•What is Surgery •Homeopathy on surgery •Surgical Diseases •History of Surgery •Anal Disease •Homeopathic Therapeutics •Breast Cancer •Importance of surgery •Short question of surgery •Gallbladder stones •Obstructive jaundice •Appendicular lump
A brief history of surgery:
সার্জারি (Surgery) শব্দটা এসেছে গ্রিক শব্দ “Cheirourgia” থেকে। “Cheir” অর্থ হাত এবং “Ergon” অর্থ কাজ।
৩টি প্রধান অসুবিধাকে কেন্দ্র করে সার্জারির পথচলা- রক্তপাত (Bleeding), ব্যথা (Pain) এবং সংক্রমণ (Infection)। প্রাচীনকাল থেকে যত সাধ্যসাধনা, এই ৩টা ব্যপারকে দূর করার জন্যই। আর তাই যখনই সেটা সম্ভব হয়েছে, সার্জনরা চিকিৎসাক্ষেত্রে দেখেছেন নতুন আলো!
প্রাচীনকাল থেকে শুরু করা যাক। প্রাচীন সভ্যতার খোঁজ করতে গেলে সারা পৃথিবী জুড়েই বিভিন্ন সার্জিকাল ইন্সট্রুমেন্টের দেখা পাওয়া যায়। তার সাথে বিভিন্নরকম পদ্ধতির কথাও জানা যায়। যেমন ভারত ও দক্ষিণ আমেরিকায় ক্ষতস্থান উইপোকা বা গুবরেপোকার মাধ্যমে সেলাই করা হতো! (ক্ষতস্থানে পোকাগুলো কামড় দিলেই মাথাটা সেখানে রেখে বাকি দেহ ফেলে দেওয়া হতো, যা অনেকটা স্টেপলারের মত কাজ করতো। মায়ান সভ্যতা নিয়ে মুভি Apocalypto-তেও ব্যাপারটা দেখানো হয়েছে)। মায়ানদের মধ্যে দাঁতের ক্যাভিটিতে মূল্যবান পাথর ভরে ডেন্টাল সার্জারি করার উদাহরণও আছে।
এখন পর্যন্ত প্রাচীনতম অপারেশন হিসাবে Trepanation- এর কথা জানা গেছে (খ্রিষ্টপূর্ব ৩০০০ সাল), সেটা মূলত মাথার খুলি ফুটো করে ইনট্রাক্রেনিয়াল প্রেসার কমানো, মাইগ্রেন ও অন্যান্য রোগের চিকিৎসার চেষ্টা করার একটা পদ্ধতি।
প্রাচীনকালে খুব জনপ্রিয় একটা ব্যাপার ছিল রক্তমোক্ষণ (Blood letting), অর্থাৎ রোগীর শরীর থেকে কিছু রক্ত বের করে নেওয়া। এটা চালু করেছিল গ্রীকরা। তাঁদের ধারণা ছিল- মানুষের শরীর চারটি মোলিক উপাদানে গঠিত- মাটি, আগুন পানি, বাতাস। এগুলো থেকে চারটি দেহরসের সৃষ্টি হয়- কালো পিত্ত (Black bile), হলুদ পিত্ত (Yellow bile), শ্লেষ্মা (Phlegm) এবং রক্ত (Blood)। সমস্ত প্রাচীন চিকিৎসাবিদ্যার ভিত্তিই ছিল এই যে, এই চারটি দেহরসের কোন একটির মাত্রা বেড়ে গেলেই রোগের সৃষ্টি হয়। আবার পরিমাণ আগের মাত্রায় আনলেই রোগ সেরে যায়। তাই কিছুটা রক্ত বের করে দেওয়াই এর সমাধান!
অনেক বছর পার করে মধ্যযুগে চলে আসলেও, মানুষের কতগুলো বদ্ধমূল কুসংস্কারের জন্য বিজ্ঞানসম্মত চিকিৎসা পদ্ধতি বেশি দূর এগোতে পারেনি। তখন যারা সার্জারি করতো তাঁদের তেমন কোন পুঁথিগত বিদ্যা ছিল না। এসম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয়েও পড়ানোও হতো না। এটাকে মোটামুটি নিম্নস্তরের পেশা বলে মনে করা হতো। অনেক নাপিতরাও তখন সার্জারি করতো। অনেকে নিজে নিজেই শিখে ফ্রিল্যান্সিং উপায়ে সার্জারি করতো। এর জন্য ব্যবহার করা হতো ধারালো কড়াত, হাতুড়ি, বাটাল, ছুড়ি, লোহার রড, ইত্যাদি।
যুদ্ধ বাঁধলে তাদের চাহিদা বেড়ে যেত। প্রথমদিকে আহত সৈনিকদের একমাত্র চিকিৎসা ছিল আহত অঙ্গ কেটে ফেলে দেওয়া (Amputation)। মনে করা হতো, বিপক্ষ দলের অস্ত্রে বিষ আছে। আর সেই বিষ যাতে শরীরে ছড়াতে না পারে, এজন্য যত দ্রুত সম্ভব Amputation করা হতো। তখনো এনেসথেসিয়া সম্পর্কে কারো ধারণা না থাকায় সজ্ঞান অবস্থায়ই এটা করা হতো। এসবের জন্য যে প্রচুর রক্তপাত হতো, তা গরম লোহার ছ্যাকা দিয়ে বন্ধ করা হতো। তার জন্য লম্বা লোহার রডকে আগুনে পুড়িয়ে লাল করা হতো, এরপর রক্তপাতের জায়গায় সেটাকে চেপে ধরা হতো। এই পদ্ধতির নাম ছিল কটারাইজেশন (Cauterization)।
বন্দুকের গুলিকেও বিষাক্ত বলে মনে করা হতো। এজন্য গুলিবিদ্ধ লোকের গুলি বের করে ক্ষতস্থানে ফুটন্ত তেল ঢেলে দেওয়া হতো বিষ নষ্ট করার জন্য। আঘাতের যন্ত্রণার থেকে চিকিৎসার যন্ত্রণা বেশি হতো। আবার চিকিৎসা করালেও খুব কম মানুষ বাঁচত।
অসুখ সম্পর্কে মানুষের দুর্বলতা স্বাভাবিক। মজার ব্যাপার হচ্ছে, আজকের দিনের মত তখনো হাতুড়ে ডাক্তার বা কোয়াকরা মানুষের এই দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে পেশা জমাবার চেষ্টা করতো। সহজ-সরল লোকদের চিকিৎসার নামে কুচিকিৎসা করে তখনো প্রায়ই তাঁদের জীবন সংশয় করে তুলতো। রোগ নিরাময়ের পরিবর্তে রোগীর জীবন নিয়ে টানাটানি চলতো। তাঁদের প্রধান ওষুধের মধ্যে অন্যতম ছিল রক্ত, থুথু, মোরগের ঝুটি, পশুপাখির পালক, নখ, সাপের চামড়া, পশম, উকুন, ঘাম ইত্যাদি!
