারকুলিনাম ব্যাসিলিনাম, কেলি সালফ, ড্রসেরা, এন্টিমোনিয়াম টার্টারিকাম, ইত্যাদি।

Related Topics Click Here::


Ads 728x90