১৫৪৩ সালে আন্দ্রে ভিসেলিয়াস (Andreas Vesalius) প্রথম মানবদেহ ব্যবচ্ছেদ করার আগ পর্যন্ত এনাটমি শিখতে জন্তু-জানোয়ারের দেহ ব্যবচ্ছেদ করা হতো। মনে করা হতো, সব মানুষ এবং অন্যান্য পশুর দেহের অভ্যন্তরের গঠন একই রকম! সেই হাস্যকর পদ্ধতির বিরুদ্ধে প্রমাণসহ কথা বলতে গিয়েও ভিসেলিয়াসকে কম অপদস্থ হতে হয়নি।
হাসপাতালে তখন মুষ্টিমেয় সার্জন ছিলেন, যারা শুধু ক্ষতের চিকিৎসা করতেন। এছাড়া শিক্ষিত কিছু ডাক্তার ছিলেন। কিন্তু তাঁরা ছিলেন সম্মানিত লোক এবং প্রায় সবাই-ই রাজা-রাজড়াদের চিকিৎসক হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন বলে সাধারণ লোকের ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকতেন।
আরও প্রায় ৩৫০ বছর লেগে গেছে লোহার ছ্যাকা ও তেল ঢালার বদলে ক্ষতস্থান সেলাই করার নিয়ম চালু হতে হতে। কিন্তু তবুও রোগীর মৃত্যুর সংখ্যা কমেনি। তখন হাসপাতালে অপারেশনের সময় যন্ত্রপাতি, ক্ষতস্থান, ইত্যাদি জীবাণুমুক্ত করার কোন নিয়ম ছিল না। সার্জনরা কালো রঙের লম্বা গাউন পরতেন যেটা কখনো ধোয়া হতো না। ধুলাবালি ও রক্তে ভরা এই পোশাক তাঁদের পেশার চিহ্ন ছিল। মনে করা হতো, যার গাউন যত বেশি ময়লা ও পুরাতন, তিনি তত বেশি অভিজ্ঞ ও জ্ঞানী। ফলস্বরূপ, ৯৫% রোগী গ্যাংগ্রিন হয়ে মারা যেত। (যদিও কেউই বুঝতে পারতো না এই মৃত্যুর কারণ কী)। মৃত্যুর ব্যপারটাকে সবাই খুব সহজভাবে নিত। কথিত আছে যে, যুদ্ধক্ষেত্রে যাওয়া সৈনিকের চেয়েও অপারেশন টেবিলে শোয়ানো রোগীর জীবনের ঝুঁকি অনেক বেশি বলে মনে করা হতো।
মাত্র দেড়শো বছর আগেও পেটের (এবডোমিনাল) অপারেশনে মৃত্যুর হার ছিল শতকরা ৯৯% । যদিও আজ এরকম অপারেশনে মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় নেই বললেই চলে। কিন্তু তখনকার দিনে প্রচলিত ছিল যে, পেটের ক্ষত খুবই মারাত্মক! এক্ষেত্রে মৃত্যু ঘটলে চিন্তা করার কিছু নেই, বেঁচে গেলেই বরং সেটা বিস্ময়কর!
মানুষের এই অসহায় মৃত্যু দেখে অনেক সার্জনই মনে মনে দুঃখ পেতেন। কিন্তু তবুও গৎবাঁধা পদ্ধতিগুলোকেই সবাই নীরবে মেনে চলতেন। পুরাতন নিয়মগুলোকেই সম্মান করতেন, ফলে আর কোন নতুন গবেষণা চালানো হতো না। কিন্তু তাই বলে কি কখনোই কেউ গবেষণায় এগিয়ে আসেননি? এসেছিলেন। আর এসেছিলেন বলেই আজ সার্জারির ক্ষেত্রে এমন আকাশপাতাল উন্নতি সাধন সম্ভব হয়েছে!
আধুনিক সার্জারির এত সফলতা মূলত তিন ক্ষেত্রে উন্নতির জন্য-
১) বৈজ্ঞানিক উপায় অবলম্বন
২) এনেস্থেসিয়ার ব্যবহার
৩) স্টেরিলাইজেশন এবং এন্টিসেপটিকের ব্যবহার
পরের পর্বগুলোতে এক এক করে সেই আবিষ্কারের রহস্যগুলো উম্মোচিত হবে, যেগুলোর সাথে সাথেই মানুষের মৃত্যুহার জাদুবলের মত কমে গিয়েছে!
0 Comments: